"আপনি ও আপনার ব্যক্তিত্ব" বইয়ের ফ্ল্যাপের লেখা: বই এর নামকরণ দেখেই পাঠক বুঝতে পারছেন এই বই-এর মুখ্য বিষয় ব্যক্তিত্ব। ব্যত্তিত্ব বলতে কী বুঝি এবং তা অর্জনের জন্য আমাদের কতটা সচেতন চেষ্টা দরকার সে বিষয়ে এ নিয়ে বিশদ আলােচনা করা হয়েছে। ব্যক্তিত্বের দুর্বলতা ও দ্বন্দ্ব কাটিয়ে উঠে এক সতেজ সুস্থ ব্যক্তিত্ব অর্জনের চাবি কাঠি এই বইতে দেওয়া হয়েছে। যেহেতু ব্যক্তিত্ব মনস্তত্বের বিষয় সেকারণে ব্যক্তিত্ব নিয়ে যে নানা তত্ত্ব প্রতিষ্ঠিত আছে তার আলােচনা এই বইতে প্রাসঙ্গিক ভাবেই এসে পড়েছে। ব্যক্তিত্ব নিয়ে ইতিপূর্বে কোন সহজ সুখপাঠ্য বাংলা বই হয়তাে পাঠকের চোখে পড়েনি সেজন্য মনস্তত্বের বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব গুলিকে সাধারণ পাঠকের বােঝার মত করে বিশ্লেষণ ও ব্যাখ্যা করেছেন লেখক। ব্যাখ্যা করতে হয়েছে যথেষ্ট হালকা চালে যাতে পাঠকের কোথাও ক্লান্তি না জাগে। মনস্তত্ব এমন একটি বিষয় যার উপজীব্য মানুষ—শরীরী ও সচেতন মানুষ যে মানুষের একটি মন আছে। পরিবেশ ও মনের পারস্পরিক প্রভাবে মানুষের ব্যক্তিত্বের অনেকটাই তৈরি হয়। এই ব্যক্তিত্বের সঙ্গে সমাজের সম্পর্ক অঙ্গাঙ্গি ভাবে জড়িত। শৈশব থেকে যাতে সন্তানের সুস্থ ব্যক্তিত্ব গড়ে ওঠে তারই নির্দেশনা এই বইতে। তেমনি কর্মজীবনে ও পারিবারিক জীবনে ব্যক্তিত্বের অপরিহার্য প্রয়ােজনীয়তাও উপেক্ষা করেননি লেখক। তৈরি করেছেন তরুণ-তরুণীদের জন্য ব্যক্তিত্বগঠনেরঅবশ্য পালনীয় নিয়মাবলী।
ড. পার্থ চট্রোপাধ্যায়ের জন্ম উত্তর ২৪ পরগনা জেলার গোবরডাঙ্গা গ্রামে। ১৯৫৯ সালে স্থানীয় কলেজ থেকে গ্রাজুয়েট হয়ে তিনি মাত্র ত্রিশ টাকা সম্বল করে কলকাতায় এসে সংবাদপত্র যোগ দেন। সাংবাদিকতার চাকরির সঙ্গে সঙ্গে স্নাতকোত্তর পড়াশোনা চলতে থাকে। তারপর হঠাৎই কমনওয়েলথ সাংবাদিক বৃত্তি পেয়ে ব্রিটেনে চলে যান সংবাদপত্র সম্পর্কে হাতে-কলমে পাঠ নিতে। ১৯৬১ তে দেশে ফিরে এক নাগাড়ে চারটি পত্রিকায় সাংবাদিকতা করেছেন ৩৭ বছর ধরে। বেশির ভাগ সময় ছিলেন আনন্দ বাজারে। চার বছর ‘পরিবর্তন’ পত্রিকার সম্পাদনা করেন। ১৯৯৮ সালে অসম বিশ্ববিদ্যালয়ে গণজ্ঞাপন বিভাগের অধ্যক্ষ ও ডিনের পদে যোগ দেন। ২০০২ সালে অবসর নিয়ে এখন সর্বসময়ের লেখক। সারা প্রথিবী ঘুরেছেন বহুবার। বহু পুরস্কার ও সম্মান পেয়েছেন। ১৯৭৪ সালে পান আন্তর্জাতিক জেফারসন ফেলোশিপ। ইংল্যান্ড ও আমেরিকায় ছিলেন বেশ কিছুকাল। বই এর সংখ্যা ৮৮। গল্প উপন্যাস, ভ্রমণ, প্রবন্ধ। এখন বিশেষ মনোযোগ দিয়েছেন জীবনবাদী বই লেখায় আর যুব ও ছাত্রদের মধ্যে মূল্যবোধ ও ব্যক্তিত্বগঠনের জন্য তৈরি করেছেন সিপডাভে নামে একটি প্রতিষ্ঠান।