লেখকের কথা বেড়াতে ভালোবাসেন না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। আর তাই, ভ্রমণের নেশায় মানুষ ছুটে যায় পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে। সবুজ নিসর্গ, পাহাড়-পর্বত, ঐতিহাসিক স্থান, ইতিহাসখ্যাত ব্যক্তি ও মনীষীদের সমাধি স্মৃতিস্তম্ভ- এই সবকিছুই ভ্রমণপিয়াসী মানুষকে চিরকাল আকর্ষণ করেছে। এই আকর্ষণের টানে পৃথিবীতে পর্যটকের সংখ্যা বাড়ছে।
আমাদের বাংলাদেশকে বলা হয় প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যের দেশ। কারণ, বাংলাদেশে রয়েছে প্রাকৃতিক নৈসর্গিক দৃশ্য, বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত, বনভূমি, ষড়ঋতুর বৈচিত্র্য, সবুজ বনানী ঘেরা পার্বত্যভূমি, ঐতিহাসিক নিদর্শন। এসব নিদর্শনগুলোর আকর্ষণে যুগে যুগে দেশী-বিদেশী পর্যটকদের মধ্যে এদেশে এসেছিলেন ইতিহাসবিদ ও পর্যটক ইবনে বতুতা, ইবনে খালদুন, হিউয়েন সাং, ভাস্কো দা গামা। তাদের লেখনীতে আরও বিস্তৃত হয়েছে বাংলাদেশের প্রাকৃতিক দৃশ্যের বর্ণনা।
আমরা অনেকেই বেড়ানোর কথা মনে হলে বিদেশের বিভিন্ন বেড়ানোর স্পটগুলোকে বেছে নিই। অথচ আমাদের দেশেই আছে বেড়ানোর এমন অনেক স্পট- যেগুলোকে বিদেশের কোন বিশেস স্পটের চেয়েও অনেক বেশি আকর্ষণীয় মনে হতে পারে। সুতরাং বিশ্বের অন্য দেশ ভ্রমণের আগে বাঙালি জাতি হিসেবে আমাদের উচিত নিজের দেশেল বেড়ানোর স্থানগুলো সম্পর্কে জানা ও দেখা।
পার্বত্য চট্টগ্রামের এমন অনেক গহীন আর দুর্গম পাহাড়ী প্রাকৃতিক দৃশ্য আছে যেগুলোর সাথে বিশ্বের অনেক আধুনিক দেশের অতি আধুনিক পর্যটন কেন্দ্রের তুলনা করা যায় অনায়াসে। এমন অনেক জায়গা আছে যেগুলোর কাছাকাছি কোন দৃশ্যও পৃথিবীর অন্যান্য দেশে দেখতে পাওয়া যাবে না। এই কারণে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে প্রতি বছর বেড়ানোর মৌসুমে ছুটে আসেন হাজারো পর্যটক।
আমাদের দেশেই রয়েছে নিজস্ব দ্বীপ, পাহাড়, সমুদ্রসৈকত, মেরিন ড্রাইভ, অত্যাধুনিক পর্যটন কেন্দ্র, ঝরণা, বন, প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন। এগুলোর কয়টিই বা আমরা দেখেছি। মোটামুটি কম খরচেই এগুলো দেখে নিজের বেড়ানোর তৃপ্তি মেটানো সম্ভব।
এই বইতে বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের প্রাকৃতিক দৃশ্যগুলোর বর্ণনার পাশাপাশি সেগুলোর ছবি প্রদান করা হয়েছে। যাতে পাঠক অনায়াসে সেইসব জায়গা সম্পর্কে জানতে পারেন। এছাড়া রয়েছে সেসব জায়গায় যাতায়াত এবং থাকা সম্পর্কে প্রয়োজনীয় বিবরণ। যা সকলের উপকারে লাগবে।
পরিশেষে বইটি সকলের উপকারে লাগলেই আমার সকল শ্রম সার্থক হবে।