clearence-full-logo

Ends in

00 : Days
00 : Hrs
00 : Min
00 Sec
নারী যৌনতা রাজনীতি
superdeal-logo

চলবে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত

00 : 00 : 00 : 00

নারী যৌনতা রাজনীতি

1 Rating  |  No Review

TK. 475 TK. 425 You Save TK. 50 (11%)

বর্তমানে প্রকাশনীতে এই বইটির মুদ্রিত কপি নেই। বইটি প্রকাশনীতে এভেইলেবল হলে এসএমএস/ইমেইলের মাধ্যমে নোটিফিকেশন পেতে রিকুয়েস্ট ফর রিপ্রিন্ট এ ক্লিক করুন।

book-icon

Cash On Delivery

mponey-icon

7 Days Happy Return

Similar Category eBooks

বইটই

Product Specification & Summary

ভূমিকা
মিশেল ফুকোই কথাটা বলেছিলেন, পূর্বের যে-কোনো সময়ের তুলনায় উনিশ ও বিশ শতকের যৌনতার ভাবনা ছিল একেবারেই আলাদা। বস্তুসদৃশ শরীর ছিল এর আগে যৌনতার কেন্দ্রবিন্দু, কিন্তু এই সময়ে যৌনতার কেন্দ্র হয়ে উঠল মানুষের মন বা অন্তর্লোক। মনোলোকের এই আবিষ্কারই হচ্ছে আধুনিকতার প্রধান বৈশিষ্ট্য। শরীর ছাড়িয়ে নারী-পুরুষ তখনই মানস সংযোগের সূত্রে পরস্পরকে অনুভব করতে পেরেছে, গড়ে উঠেছে মানসিক সখ্য। যৌনতা হচ্ছে এই সখ্যেরই তুঙ্গতম রূপ। মানবিকতারও উৎস এই যৌনতা। এটিই হচ্ছে মানবিক সম্পর্কের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক। প্রাথমিকভাবে এই সম্পর্কটি শারীরিক, কিন্তু সামাজিক পটপরিসরে ঘটে এর বিকাশ ও পরিচর্যা। ফলে শারীরিক অনুষঙ্গের সঙ্গে জড়িয়ে যায় সামাজিক অনুষঙ্গ। সামাজিকতার সূত্র ধরে যুক্ত হয়ে পড়ে মনস্তাত্ত্বিক আচরণের সঙ্গে। যৌনতা এভাবেই শুধু শারীরিক হয়ে থাকে না, আমাদের যাপিত জীবন ও মতাদর্শের সঙ্গে জড়িয়ে যায়। নারীভাবুকেরা বলেছেন, যৌনতা ব্যবহারিক জগতে ও মতাদর্শের ক্ষেত্রে যেভাবে উপস্থাপিত হয় সেটি নিঃসন্দেহে একটি রাজনৈতিক প্রক্রিয়া। যৌনভাবনা, মিথুনকেন্দ্রিক নান্দনিক তত্ত্ব, শরীর ও মনস্তাত্ত্বিক চিকিৎসার যেসব তত্ত্ব বিশ শতকের ভাবনাজগৎকে আচ্ছন্ন করে রেখেছিল, পশ্চিমি নারীবাদীরা সেইসব ভাবনার মধ্যেই লক্ষ করেছেন কীভাবে নারীকে পুরুষের অধস্তন করে রাখা হয়, কীভাবে ঘটে নারীসত্তার অবমূল্যায়ন। মিশেল ফুকো বলেছেন, বুর্জোয়া সমাজের বৈশিষ্ট্য হিসেবে গত কয়েক শতক ধরে ঘটেছে যৌনতার এই উপস্থাপনা।

