আরব-প্রাঙ্গণে মনুষ্য-সভ্যতার অন্যতম আদি বিকাশ। ইতিহাসের গােড়া থেকে এ-প্রাঙ্গণ ঘটনাবাহুল্যে পরিপূর্ণ। বিংশ শতাব্দীর মধ্যভাগে এ-প্রাঙ্গণে এসে ভিড় করেছে পৃথিবীর জটিলতম সমস্যা। শুধু দশ কোটি মানুষের স্বরাজ ব্যাকুল শেষ-সংগ্রাম-সংকল্পই নয়, পৃথিবীর দুটি শ্রেষ্ঠ প্রতিদ্বন্দ্বী এখানে প্রভুত্বের দাবি নিয়ে মল্লভূমিতে মুখােমুখি দাঁড়িয়ে। সাবেকী সাম্রাজ্যবাদের অনিচ্ছুক প্রস্থান ভেঙে দিচ্ছে বহুদিনের সমাজকাঠামাে। আরবভূমি আজ “জটিল-গহন-পথ-সংকট-সংশয়-উদভ্রান্ত। আরব ভারতের পশ্চিম প্রতিবেশী। বহু শতাব্দী পূর্বে,তখনাে ইউরােপীয় সভ্যতার জন্ম হয়নি, আরব ও ভারতবাসীর মধ্যে মিত্রতার সংলাপ শুরু হয়েছিল। ইউরােপকে ভারত ও দূরপ্রাচ্যের সঙ্গে পরিচিত করেছিল আরব। ভারতীয় সংস্কৃতির কয়েকটি শ্রেষ্ঠ অবদান আরবের হাত থেকে পেয়েছিল ইউরােপ। আজও ভারতের সঙ্গে পশ্চিমের সংযােগ-পথ আরবভূমি। একানকার সংকট ও সমস্যার সঙ্গে তথ্যানুগ পরিচয় প্রত্যেক ভারতবাসীর পক্ষে অপরিহার্য। “দেশ” পত্রিকায় প্রকাশিত হবার সময় “ধীরে বহে নীল” পাঠক-সমাজে উৎসাহের সৃষ্টি করেছিল। ভারতবর্ষের নানা শহর থেকে বহু পাঠক পত্রে লেখককে তার কিছুটা পরিচয় দিয়েছিলেন। তাতে বােঝা গিয়েছিল বাঙালি পাঠক বিশ্বপরিচয়ের আগ্রহে অধীর। পরিবর্তনশীল পৃথিবীর প্রামাণিক পরিচয় সে পেতে চায়। অথচ বহু-সম্ভারে পরিপূর্ণ বাংলাসাহিত্যের বিস্তীর্ণ আঙিনায় রাজনীতি-সাহিত্যের অভাব একান্ত। বর্তমান প্রচেষ্টা যদি এ-দারিদ্র্য বিন্দুমাত্রও দূর করতে সক্ষম হয়, তাহলে সে হয়তাে শ্রেয়তর, যােগ্যতর লেখকের উদ্যোগকে সজাগ করবে।
Title
ধীরে বহে নীল (মিশর ও মধ্যপ্রাচ্যে ১৯৫০-৬০ দশকে নাসের বিপ্লবের ইতিহাস)