“প্রশিক্ষক প্রশিক্ষণ" বইটির সম্পর্কে কিছু কথা: উন্নতি সাধনের প্রক্রিয়া কোনাে সময় শেষ হয় না। ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে এটা প্রযােজ্য। ব্যবস্থাপনায় নিত্য নতুন ধারণা, কলাকৌশল প্রয়ােগ হচ্ছে। এসব ধারণা, কলাকৌশল প্রয়ােগের জন্য প্রয়ােজন প্রশিক্ষক প্রশিক্ষণ। প্রশিক্ষক প্রশিক্ষণ ব্যবস্থাপনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। প্রশিক্ষণ ছাড়া সংস্থার লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয় না। কর্মীর, কর্মকর্তার কাজ মানসম্মত হয় না। এদিকে খেয়াল রেখার জন্য গ্রন্থটি (নির্দেশিকা) লেখার প্রয়ােজন বােধ করেছি। প্রশিক্ষক কেন, কীভাবে, কখন, কোথায় প্রশিক্ষণ দেবেন তার নির্দেশিকা এই গ্রন্থে লেখা হয়েছে। আজকাল আমাদের দেশে প্রায় সব সংস্থাই প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন করেছে। কিন্তু প্রশিক্ষণের উপর তেমন একটা গুরুত্ব যতটা দেওয়া প্রয়ােজন ততটা দেওয়া হচ্ছে না বলে মনে করি। ফলে প্রশিক্ষক হতে অনেকেই অনীহা প্রকাশ করেন। সাথে সাথে প্রশিক্ষণ নিতেও অনেকে আগ্রহী হন না। এই অনীহা ও আগ্রহ দূর করতে হলে তত্ত্বাবধায়ক ও কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষক হওয়ার জন্য আগ্রহী হতে হবে। এবং সেই আগ্রহ সৃষ্টি করা যাবে যখন ব্যবস্থাপনা এ বিষয়ে আগ্রহ ও উৎসাহ প্রদান করবে। চাকুরি জীবনে প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের দ্বায়িত্বে অনেক দিন কাজ করেছি। এ দ্বায়িত্ব পালন করতে গিয়ে দেখেছি যে তত্ত্বাবধায়কগণ ভালােভাবে তাদের তদানিন্তনদের প্রশিক্ষণ দিতে সক্ষম। এমনকি অভিজ্ঞতাসম্পন্ন কর্মচারীও ভালােভাবে প্রশিক্ষণ দিতে পারেন। তাই এ গ্রন্থে তত্ত্বাবধায়ক ও অভিজ্ঞ কর্মীদের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ পরিচালিত করার জন্য গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। বাস্তব অভিজ্ঞতার আলােকে এই গ্রন্থ একটা নির্দেশক হিসাবে লেখা হয়েছে। প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে এই গ্রন্থটি সমাদৃত হলে নিজেকে সার্থক মনে করব।
মিসবাহউদ্দিন খানের জন্ম ১৯২৯ সালে চাঁদপুরে। ১৯৪৯ সালে ইতিহাসে স্নাতক সম্মান এবং ১৯৫০ সালে মাস্টার্স ডিগ্রি প্রাপ্ত হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। ১৯৫৬ সালে তিনি চট্টগ্রাম বন্দরে যােগদান করেন এবং ১৯৮৬ সালে ডক শ্রমিক ব্যবস্থাপনা বাের্ডের ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে অবসর গ্রহণ করেন। উল্লেখ্য এই বাের্ড স্থাপনে তিনিই উদ্যোগ গ্রহণ করেছিলেন। কর্মরত অবস্থায়। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের কানেকটিকাট ইউনিভার্সিটিতে ব্যবস্থাপনা অধ্যয়ন করেন এবং কর্মসূত্রে বহু দেশ। ভ্রমণ করেন। ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে তাঁর গ্রন্থ। তত্ত্বাবধায়ন ও তত্ত্বাবধায়ক, প্রত্যভিযােজন, ব্যবস্থাপনায় পত্রালাপ ও ডাক চালনা সংশ্লিষ্ট মহল কর্তৃক উচ্চ প্রশংসিত। মিসবাহউদ্দিন খান ১২ খণ্ডে চট্টগ্রাম বন্দরের দলিলপত্র গ্রন্থনা ও সম্পাদনা করেছেন যা বন্দর কর্তৃপক্ষ প্রকাশ করেছে। এর আগে প্রকাশিত হয়েছে তাঁর বৃহদায়তন গ্রন্থ হিষ্ট্রি অব দি পাের্ট অব চিটাগং। ১৯৯১ সালে তিনি পঞ্চম জাতীয় সংসদের সদস্য হিসেবে চাঁদপুরের কচুয়া থেকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত হন এবং ১৯৯৪ সালে দলীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পদত্যাগ করেন। সংসদে থাকাকালীন বিভিন্ন সংসদীয় কমিটিতে তিনি একজন দক্ষ প্রশাসক ও আদশ্যের প্রতি নিবেদিত সমাজ সচেতন সাংসদ হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। আমরা দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি যে এই বইটি। প্রকাশিত হওয়ার কয়েক দিন আগে তিনি ইন্তেকাল করেন।