বই সংক্ষেপ মহাবিশ্বের একেবারে শুরুর দিকের কথা। পুরো মহাবিশ্ব জুড়ে শুধু ভরহীন কণাদের আনাগোনা। সবাই ছুটছে আলোর গতিতে। এদিকে যতই সময় গড়াতে থাকলো ততই ফুলে ফেঁপে উঠছে মহাবিশ্ব। মুহুর্তেই আকৃতি বেড়ে যাচ্ছে কোটিগুণ। আর সেই সাথে পাল্লা দিয়ে কমছে তাপমাত্রা। এভাবে তাপমাত্রা কমতে কমতে যখন মিলিয়ন বিলিয়ন ডিগ্রিতে এসে পৌছালো, তখনই এক ধরনের কণারা হঠাৎ করেই বদলে ফেললো তাদের চেহারা। নিজেরা ঠাণ্ডা হয়ে জমে এমন এক অদ্ভুত অবস্থার সৃষ্টি করলো যাতে অন্য কণারা ভর লাভ করা শুরু করে। এই ঘটনার গালভরা নাম কসমোলজিক্যাল ফেজ ট্রানজিশন। আর ঠাণ্ডা হয়ে জমে যাওয়া কণার নাম হিগস বোসন। এই ঘটনার ফলে কিছু কণা হয়ে পড়লো অতিরিক্ত ভারি, কেউ মোটামুটি ভারী, আবার কেউ ভর বাড়ার ধারে কাছে না ঘেঁষে আগের মত দিব্যি চলতে থাকলো। হিগস কণাদের ফেজ ট্রানজিশানের পর অন্য কণাদের এমন অবস্থা লাভের কেতাবি নাম সিমেট্রি ব্রেকিং বা প্রতিসাম্যের ভাঙন। আর এই প্রতিসাম্যের ভাঙনের ফলে সৃষ্ট ভারী কণারা ধীরে ধীরে গঠন করে অণু, পদার্থ, গ্রহ, নক্ষত্র এবং গ্যালাক্সির জগৎ। আর এমনি এক নক্ষত্র জগতের একটি গ্রহে বিলিয়ন বিলিয়ন বছরের প্রকৃতির সাধনার ফসল আমরা মানুষ। তার মানে আদি মহাবিশ্বে যদি কোনো কারণে হিগসের মাধ্যমে প্রতিসাম্য না ভাঙতো তবে আজ আপনাকে বসে বসে এই ম্যাগাজিন পড়তে হতো না! গত বছরের এপ্রিল মাসে সার্নের গবেষণাগারে ভর সৃষ্টির জন্য দায়ী এই হিগস – বোসনের সন্ধান মেলে। তাই এ বছর পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরষ্কার দেয়া হয় এমন দু’জনকে, হিগস বোসনের তাত্ত্বিক ভবিষ্যৎবাণী করার ক্ষেত্রে যাদের ভূমিকা ছিল সর্বাগ্রে। কণাদের ভরলাভ এবং হিগসের পেছনে কাজ করা অন্য বিজ্ঞানীদের কথা নিয়ে সাজানো হয়েছে এবারের ‘জিরো টু ইনফিনিটি’র প্রচ্ছদ ‘হিগস – বোসন কণার নোবেল জয়’।