প্রায় এক যুগ আগে প্রকাশিত ‘মুক্তির মিছিলে’ কাব্যগ্রন্থটি। এ কাব্যগ্রন্থের কবি শামিমা আকতার লিপি। এ কাব্যগ্রন্থের যে বিষয়বস্তু তা যুগ যুগ ধরে আলোচিত বিষয়। ইসলামের আগমনের পরে বাংলা ভাষায় ইসলামি শিল্প সাহিত্যের খুব একটা চর্চা দেখা যায়নি। কারণ বাংলা ভাষাকে হিন্দুয়ানী ভাষা হিসেবে দেখা হতো। এ ভাষায় ইসলাম নিয়ে কোনো গান, কবিতা, গল্প, উপন্যাস হতে পারে তা নিয়ে কারো তেমন আগ্রহ ছিল না। ইসলামের ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি নিয়ে কবি কাজী নজরুল ইসলামের লেখার মধ্য দিয়ে একটা জনপ্রিয়তা ও প্রচারে জায়গা তৈরি হয়েছিল। এক ধরণের উদাসীনতা বা অসচেতনতা লক্ষ্য করা যায় ধর্মীয় বিশ্বাস বা চেতনাকে নিয়ে লেখালেখির ব্যাপারে। শামিমা আকতার লিপি সে ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম বলা যায়। কারণ এ বইয়ের প্রায় প্রতিটি কবিতাই ধর্মীয় বিশ্বাসের জায়গা থেকে লেখা। গজল, হামদ, নাথ নয় তিনি তার নিজের বিশ্বাসের অনুভূতিগুলোকে কবিতা করার প্রচেষ্টা চালিয়েছেন― যদি মুখে গাই গান লা-শরিক আল্লাহ পাবই পাব পুলসিরাতে অপারের মাঝি-মাল্লা। হে দয়াময় রহিম রাহমান। আমারে তুমি নতুন করে করো জীবন দান। পথভ্রষ্ট পথিক আমি― দ্বীন দুনিয়ার মালিক তুমি।’ লা-শরিক আল্লাহ-পৃষ্ঠা-৭ মানুষের জন্ম যেমন সত্য তেমনি মৃত্যুও। প্রত্যেকটি মানুষকেই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে। এই জন্ম মৃত্যুর মাঝামাঝি সময়ে মানুষের কর্মের ওপর তার বিচার হবে। তাই ভালো কর্ম করে যাওয়াই সকলের উদ্দেশ্য হওয়া উচিত। প্রত্যেক যুগে যুগে মানুষকে ভালো কাজের দিকে পরিচালিত করতে নবীগণ এসেছেন। তারা মানুষকে সৎ পথে চলার নির্দেশনা দিয়েছেন। সেইসব নির্দেশনা যারা মেনে চলেছে তাদের জন্য রয়েছে পুরস্কার। কবি তার কাব্যপ্রতিভা দিয়ে সেই সব সুকর্মময় জীবনকে বেছে নিতে চেয়েছেন। নবী এবং তার সাহাবিদের নিয়ে, পবিত্র নগরী মক্কা নিয়ে এবং অসীম দয়ালু আল্লাহ প্রতি তার অগাদ আস্থার নিবেদন এ কবিতাগুলো। পড়া যাক আরও একটি কবিতা― ‘নূরের নবী প্রাণের ছবি নিখিলের রাঙা ফুল, চিনে নিতে তাঁরে করো না ভুল। আঁধার রাতে তিনি আলো, দিনালোকের চেয়েও ভালো। হিরণ্ময় জ্যোতি তাঁহার; শেষ দিবসের পাথেয় আমার।’ নবী মুহাম্মদ-পৃষ্ঠা-২১