সমগ্র গ্রন্থটিকে তিনটি পর্যায়ে আললাচনা করেছি। প্রথম পর্যায়ে আলােচিত হয়েছে বাঙলা সাহিত্যের ক্রমবিকাশ প্রসঙ্গ: প্রাচীন বাঙলা, আদি, ও অন্ত্য মধ্যবাঙলা এবং আধুনিক বাঙলা (খ্রষ্টীয় ১৮১৮ সাল পর্যন্ত) রচনার সাহিত্য প্রসঙ্গ এবং সেইসঙ্গে বিভিন্ন স্তরভুক্ত বাঙলাভাষার ভাষাতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্যের সারসংক্ষেপ। দ্বিতীয় পর্যায়ের উপজীব্য হল, ঐতিহাসিক পরিপ্রেক্ষণীতে বাঙলা ভাষার ধ্বনিতত্ত্ব (Phonology) এবং রূপতত্ত্বের (Morphology) সামগ্রিক পর্যালােচনা। এই অংশের আলােচনা মুখ্যত ODBL অনুসৃত আদর্শে পরিকল্পিত হয়েছে। তৃতীয় পর্যায়ের বিষয়বস্তু হল, বাঙলা ভাষার প্রাচীন, আদিমধ্য ও অন্ত্যমধ্য স্তরভুক্ত ভাষাদর্শের বিবরণমূলক ব্যাকরণ লক্ষ্য করা যাবে, দ্বিতীয় পর্যায়ে প্রাধান্য পেয়েছে বাঙলা ভাষার উপাদানের ব্যুৎপত্তিগত সমীক্ষা বা উৎস নির্ণয় এবং সেই সঙ্গে তার ভগিনীস্থানীয় অন্যান্য ভারতীয় ভাষার তুলনামূলক মূল্যায়ন; কিন্তু তৃতীয় পর্যায়ে প্রাধান্য পেয়েছে, বাঙলা ভাষার প্রতিটি স্তরের তথ্যগত বিবরণ এবং ভাষাবিচার, ব্যুৎপত্তিগত সমস্যা বা ঐতিহাসিক মূল্যায়ন সেখানে গৌণ। এখানে সমগ্র আলােচনা বাঙলা ভাষার সামগ্রিক পটভূমিতে উপস্থাপিত, পূর্ববতী স্তরের তুলনায় পরবর্তী স্তরের ভাষাচিত্রে কী জাতীয় গ্রহণ বর্জন ঘটলাে বা পরিবর্তন সাধিত হলাে তারই ধারা-বিবরণী। এই জাতীয় Synchronic বা সমকালীন তথ্যসমাবেশ থেকে শুরু করে দ্বিতীয় পর্যায়ের Diachronic বা ঐতিহাসিক সিদ্ধান্তে পৌছানাে, মনে হয়, সাধারণ পাঠকের পক্ষে সহজ হবে।