লেখকের কথা সার্ক শব্দের অর্থ হলো, সাউথ এশিয়ান এসোসিয়েশন ফর রিজিওনাল কো-অপারেশন। অর্থাৎ “দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থা”। ইংরেজিতে বলা হয়, South Asian Association for Regional Cooperation বা SAARC (সার্ক)। এটা দক্ষিণ এশিয়ার একটি সরকারি সংস্থা। এর সদস্য দেশগুলো বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলংকা, নেপাল, মালদ্বীপ, ভূটান এবং আফগানিস্তান। গণচীন ও জাপানকে সার্কের পর্যবেক্ষক হিসেবে নির্বাচিত করা হয়েছে। ১৯৮৫ সালের ৮ই ডিসেম্বর সার্ক প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। যখন বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলংকা নেতারা দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক উন্নয়ন এবং অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশগসমূহের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ও সহযোগিতা করার লক্ষ্যে এক রাজকীয় সনদপতত্রে আবদ্ধ হন। এটি অর্থনৈতিক, প্রযুক্তিগত, সামাজিক, সাংষ্কৃতিক এবং উন্নয়নের যৌথ আত্মনির্ভরশীলতা জোর নিবেদিত। সার্কের প্রতিষ্ঠাতা সদস্যসমূহ হল বাংলাদেশ ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলংকা, নেপাল, মালদ্বীপ, ভূটান এবং ২০০৭ আফগানিস্তান সার্কের সদস্য পদ লাভ করে। রাষ্ট্রের শীর্ষ মিটিং সাধারণত বাৎসরিক নির্ধারিত এবং পররাষ্ট্র সচিবদের সভা দুই বছর পরপর অনুষ্ঠিত হয়। নেপালের কাঠমান্ডুতে সার্কের সদর দফতর অবস্থিত।
সার্ক দেশগুলোতে বেড়ানোর জন্য একটি সার্বজনীন ভিসার প্রবর্তন করার একটি উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। এই উদ্যোগ সফল হলে, এই ভিসা পদ্ধরি আওতায় সার্কভুক্ত দেশগুলোর বাইরের কোন পর্যটক সার্কের ছয়টি দেশের যে কোন একটির ভিসা সংগ্রহ করলে অন্য দেশর পৃথক ভিসার প্রয়োজন হবে না। সার্ক ট্যুরিজম ভিসার আওতাভূক্ত দেশগুলো হচ্ছে বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল, ভূটান, মালদ্বীপ ও শ্রীলংকা। সার্কের অপর দুটি দেশ পাকিস্তান ও আফগানিস্তানকে সার্ক ট্যুরিজম ভিসা সুবিধার বাইরে রাখা হয়েছে। যতদিন এই ভিসা প্রবর্তিত না হচ্ছে, ততদিন সার্কভূক্ত দেশগুলোতে ভ্রমণ করার জন্য আলাদা ভিসার প্রয়োজন হবে।
সার্কভূক্ত দেশগুলোতে বেড়ানো, চিকিৎসা কিংবা পড়াশোনার জন্য প্রতি বছর অসংখ্য মানুষ আমাদের দেশ থেকে গমনাগমন করেন। এদের জন্য প্রয়োজন হয় পর্যাপ্ত তথ্যের। শুধু প্রয়োজনয়ি তথ্যের অভাবে এসব দেশে যাতাযাতের সময় মানুষ অযথা হয়রানীর শিকার হয়ে থাকেন। এসব হয়রানী যাতে না হতে হয় সেই জন্য এই বইয়ের অবতারণা করা হয়েছে। ইতিপূর্বে আমি “ঘুরে বেড়াই বাংলাদেশের পথে প্রান্তরে” নামক একটি ভ্রমণ বিষয়ক বই লিখেছি। পাঠকদের বিপুল জনপ্রিয়তার কারণে তারই ধারাবাহিকতায় এই বইটির সূত্রপাত। এই বইতে বাংলাদেশের কিছু অঞ্চলের বর্ণনা সহ সার্কভূক্ত সবগুলো দেশের ভ্রমণ সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্যাদি তুলে ধরা হয়েছে। আশা করা যায় পাঠক আগের বইয়ের মতো এই বই থেকে প্রয়োজনীয় তথ্যাবলী পাবেন। যা ভ্রমণের ক্ষেত্রে অতীব প্রয়োজনীয়।