৷৷ এক ৷৷ সাফল্যের সোনার হরিণ অধিকাংশ মানুষই বাকি মানুষদের দুভাগে ভাগ করে থাকেন। সফল মানুষ ও ব্যর্থ মানুষ। কিন্তু আমার মতে কোন মানুষই পূর্ণাঙ্গভাবে সফল নন। আবার কোন মানুষই একেবারে ব্যর্থ নন। সুতরাং সাফল্য ও ব্যর্থতার চিরাচরিত সংজ্ঞা ভুল। এর ফলে যিনি আপাত সফল, লোকের চোখে তিনি সফল প্রতিপন্ন হলেও মনে মনে নিজেকে ব্যর্থ মনে করেন। লোকের চোখে ব্যর্থ বলে প্রতিপন্ন হলে কোন লোক দুঃখে ভেঙে পড়েন। তখনই তিনি হতাশায় ভোগেন। বহু মানুষ ব্যর্থতার জ্বালা সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যা করেন। এমন ঘটনা জীবনে অহরহ ঘটে থাকে, কারণ আমরা অধিকাংশ লোকই আমাদের নিজকেই ভাল করে জানি না বলেই এটা জীবনে স্বাভাবিক ঘটনা যে খুব কাছের জিনিসকে মানুষ ভাল করে কাছ থেকে দেখে না। সেই যে কবি বলেছিলেন, দেখা হয় নাই চক্ষু মেলিয়া ঘর হতে শুধু দুই পা ফেলিয়া একটি ধানের শিসের উপরে একটি শিশির বিন্দু। আমি কলকাতার যে অঞ্চলে থাকি সেখানে ছাদে উঠলে প্রতিদিন সন্ধ্যায় পশ্চিমের আকাশ রাঙিয়ে টকটকে লাল সূর্য অস্ত যায়। চারিদিকে তখন নিথর-নিস্তব্ধ হয়ে আসে। সামনের পার্কে অনেক গাছ আছে, ডানা ঝটপাটিয়ে পাখিরা তখন তাদের বাসায় পেরে।
ড. পার্থ চট্রোপাধ্যায়ের জন্ম উত্তর ২৪ পরগনা জেলার গোবরডাঙ্গা গ্রামে। ১৯৫৯ সালে স্থানীয় কলেজ থেকে গ্রাজুয়েট হয়ে তিনি মাত্র ত্রিশ টাকা সম্বল করে কলকাতায় এসে সংবাদপত্র যোগ দেন। সাংবাদিকতার চাকরির সঙ্গে সঙ্গে স্নাতকোত্তর পড়াশোনা চলতে থাকে। তারপর হঠাৎই কমনওয়েলথ সাংবাদিক বৃত্তি পেয়ে ব্রিটেনে চলে যান সংবাদপত্র সম্পর্কে হাতে-কলমে পাঠ নিতে। ১৯৬১ তে দেশে ফিরে এক নাগাড়ে চারটি পত্রিকায় সাংবাদিকতা করেছেন ৩৭ বছর ধরে। বেশির ভাগ সময় ছিলেন আনন্দ বাজারে। চার বছর ‘পরিবর্তন’ পত্রিকার সম্পাদনা করেন। ১৯৯৮ সালে অসম বিশ্ববিদ্যালয়ে গণজ্ঞাপন বিভাগের অধ্যক্ষ ও ডিনের পদে যোগ দেন। ২০০২ সালে অবসর নিয়ে এখন সর্বসময়ের লেখক। সারা প্রথিবী ঘুরেছেন বহুবার। বহু পুরস্কার ও সম্মান পেয়েছেন। ১৯৭৪ সালে পান আন্তর্জাতিক জেফারসন ফেলোশিপ। ইংল্যান্ড ও আমেরিকায় ছিলেন বেশ কিছুকাল। বই এর সংখ্যা ৮৮। গল্প উপন্যাস, ভ্রমণ, প্রবন্ধ। এখন বিশেষ মনোযোগ দিয়েছেন জীবনবাদী বই লেখায় আর যুব ও ছাত্রদের মধ্যে মূল্যবোধ ও ব্যক্তিত্বগঠনের জন্য তৈরি করেছেন সিপডাভে নামে একটি প্রতিষ্ঠান।