ফ্ল্যাপে লেখা কিছু কথা গদ্যকার্টুন, কথাকার্টুন, গণতান্ত্রিক ফ্যান্টসি, রাজা যায় রাণী আসে, ফাটা ডিম আর আর তা দিয়ে কি ফল পাবে এই এই পাঁচটি বই থাকল এই সংকলনে।গদ্যকার্টুন আনিসুল হকের লেখা বিদ্রুপ রচনার নাম।ক্ষমতা তাঁর বিদ্রুপের প্রধান লক্ষ্য, ভণ্ডামি তাঁর ব্যঙ্গের প্রধান শিকার। আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ লিখেছেন, ‘তিন ধরনের লেখায় এ পর্যন্ত হাত দিয়েছেন আনিসুল হক এবং আমার ধারণা ঐ তিন ধরনের লেখাতেই তিনি শক্তির প্রমাণ রেখেছেন। তাঁর শক্তি সবচেয়ে বেশি ঝলকে উঠেছে তাঁর রম্যরচনাগুলোয়। এখানে তাঁর কল্পনাশক্তি সবেচেয়ে স্বতঃস্ফুর্ত , চঞ্চল ও সপ্রতিভ।হালকা ডানায় উচ্ছল আনন্দে উড়ে বেড়ানোর অবলীলতা রয়েছে তাঁর এখানে।রম্যতা তাঁর রক্তের সবচেয়ে তপ্ত মৌলিক জিনিস।’ (ভোরের কাগজ, ৬ মার্চ ১৯৯৮) গদ্যকার্টুন প্রথম বই হয়ে বেরোয় ১৯৯৩ সালে। সে বইয়ের ভূমিকায় হুমায়ুন আজাদ লিখেছেন, ‘বাঙালায় ব্যঙ্গবিদ্রুপে ভাঁড়ানো একটা ঐতিহাসিক ব্যাপার, কম সংখ্যকের হাতেই তা শিল্পকলা হয়ে উঠেছে; আর আধুনিক চেতনা সম্পন্ন লেখকেরা সাধারণত এড়িয়ে গেছেন ব্যঙ্গবিদ্রুপকে।আনিসু হক আধুনিক চেতনাসম্পন্ন, তার বিদ্রুপও আধুনিক। সে রাজনীতিক কার্টুন শিল্পী, তার আক্রমনের লক্ষ্য বাংলাদেশের প্রতিক্রিয়াশীল শক্তি, যা এখন আমাদের প্রধান সামাজিক বিপদ।বাংলাদেশের প্রতিক্রিয়াশীল রাষ্ট্রতন্ত্র ও তার সহযোগী সব প্রতিক্রিয়াশীল ও প্রতারকই আনিসুল হকের কার্টুনের বিষয়।......... এ সময়ের সবচেয়ে শানিত বিদ্রুপের একটি রূপের পরিচয় পাই তার গদ্যকার্টুনে।এই গ্রন্থ কেবল ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ-রসিকতার যোগান দিয়েই নিঃশেষিত হয়নি, এটা একই সঙ্গে তুলে ধরছে এদেশের একটা কাল পর্বকেও। সূচিপত্র *গদ্যকার্টুন বিষয়ে আমার ভাবনা বা একটি আদর্শ রম্যরচনা *গদ্যকার্টুন *কথাকার্টুন *গণতান্ত্রিক ফ্যান্টসি *রাজা যায় রানী আসে *ফাটা ডিমে আর তা দিয়ে কী ফল পাবে
আনিসুল হক, বাংলাদেশে গত শতাব্দীর আশির দশকে আবির্ভূত হওয়া একজন প্রখ্যাত কবি, কথাসাহিত্যিক, নাট্যকার ও সাংবাদিক। কবিতা, গল্প, উপন্যাস, গদ্যকার্টুন, রম্যরচনা, ভ্রমণকাহিনী, শিশুসাহিত্যসহ সাহিত্যের নানা ক্ষেত্রে রয়েছে তার সাবলীল বিচরণ। বর্তমানে বাংলাদেশের জনপ্রিয় দৈনিক প্রথম আলোর সহযোগী সম্পাদক এবং কিশোর আলোর সম্পাদক হিসেবে কর্মরত আছেন। আনিসুল হকের জন্ম ১৯৬৫ সালের ৪ মার্চ নীলফামারীতে। শিশু মনোবিজ্ঞানের শিক্ষক বাবার অনুপ্রেরণায় ছোটবেলা থেকেই আগ্রহ জন্মেছিলো লেখালেখি আর ছবি আঁকায়। ১৯৮৯ সালে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র থাকাকালীন সাহিত্যজগতে প্রবেশ করেন প্রথম কবিতার বই ‘খোলা চিঠি সুন্দরের কাছে’ প্রকাশের মধ্য দিয়ে। আনিসুল হক এর বই প্রকাশের কালটি ছিলো উত্তাল স্বৈরশাসনবিরোধী আন্দোলনের সময়। আনিসুল হক এর বই সমূহ প্রেমের প্রতি পক্ষপাত করলেও একইসাথে সেসময়ের রাজনৈতিক অস্থিরতার চিত্রও ফুটিয়ে তুলেছে। তাঁর অন্যান্য কাব্যগ্রন্থের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ‘আমি আছি আমার অনলে’, ‘আসলে আয়ুর চেয়ে বড় সাধ তার আকাশ দেখার’, এবং ‘জলরংপদ্য’। মুক্তিযুদ্ধের সত্য ঘটনা নিয়ে লেখা উপন্যাস ‘মা’, আনিসুল হক এর বই সমগ্র এর মধ্যে পাঠকের মনে সবচেয়ে বেশি দাগ কেটেছিল। এছাড়াও ‘বীর প্রতীকের খোঁজে’, ‘নিধুয়া পাথার’, ‘আয়েশামঙ্গল, খেয়া’, ‘ফাঁদ’, ‘বেকারত্বের দিনগুলিতে প্রেম’, ‘ভালোবাসা আমি তোমার জন্য কাঁদছি’, ‘ফাল্গুন রাতের আঁধারে’ তার উল্লেখযোগ্য উপন্যাস। বিভিন্ন স্বনামধন্য পত্রিকার সম্পাদকের ভূমিকা পালন করেছেন দীর্ঘদিন, এখনও লিখে যাচ্ছেন পত্রিকার কলাম। লিখেছেন বেশ কিছু টেলিভিশন নাটক ও সিনেমার চিত্রনাট্যও। কথাসাহিত্যে অবদানের জন্য বাংলা একাডেমি পুরস্কারসহ বেশ কিছু পুরস্কার পেয়েছেন বাংলা সাহিত্যের আধুনিক এই লেখক।