দেবদেবীরা অলৌকিক জগতের অধিবাসী বলেই ধারণা। যাঁরা মরমিয়া, তাঁরা সূক্ষ্ম দৃষ্টিতে তাঁদের নাকি দেখেও থাকেন। আমরা যাকে সূক্ষ্মদৃষ্টি বলি বিজ্ঞানের ভাষায় তা মাল্টিডাইমেনশনাল ভিসন' বা বহুমাত্রিক অবস্থা থেকে দেখা দৃশ্য। বহুমাত্রিক অবস্থা থেকে দেখা দৃশ্য আমাদের ত্রিমাত্রিক অবস্থা থেকে দেখা দৃশ্য থেকে নিশ্চয়ই পৃথক। আমাদের ত্রিমাত্রিক জগতের অভিজ্ঞতায় সবচেয়ে গতিশীল হল আলো। কিন্তু পদার্থ- বিজ্ঞানীরা মনে করেন, এমন এক বহুমাত্রিক অবস্থানও থাকতে পারে যেখানে আলোকে মনে হবে স্থির। সুতরাং আমরা যে-ভাবে দেখি সবাই সেভাবে নাও দেখতে পারে। আবার সবাই যেভাবে দেখে আমরা সেভাবে নাও দেখতে পারি। সাধনার দ্বারা মরমিয়া ঋষিরা তাঁদের দৃষ্টিকে এমন এক পর্যায়ে নিয়ে যেতে পারেন— যে দৃষ্টিকে বহুমাত্রিক দৃষ্টি বলা যেতে পারে। সেই বহুমাত্রিক দৃষ্টিতে যে-সব জিনিস নজরে পড়ে সাধারণ দৃষ্টিতে তা পড়ে না। দেবতাদের কার্যকলাপ দেখলে স্পষ্টই বোঝা যায় যে, তাঁরা বহুমাত্রিক জীব। কারণ, পদার্থ বিজ্ঞানের সূক্ষ্মতম অণু- পরমাণুর মতই তাঁদের ব্যবহার। অণু-পরমাণু যে-তত্ত্ব প্রকাশ করে দেবদেবীদের ব্যবহারে সেই ধরনের তত্ত্বই প্রকাশিত হয়েছে। সেই জন্য আধুনিক কোয়ান্টাম পদার্থ বিজ্ঞানীরা মনে করেন যে, দেবতারা ‘অব-আণবিক’ বিশ্বের বা বহুমাত্রিক জগতের অদ্ভুত ব্যবহারকারী অণু-পরমাণু মাত্র। অণু-পরমাণুর ব্যবহারকেই দেবদেবীর রূপকের মধ্য দিয়ে বর্ণনা করা হয়েছে। প্রাচীন ঋষিদের সেই দেবদেবী কল্পনা ও আধুনিক কোয়ান্টাম পদার্থ বিজ্ঞানের চিন্তার সঙ্গে তার অদ্ভুত মিল নিয়েই বর্তমান গ্রন্থ। বিজ্ঞান পাঠ করলে এ-কথাই মনে হবে, ‘দেবতারা কি কোয়ান্টাম পদার্থ বিজ্ঞানের' তত্ত্ব মাত্ৰ ?