"নির্বাচিত রম্যরচনা সমগ্র- ৩য়” বইয়ের সম্পাদকের কথা: একটি প্রচলিত প্রথা আছে যে একজন প্রতিষ্ঠিত লেখক কোন নবাগত লেখককে পাঠক সমাজের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন। সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায় এই প্রথায় বিশ্বাসী নন। তিনি পাঠক সমাজে পরিচিত হতে চান তাঁর পাঠকদের মাধ্যমেই। আমি তার অগণিত গুণমুগ্ধ পাঠকদের একজন। তার রম্যরচনা সমগ্র সম্পাদনার ভার আমার মত পাঠকের হাতে দিয়ে তিনি মস্ত বড় ঝুঁকি নিয়েছেন কিন্তু আমাকে পৌঁছে দিয়েছেন এক ঈর্ষাজনক স্থানে। | বাংলা সাহিত্যে রম্যরচনা চিরকালই অবহেলিত। সামান্য যে কয়েকজন এই ধারাটি বজায় রেখেছেন, সঞ্জীববাবু এযুগে তার মধ্যে অন্যতম। সমস্যা জর্জরিত বর্তমান সমাজে জীবন সংগ্রামে শ্রান্ত, ক্লান্ত মানুষের কাছে সঞ্জীবনী মন্ত্র হতে পারে রম্যরচনা। এই সব মুমূর্য মানুষকে হাস্যরসের অক্সিজেন জোগান দিয়ে আসছিলেন সুরসিক সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়। আশংকার কথা কিছু কাল থেকে দেখা যাচ্ছে সঞ্জীববাবু হাস্যরস থেকে অন্তরের আরও গভীর রসের সন্ধান পেয়েছেন। তাঁর আধ্যাত্মিক জীবনের উন্নতি কামনার সঙ্গে সঙ্গে আমার বিনীত অনুরােধ উনি যেন রম্যরচনাকে একেবারে ত্যাগ না করেন। আমাদের মত সাধারণ পাঠকদের জন্য বাংলা সাহিত্যের এই ক্ষীণ ধারণাটি যেন মরুপথে হারিয়ে না যায়।
সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায় বিখ্যাত ভারতীয় বাঙালি লেখক। তিনি ১৯৩৬ সালে কলকাতায় জন্মগ্রহন করেন। মেদিনীপুর জেলা স্কুল থেকে প্রাথমিক শিক্ষা এবং হুগলী কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাগ্রহন করেন । তিনি অনেক উপন্যাস,ছোটগল্প ও প্রবন্ধ রচনা করেছেন । তাঁর সবথেকে বিখ্যাত উপন্যাস লোটাকম্বল যা দেশ পত্রিকায় ধারাবাহিক ভাবে প্রকাশিত হয়েছিল। তাঁর রচনায় হাস্যরসের সাথে তীব্র শ্লেষ ও ব্যঙ্গ মেশানো থাকে ।ছোটদের জন্য তাঁর লেখাগুলিও খুবই জনপ্রিয় । তাঁর সৃষ্ট ছোটদের চরিত্রের মধ্যে বড়মামা ও ছোটমামা প্রধান ।