‘কোথাও নয়’ বই এর ফ্ল্যাপের লেখা একেক জায়গার জন্য একেক রঙের পোশাক নিতে হয়। এটাই নিয়ম। পাহাড়ে যে রঙ চলে, জঙ্গলে সেটা চলবে না। আবার সি-বিচের জন্য আলাদা রঙ । নদী হলে সেটা বদলে যাবে। কোথায় যাওয়া হচ্ছে, না জেনেই এবার জামাকাপড় নিতে হয়েছে। মনটা খুঁত খুঁত করছে । মাকে সকালে জিগ্যেস করেছিল রূপসা। মাধবী তখন অফিসে মিটিং-এ ব্যস্ত। ‘মা, একটা জরুরি কথা ছিল।' ‘আবার তোমার জরুরি কথা ! চট করে বলে দাও, আমি ব্যস্ত আছি।' ‘তুমি কি আমাদের ডেসটিনেশনের ব্যাপারে কিছু খবর পেয়েছ ? ‘তোমাকে তো আগেই বলেছি, আমি কিছু জানি না । আসলে সে রূপসা বলল, ‘আসলে সেটা বুঝে ড্রেসের কালার ঠিক করতাম।' ‘উফ রূপসা, বলছি না, আমি কাজের মধ্যে আছি ? এই প্রশ্নটা তুমি বরং তোমার রোহন আঙ্কেলকে ফোন করে জিগ্যেস কর।' ফোন ধরে রোহন হই হই করে উঠল, ‘রূপসা তুমি রেডি ? ব্যাগ গোছানো শেষ ? ক্যামেরা কি নিচ্ছ ? আমি নিচ্ছি না। হাতে কিন্তু মাত্র কটা ঘণ্টা ৷' রূপসা গম্ভীর গলায় বলল, ‘না, রেডি নয়। আপনি স্পট সম্পর্কে একটু কিছু না বললে ড্রেসের কালার ঠিক করতে পারছি না। জল না ড্রাই এটুকু তো বলবেন ?’ রোহন আওয়াজ করে হেসে উঠল। ‘বাপরে! এত ঝামেলা ? আচ্ছা, একটা কাজ করলে কেমন হয় রূপসা, তুমি নিজের মতো একটা ভেবে রঙ বেছে নাও, তারপর ওখানে গিয়ে দেখা যাবে তোমার ভাবনাটা মিলল কি না। এটাও একটা খেলার মতো হবে। রঙের খেলা।
প্রচেত গুপ্ত (১৪ অক্টোবর ১৯৬২) একজন বাঙালি সাহিত্যিক এবং সাংবাদিক। তাঁর জন্ম কোলকাতার বাঙ্গুর অ্যাভিনিউতে একটি বৈদ্য পরিবারে। তিনি বাঙ্গুর বয়েজ স্কুলে পড়াশোনা করেছিলেন। তিনি ছোটবেলা থেকেই লেখালেখি আরম্ভ করেন। মাত্র বারো বছর বয়েসে তাঁর প্রথম গল্প আনন্দমেলা পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে স্কটিশ চার্চ কলেজ থেকে অর্থনীতিতে স্নাতক হন। ২০০৭ খ্রিষ্টাব্দে পরিচালক তরুণ মজুমদার তাঁর 'চাঁদের বাড়ি' উপন্যাসটি অবলম্বনে একটি বাঙলা চলচ্চিত্র তৈরি করেন। ২০১১ খ্রিষ্টাব্দে তাঁর 'চোরের বউ' গল্পটি অবলম্বনে পরিচালক শেখর দাস 'নেকলেস' নামের একটি চলচ্চিত্র তৈরি করেন। তিনি সমকালীন বাংলা সাহিত্যের একটি পরিচিত নাম। তাঁর কিছু গল্প হিন্দি, ওড়িয়া এবং মারাঠি ভাষাতে অনূদিত হয়েছে। তিনি বাংলা পত্রিকা যেমন 'উনিশ কুড়ি', 'সানন্দা' এবং 'দেশ'-এর নিয়মিত লেখক।