সূর্য ডুবে গেছে অনেকক্ষণ। সামনের সমুদ্রে রঙের খেলাটুকু তন্ময় হয়ে দেখছিলেন ভারত-বিখ্যাত শিল্পী অনির্বাণ চৌধুরী। এই নিরালা নিবাসের সামনের বারান্দায় বসে দীর্ঘ পাঁচিশটি বছরের কত দিন যে তিনি সমুদ্রকে কতভাবে দেখেছেন তার কি আর লেখাজোখা আছে। পাশে ধু ধু সোনালি বালির প্রান্তরে ছোট ছোট ঝাউয়ের যে গাছ- গুলিকে তিনি প্রথমে এখানে এসে দেখেছিলেন, তারা এখন বৃহৎ বৃক্ষসংসারে পরিণত হয়েছে। মাঝরাতে কখনো ঘুম ভেঙে গেলে শিয়রের জানালা দিয়ে তিনি তাকিয়ে থাকেন। মরা জ্যোৎস্নায় ঝাউয়ের পাতাগুলোকে ঠিক যেন বেহালার একগোছা তার বলে মনে হয়। তিনি কান পেতে শোনেন, বেহালা বাজছে। অনেক দূরের অস্পষ্ট জগতের একটা সঙ্গীতের সুর কে যেন ছড়ের টানে টানে সেধে চলেছে। এই সমুদ্রতীরের বারান্দায় বসে কত কথাই না মনে পড়ে তাঁর। পেছনে ফিরে তাকালে তিনি স্পষ্ট দেখতে পান একটা প্রসারিত পথ। সে পথে হেটে চলেছে একটি কিশোর। দেহে দারিদ্র্যের মলিন চিহ্ন। শুধু দুটি চোখ তার ব্যতিক্রম। উজ্জল স্বপ্নের ছবি আঁকা হয়ে আছে সে চোখের চাহনিতে। একটা পথের এক পাশে একটি বিরাট সৌধ। কি বিস্ময় নিয়ে কিশোরটি তাকিয়ে রইল সেদিকে। ভাগ্য কি দেবে তাকে সেখানে প্রবেশের সামান্যতম সুযোগ?