ভূমিকা ‘বাংলা বাক্যের পদগুচ্ছের সংগঠন' বইটির নামের ক্ষেত্রে একটি পরিবর্তন করা হয়েছে। ‘বাক্যের’ শব্দটি অতিলক্ষণ বলে মনে হতে পারে। নামটি সহজ করার প্রয়োজনে এই সংস্করণ থেকে এই গ্রন্থটির নাম দেওয়া হলো ‘বাংলা পদগুচ্ছের সংগঠন’। ‘বাংলা বাক্যের পদগুচ্ছের সংগঠন' বলে আর কোনও বই তাহলে থাকছে না। এবং 'বাংলা পদগুচ্ছের সংগঠন’-ই পূর্ববর্তী ‘বাংলা বাক্যের পদগুচ্ছের সংগঠন' [১৯৯২]। এই সংস্করণে নানা ধরনের পরিবর্তন করা হয়েছে। যেমন, সমস্ত উদাহরণ স্বনিমলিপিতে ছিল। ছাত্রছাত্রী এবং সাধারণ পাঠকের কথা মনে রেখে সেগুলি বঙ্গাক্ষরে দেওয়া হলো। স্বনিমলিপির প্রধান ভূমিকা উচ্চারণের ক্ষেত্রে। বাক্যের আন্বয়িক গঠনের ক্ষেত্রে নয়। তাই আন্বয়িক গঠন নিয়ে আলোচনার ক্ষেত্রে স্বনিমলিপিকে বাদ দেওয়া হলো । যে সব জায়গায় উচ্চারণগত দিকটি এসে পড়েছে কেবল সেখানে স্বনিমলিপি ব্যবহৃত হয়েছে। দ্বিতীয়ত, উদাহরণ বাক্যের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। আর, উদাহরণগুলি যথাসম্ভব বৃক্ষরেখাচিত্রে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। পূর্ববর্তী সংস্করণে যে ধরনের বৃক্ষরেখাচিত্র দেওয়া হয়েছিলো তা লেটার প্রেসের ছাপানোর সুবিধের জন্য। বর্তমানে ছাপার অনেক উন্নতি হয়েছে। তাই বৃক্ষরেখাচিত্রগুলিতে যথাযথভাবে কৌণিক রেখা দেওয়া সম্ভব হয়েছে। দ্বিতীয়ত, ‘অন্বয়তত্ত্ব’ নামক একটি অধ্যায় প্রথমে দেওয়া হয়েছে। এটি আগে ছিল না। পূর্ববর্তী সংস্করণের প্রথম অধ্যায় ‘স্থাপনা' এই গ্রন্থে দ্বিতীয় অধ্যায় ‘বাক্য বিশ্লেষণঃ সঞ্জননী ব্যাকরণ' হিসেবে দেওয়া হয়েছে। সবশেষে, 'নানাবিধ সঞ্জননী তত্ত্ব ও নতুন প্রস্তাব' নামক একটি নতুন অধ্যায় যুক্ত করা হলো। সঞ্জননী তত্ত্বের নানা রূপ ও বিবর্তন নিয়ে আলোচনা জরুরি ছিলো। এছাড়াও বর্তমান গ্রন্থকারের নিজস্ব একটি তত্ত্ব ‘সাযুজ্যসূত্র নির্ভর সঞ্জননী তত্ত্ব' এই গ্রন্থে দেওয়া হলো। তৃতীয়ত, প্রতি অধ্যায়ে প্রয়োজনমতো নানা বিষয় যুক্ত করা হয়েছে। পাদটীকায় উল্লেখ করা হয়েছিল এমন বিষয় কিম্বা তেমন বিস্তৃতভাবে বলা হয়নি সে সব বিষয় এই সংস্করণে বিস্তৃতভাবে বলা হয়েছে। তৃতীয় অধ্যায়ে যেমন বাংলা কারক নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। সেখানে কারকতত্ত্ব ও কারক ব্যাকরণ সম্পর্কে একটি প্রাথমিক ধারণা দেওয়া হয়েছে। ষষ্ঠ অধ্যায়ে যেমন প্রশ্নবাক্য বিষয়ে আলোচনার ক্ষেত্রে মনোভাষাবিজ্ঞানে তার ভূমিকা বা I-movement প্রভৃতি বিষয় বিস্তৃতভাবে এসেছে। মনোভাষাবিজ্ঞান ও নেতিবাচক বাক্য নিয়েও দীর্ঘ আলোচনা যুক্ত হয়েছে। পাদটীকা ব্যবহারের ক্ষেত্রে আধুনিক পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়েছে। ফলে, যেখানে উদ্ধৃতি দেওয়া হয়েছে বা যেখানে উল্লেখ করার প্রয়োজন হয়েছে সেখানে ১, ২, ৩ ইত্যাদি চিহ্ন ব্যবহার না করে [ লেখক নাম, গ্রন্থপ্রকাশের তারিখ, পৃষ্ঠাসংখ্যা ] সংক্ষেপে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। গ্রন্থতালিকা ধরে সেই গ্রন্থগুলির বিস্তৃত বিবরণ পাওয়া যাবে। ফলে, পুনরুক্তি বর্জন করা সম্ভব হয়েছে।