ফ্ল্যাপে লিখা কথা প্রাচীন বাংলার ইতিহাস ও সংস্কৃতি গ্রন্থটি প্রবন্ধ-সংকলন। সংকলিত প্রবন্ধগুলি প্রাচীন বাংলার ইতিহাস সংস্কৃতিবিষয়ক। সমাজ ও সংস্কৃতির বিভিন্ন দিক প্রকাশ পেয়েছে বেশ কয়েকটি প্রবন্ধে। ইসলাম-বিস্তারের পটভূমি -সম্পর্কিত প্রবন্ধটিতে লেখক মৌলিক চিন্তা-ভাবনার বিকাশ ঘটেছে। প্রাচীন বাংলার ধর্ম, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক জীবনের শ্বাশ্বত রূপের পরিচয় উদ্ঘাটনের সযন্ত প্রয়াস লক্ষ করা যায় একাধিক প্রবন্ধে। একটি প্রবন্ধে লেখক বাংলার আঞ্চলিক ব্যক্তিত্ব বা Bengals Regional Personality সম্পর্কে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য পেশ করেছেন। প্রাচীন যুগে বাংলার সঙ্গে দক্ষিণ পূর্ব-এশিয়ার বাণিজ্যিক ও সেইসূত্রে সাংষ্কৃতিক সম্পর্ক নির্ধারণের প্রচেষ্টা রয়েছে অন্য একটি প্রবন্ধে। দু’তিনটি প্রবন্ধের আলোচনায় প্রাচীন বাংলার ভৌগলিক পরিচয়-সম্পর্কিত সমস্যা স্থান পেয়েছে। এ সংকলনে প্রাচীন বাংলার সমাজ সংস্কৃতি সম্পর্কে স্বচ্ছ দৃষ্টিভঙ্গির প্রকাশ ঘটেছে।
সূচিপত্র * বাংলা ভৌগলিক পরিচয় * প্রাচীন যুগে উত্তর বাংলা * বাংলার প্রাথমিক লিপিমালায় পুণ্ড্র, পুণ্ড্রবর্ধন-ভুক্তি * প্রাচীন বাংলার সামাজিক ও ধর্মীয় মনোভাব : ঐতিহ্য ও শাশ্বত রূপ * প্রাচীন বাংলার ‘ব্যক্তিত্ব’ * বাংলা ও দক্ষিণ পূর্ব-এশিয়া : বাণিজ্যিক ও সাংস্কৃতিক সম্পর্কের আদিপর্ব * ইতিহাসের প্রেক্ষাপটে বাংলার সংষ্কৃতি * বাংলায় ইসলাম-বিস্তারের পটভূমি
খ্যাতনামা ইতিহাসবিদ অধ্যাপক আবদুল মমিন চৌধুরী। ১৯৪০ সালের ২২ জানুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষক, প্রাচীন ও মধ্যযুগের বাংলার ইতিহাসের একজন পূরােধা ঐতিহাসিক অধ্যাপক চৌধুরী জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য। তিনি ২০০০ সাল থেকে এশিয়াটিক সােসাইটি অব বাংলাদেশ-এর সভাপতি পদে অধিষ্ঠিত রয়েছেন। অধ্যাপক চৌধুরী ১৯৬০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগ থেকে প্রথম শ্রেণীতে প্রথম স্থান অধিকার করে এম. এ. ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৬১ সালে তিনি একই বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগে লেকচারার হিসেবে যােগ দেন। লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৬৫ সালে তিনি পিএইচ. ডি. ডিগ্রি অর্জন করেন বিভাগীয় চেয়ারম্যান, কলা অনুষদের ডিন, সিনেট ও সিন্ডিকেটের সম্মানিত সদস্যসহ বিভিন্ন সময়ে। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে নিয়ােজিত ছিলেন। ( Dynastic History of Bengal অধ্যাপক চৌধুরী রচিত একটি প্রমাণিক ইতিহাসগ্রন্থ। বাংলাদেশ এশিয়াটিক সােসাইটি থেকে তিন খণ্ডে প্রকাশিত Devaparvata, Gawr-lakhnauti এবং Sonargaon-Panam গ্রন্থের তিনি যুগ্ম-সম্পাদক সােসাইটির প্রকাশিতব্য বাংলাপিডিয়া প্রকল্পে ইতিহাস ও ঐতিহ্য শাখায় কনসাল্টিং এডিটর হিসেবে তিনি দায়িত্ব পালন করছেন। দেশী ও বিদেশী গবেষণামুলক পত্রিকায় তাঁর পঞ্চাশটিরও বেশি প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। fora Journal of the Asiatic Society of Bangladesh, Dhaka University Studies, Bangladesh Historical Studies এবং বাংলাদেশ ইতিহাস সমিতি পত্রিকার সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। শিক্ষা ও গবেষণামূলক কর্মকাণ্ডে একান্তভাবে নিবেদিত অধ্যাপক চৌধুরী পৃথিবীর প্রায় সকল প্রান্তেই ভ্রমণ করেছেন। লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের School of Oriental and African Studies-এ তিনি ১৯৭৫-৭৬-এ এক বৎসর কমনওয়েলথ ফেলাে হিসেবে অতিবাহিত করেন। এ ছাড়া তিনি ভারত, শ্রীলংকা, সিংগাপুর, মালয়েশিয়া, অস্ট্রেলিয়া ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় পরিদর্শন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামাে ও প্রশাসনিক অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন।