প্রথম পর্যায়ে লিখিত (১৯৭৯-১৯৮১) তিনটি কবিতায় শোনা যাবে সত্তরের দশকের দুঃখ-দারিদ্র, অস্থিরতা, হতাশা ও বেকারত্বের করাল চিৎকার এবং দ্বিতীয় পর্যায়ে লিখিত (১৯৮৯-১৯৯০) একটি কবিতায় আছে আশির দশকের মুক্তিচেতনার আর্তি। প্রত্যেকটি কবিতা নয়টি খন্ডে বিভক্ত। সবগুলো কবিতা একই সময়বলয়ের অন্তর্ভুক্ত-যাকে বলা যায় দ্বিমেরুকেন্দ্রিক রাজনীতির শক্তিক্ষয়ের যুগ। তাদের পরিচিতি: দুঃখ কবিতাগুচ্ছ: প্রতিভাস কবিতাপত্রে প্রথম সংখ্যায় প্রকাশিত হয় পাঁচটি কবিতা (১৯৭৯), দ্বিতীয় সংখ্যায় প্রকাশিত হয় চারটি কবিতা (১৯৮০)। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হোসেন হলে রচিত। হৃদয়ে পাখি একাকী বলয় বকিতাগুচ্ছ: ওয়ার্ডসওয়ার্থের কুকু, শেলীর স্কাইলার্ক, কীটসের নাইটেঙ্গেল, কোলরিজের আলবাট্রস, বায়রন-টেনিসনের ঈগল, ইয়েটসের বুনোহাঁস, রবীন্দ্রনাথের বলাকার সঙ্গে আমরা পরিচিত। বর্তমান গ্রন্থে নদীমাতৃক দেশের উপর পাখি উড়ে আসে অগ্রসর সময়ের দ্যোতক হয়ে। প্রতিভাস কবিতাপত্রের তৃতীয় সংখ্যার জন্য লিখিত (এপ্রিল-মে, ১৯৮১)। সতীর্থ সুনীল সাইফুল্লাহর মৃত্যুর পর (২২ মে ১৯৮১) প্রতিভাসের কাব্য আন্দোলন বন্ধুর হয়ে উঠে। জাবি বার্ষিকীতে এর একটি অংশ প্রকাশিত হয়। মীর মশাররফ হোসেন হলের ৩৫০/এ কক্ষে রচিত।
ডাহুক কবিতাগুচ্ছ: ১৯৮১ সালের, শেষের দিকে লিখিত হয় এই কবিতা, মীর মশাররফ হোসেন হলের ৩০৯/বি কক্ষে। টাঙ্গাইল যাওয়ার পথে শালবনে ডাহুকের ডাক শুনে যে চেতনা জাগে-তাকে কেন্দ্র করে এ কবিতাগুচ্ছ রচিত। চেতনার নাম দেয়া যায় চক্রচেতনা-জগতের মূলীভূত সত্য, দর্শন, বিজ্ঞান এবং সমাজসভ্যতার অগ্রগতি যে চক্রের মধ্যে আবর্তিত।
তুরাগ কবিতাগুচ্ছ: ১৯৮৯-১৯৯০ পর্যায়ে লিখিত কবিতায় শোনা যাবে দুই যুগের স্বর। দ্বিমেরুকেন্দ্রিক রাজনীতির শক্তিক্ষয়ের যুগের শেষ প্রান্তে এসে রচিত হয় এ কবিতা। সামনে নতুন যুগ আভাসিত-যাকে বলা যায় একমেরুকেন্দ্রিক রাজনীতির যুগ। তুরাগ নদী তীরে এ কবিতাগুচ্ছ রচিত। তুরাগ শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে দ্রুতগামী অর্থে।