ভগবান যদি ভূত হতে পারেন, তাহলে দশচক্রে নিরপরাধই বা কেন ফাঁসির আসামী হতে পারবে না? পারবে। তাই অধিকাংশ বুদ্ধিমান পাঠক এবং অব্যতিক্রম পাঠিকা — ওই যাঁরা গোয়েন্দা গল্পের পোকা তাঁরা তাঁদের টেলিফোন ডাইরেক্টারির প্রথম পাতায় অ্যাম্বুলেন্স, ডাক্তার, ফায়ার ব্রিগেড প্রভৃতির সঙ্গে ওঁর নিউ-আলিপুর ডেরার নম্বরটাও টুকে রাখেন : বাসু, পি. কে., বার-অ্যাট ল । আপনি লিখে রাখেননি? সে দায়িত্ব আপনার। ভগবান, ওই যিনি মাঝে মাঝে দশচক্রে ভূতায়িত হন, তিনি আপনাকে রক্ষা করুন ! মোটকথা বহুবার বহু আসামীকে উনি শেষ মুহূর্তে বাঁচিয়ে এনেছেন। তার পাঁচটি সংকলিত হয়েছে কাঁটায় কাঁটায়-এক-এ : সোনার কাঁটা / মাছের কাঁটা / পথের কাঁটা ঘড়ির কাঁটা / কুলের কাঁটা তিনটি গ্রথিত হয়েছে কাঁটায়-কাঁটায়-দুই-এ উলের কাঁটা / সারমেয় গেণ্ডুকের কাঁটা/ অ-আ-ক-খুনের কাঁটা পুনরায় তিনটি কাঁটার তোড়া বাঁধা হয়েছে কাঁটায় কাঁটায় তিন-এ কৌতূহলী কনের কাঁটা / যাদু এ তো বড় রঙ্গের কাঁটা / রিস্তেদারের কাঁটা কাঁটায় কাঁটায়-চার-এ সংকলিত হয়েছে : 'অভি-নী-অ'-এর কাঁটা / ন্যায়নিষ্ঠ ন্যাসনাশীর কাঁটা / দ্বিবৈবাহিক কাঁটা / যমদুয়ারে পড়ল কাঁটা এখনও অনিকেত হয়ে পড়ে আছে : বিশের কাঁটা/ ড্রেসরিহার্সালের কাঁটা / দর্পণে প্রতিবিম্বিক কাঁটা এবং সকল কাঁটা ধন্য করে একুনে কাঁটার সংখ্যা 1998-তক উনিশ
Narayon Sanyal ( ২৬শে এপ্রিল, ১৯২৪ - ৭ই ফেব্রুয়ারি, ২০০৫) আধুনিক বাংলা সাহিত্যের প্রখ্যাত লেখক। এছাড়াও তিনি একজন পুর প্রকৌশলী । নিত্য নতুন বিষয়বস্তু নির্বাচন ছিল তাঁর রচনাশৈলীর এক বৈশিষ্ট্য। লেখকের আদি নিবাস নদীয়া জেলার কৃষ্ণনগর। তিনি কৃষ্ণনগর কলেজিয়েট স্কুলের ছাত্র ছিলেন। স্কুলের খাতায় নাম ছিল নারায়নদাস সান্যাল। ১৯৪৮ সালে শিবপুর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ থেকে বি.ই. সম্পন্ন করেন। তিনি ইন্সটিট্যুট অব ইঞ্জিনিয়ার্স (ইন্ডিয়া)-এর ফেলো ছিলেন। ১৯৮২ সালে সরকারী চাকুরী থেকে অবসর নিয়েছিলেন। সাহিত্যজগতে নারায়ন সান্যাল তাঁর বকুলতলা পি এল ক্যাম্প ও দন্ডক শবরি গ্রন্থের জন্য বিশেষভাবে পরিচত। পি.ডব্লু.ডি তে চাকরি করাকালীন দণ্ডকারণ্য অঞ্চলে তাঁর পোস্টিং হয়, জীবনের অভিজ্ঞতায় এই দুটি উপন্যাস লেখেন যা বিদগ্ধ পাঠক মহলে সমাদৃত হয়। এছাড়া বিজ্ঞান, শিল্প স্থাপত্য ভাস্কর্য ও সামাজিক, ঐতিহাসিক উপন্যাস প্রচুর লিখেছেন। শিশু কিশোরদের জন্যেও তাঁর রচনা সুখপাঠ্য। তাঁর অন্যান্য রচনাগুলির মধ্যে বিশ্বাসঘাতক, ষাট একষট্টি, হে হংসবলাকা, নক্ষত্রলোকের দেবতাত্মা, আবার যদি ইচ্ছা করো, অরণ্য দন্ডক, অশ্লীলতার দায়ে, না মানুষের পাঁচালী উল্লেখযোগ্য। রহস্য গোয়েন্দা কাহিনীও লিখেছেন, তাঁর কাঁটা সিরিজ নামে খ্যাত বইগুলির মূল চরিত্র ব্যারিস্টার পি কে বাসু স্ট্যানলি গার্ডেনারের প্যারি ম্যাসন এর আদলে তৈরি। তার রচিত কাহিনী নাগচম্পা (যদি জানতেম), সত্যকাম, পাষণ্ড পন্ডিত চলচ্চিত্রায়িত হয়েছে। রবীন্দ্র পুরস্কার - অজন্তা অপরূপা-১৯৬৯, বঙ্কিম পুরস্কার - রূপমঞ্জরী-২০০০, পুরস্কারে ভূষিত হন।