"আমারে কবর দিও হাঁটুভাঙ্গার বাঁকে" বইয়ের পিছনের কভারের লেখা: প্রামাণিক তথ্য, সরকারী নথিপত্র, আত্মজীবনীমূলক বইপুস্তক, গােত্রপ্রধান ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গের সাক্ষাৎকার ইত্যাদি হেঁকে তিনি গেঁথে তুলেছেন উত্তর আমেরিকার পশ্চিম ভূ-ভাগ দখলের বহুবিধ ঘটনাকে। ক্রিস্টোফার কলম্বাসের আমেরিকায় পদার্পণের পর থেকে নানা জাতের ইউরােপীয় শ্বেতাঙ্গ দলে দলে পাড়ি জমাতে থাকে নব্য আবিষ্কৃত ওই গােলার্ধে। শুরু হয় কলােনাইজেশন তথা বসতিস্থাপন, জবরদখল, হত্যা ও লুণ্ঠন নির্বিচারে। সেখানকার আদি বাসিন্দা রেড ইন্ডিয়ানদের সবংশে নিধনে রাষ্ট্রীয়ভাবে পরিচালিত হয় সুপরিকল্পিত ধ্বংসযজ্ঞ। মিসিসিপি-মিসৌরি পেরিয়ে, দিগন্ত বিস্তৃত প্রেইরীর বুক চিরে, রকি পর্বতমালা ডিঙ্গিয়ে মহাসমুদ্রের এপার থেকে যেয়ে ইউরােপীয় শ্বেতাঙ্গরা পঙ্গপালের মতাে দখল করে নিচ্ছিল ব্ল্যাক হিলস্ ও ক্যালিফোর্নিয়ার স্বর্ণখনি, বনাঞ্চল, চারণক্ষেত্র, চাষযােগ্য জমি তথা সমগ্র ভূ-ভাগ। ধ্বংস হয়ে যাবার বিষাদময় ওই কালপর্বে ব্যর্থ হয়ে যায় রেড ইন্ডিয়ানদের আত্মরক্ষা ও প্রতিরােধের যাবতীয় প্রচেষ্টা, যার আনুষ্ঠানিক পরিসমাপ্তি ঘটে ঊনডেড় নী নামক এক পার্বত্য খড়ির বাঁকে, খ্রীস্টীয় মহাপ্রভুর পঞ্জিকা মতে দিনটি ছিল ১৮৯০ অব্দের ২৯শে ডিসেম্বর।
১৯৭০-এ প্রকাশনার প্রথম বছরেই এটি খােদ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেই অর্জন করে সর্বাধিক বিক্রীত বইয়ের জাতীয় মর্যাদা যা অক্ষুন্ন ছিল বছরাধিক কালব্যাপী। একই বছরে বিক্রির সংখ্যা ছাপিয়ে যায় ৪০ লক্ষের কোঠা। ইতােমধ্যেই এটি অনূদিত হয়েছে বিশ্বের সেরা ১৭টি ভাষায়। বাংলা সাহিত্যে রেড ইন্ডিয়ানদের ঘিরে এ জাতীয় বই সম্ভবত এটিই প্রথম।