ভূমিকা বলা হয়ে থাকে , ইতিহাস কালের সাক্ষী। ইতিহাস আমাদের অতীত এবং পূর্বপুরুষদের সম্পর্কে জানবার সুযোগ করে দেয়। তাই আমাদের কবি লিখেছেন,- ‘ হে অতীত, কথা কও।’ কথা হচ্ছে, অতীতকে কথা বলাবে কে? অবশ্যই সে দায়িত্ব সমকালীন ঐতিহাসিক এবং ইতিহাস-সচেতন সাহিত্যিকদের। আর তাদেরকে হতে হবে সত্যনিষ্ঠ এবং নিরপেক্ষ। তাহলেই আমরা সঠিকভাবে আমাদের অতীতকে জানতে সক্ষম হবো।
আমাদের মাতৃভাষা বাংলার অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য বাঙালি জাতিকে আন্দোলন এবং সংগ্রাম করতে হয়েছে দীর্ঘকাল ধরে।ভ ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারী এ আন্দোলন ও সংগ্রাম ব্যাপকতা পেয়েছে। ফলশ্রুতিতে একুশ আজ বিশ্বমাতৃভাষা হিসেবে জাতিসংঘের স্বীকৃতি লাভ করেছে। তাই বাঙালি গর্বিত, গৌরবান্বিত। আলোচ্য গ্রন্থটি ভাষা আন্দোলনের ধারাবাহিক ইতিহাস নয়। এটি সংকলন গ্রন্থ। এ গ্রন্থটিতে আমি আমার কিছু রচনা থাকলেও, অধিকাংশ রচনা অন্যান্য গ্রন্থ এবং পত্র-পত্রিকা থেকে সংগ্রহ করেছি। সংকলনের বিভিন্ন লেখক বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে ভাষা আন্দোলনকে মূল্যায়ন করেছেন। রচনাগুলি তাৎক্ষণিক রচিত না হলেও লেখকরা অধিকাংশই ভাষা আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। আশা করা যায়, তাদের তথ্যবলী সঠিক হয়েছে।
সংকলিত রচনাগুলির সকল সম্মানিত লেখকদের অনুমতি গ্রহণ করা আবশ্যক ছিল। কিন্তু আমার পক্ষে তা সম্ভব হয়নি। তাই তাদের কাছে আমার অপরাগতার ত্রুটি জন্য ক্ষমা প্রাথনা । আমি তাদের কাছে কৃতজ্ঞতা পাশে আবদ্ধ।
সংকলনটি নিশ্চয় আমাদের ভাষা আন্দোলন সম্পর্কে পাঠক-পাঠিকার কৌতূহল চরিতার্থ করতে সক্ষম হবে। তাদের তৃপ্তি হলে শ্রম সার্থক মনে করবো। মুহাম্মদ হাবীবুর রহমান
সূচিপত্র * অবতরণিকা * স্মৃতির মিনার * ভাষা শহীদের কথা * আমাদের ভাষা আন্দোলনে নারী * রাষ্ট্রভাষা-বিতর্ক : প্রথম পর্যায় * একুশের আকাশ-পাতাল * একুশের চেতনার উৎস এবং চেতনার প্রভাত ফেরি * ভাষা ও ধর্ম * ভাষা আন্দোলনের আবেগ * ভাষা আন্দোলনের প্রেক্ষিত ও অগ্রসর যাত্রা * ভাষা হত্যা আর গণহত্যা একই * বাংলার ভাষার বিস্তৃতি ও ভাষা আন্দোলনের প্রভাব * ভাষা আন্দোলনের প্রস্তুতিপর্বে বুদ্ধিবৃত্তিক প্রতিক্রিয়া * আমাদের চেতনায় একুশ * মাতৃভাষা প্রীতি * নবীন ফাল্গুন-চির নবীণ একুশে * সবার জন্য মাতৃভাষা * নানামুখী আগ্রাসনের কারণে একুশের গৌরব আজ স্লান