নারীবাদীরা লক্ষ করেছেন, পুরুষতান্ত্রিক মতাদর্শ ও প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে লিঙ্গভেদের মধ্য দিয়ে সামাজিক বৈষম্যের দুঃসহ পরিবেশ সৃষ্টি করা হয়েছে। নারী এই সমাজ ও যৌনজীবনে, সিমোঁ দ্য বোভেয়ারের ভাষ্য অনুসারে, ‘দ্বিতীয় লিঙ্গে’র মানুষ, পুরুষের অবস্থান তার ঊর্ধ্বে। নারীর যৌনতাকে নিয়ন্ত্রণ করে পুরুষতন্ত্রই সমাজে তার আধিপত্য বজায় রাখে। নারীর যৌনতার ওপর নারীর কোনো অধিকার স্বীকার করে নেওয়া হয় না। এই অধিকার হরণই পুরুষতন্ত্রের মূলকথা।

পুরুষতন্ত্রের কাছে নারীর রয়েছে এমন এক শরীর, যে-শরীরকে কেন্দ্র করে পুরুষের যৌনবাসনার পরিতৃপ্তি ঘটে। নারীর আরেকটি বিশেষ ক্ষমতা রয়েছে, সে সন্তান জন্ম দিতে পারে। নারীর যৌনতাকে তাই পুরুষের বশে রাখা প্রয়োজন। নারীর যৌনতাকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারলেই পুরুষতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থায় পুরুষ নারীকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে। একই সঙ্গে ঘটবে যৌনবাসনার পরিতৃপ্তি এবং অব্যাহত থাকবে মানবপ্রজন্মের প্রবহমানতা। গত শতকের মাঝামাঝি থেকে নারীবাদ এই আধিপত্যবাদী পুরুষতান্ত্রিক যৌনতার স্বরূপ উন্মোচন করে চলেছে। তাদের লক্ষ্য, নারীমুক্তির মধ্য দিয়ে নারী-পুরুষের সম্পকর্কে মানবিকতার ওপর প্রতিষ্ঠিত করা।

নারীবাদীরা বিশ্লেষণ করে দেখিয়েছেন, নারী-পুরুষের যৌনাঙ্গের প্রভেদ প্রকৃতিগত প্রভেদ, এটা অপরিবর্তনীয়; কিন্তু যৌনতার যে-রূপ লিঙ্গবিভাজনকে কেন্দ্র করে প্রকাশ পায়, সেটি সামাজিক। পুরুষতন্ত্র এর স্রষ্টা, একে নিয়ন্ত্রণ এবং সামাজিকভাবে গ্রহণযোগ্যও করে তুলেছে পুরুষতন্ত্র। স্বাভাবিকভাবেই নারীবাদীরা পুরুষতান্ত্রিক এই যৌনতার তীব্র বিরোধিতা করেছেন। যৌনতা যে শুধু শারীরিক নয় ব্যক্তিক আত্মপরিচয়কেও নির্মাণ করে, অস্তিত্বের নির্যাস হয়ে ওঠে, নারীবাদী ডিসকোর্স বা বয়ানে বিস্তৃতভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে এসব প্রসঙ্গ। ধসিয়ে দিয়েছে যৌনতার অনেক প্রথাবদ্ধ দৃষ্টিকোণ, ধারণা ও চর্চার সনাতন ধারা। নারীবাদীরা দেখিয়েছেন, নারীশরীরের উপস্থাপনা, যৌনচিত্রায়ণ, যৌনতাকে ভোগ্যপণ্য করে তোলা, যৌননিপীড়ন, ধর্ষণ, মাতৃত্বের অধিকার খর্ব করা, যৌনপ্রভুত্ব ইত্যাদি নানাভাবে পুরুষতন্ত্র নারীর যৌনতাকে অবমাননা, ব্যবহার ও নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। গত শতকের দ্বিতীয়ার্ধ থেকে নারীবাদীরা এই পুরুষতান্ত্রিক আধিপত্যবাদী যৌনতার বিরুদ্ধে গড়ে তুলেছেন পাল্টা বয়ান বা ডিসকোর্স। তারা বিশ্লেষণ করে দেখিয়েছেন, নারীর যৌনতাকে আত্মসাৎ করে পুরুষতন্ত্র যৌন-আধিপত্য বজায় রেখেছে। পুরুষের যৌনচিত্রণ সামাজিক নয়, মতাদর্শিক। নারীর শরীরকেও করে তোলা হয়েছে পুরুষের কামনার প্রতীক। পুরুষ যৌনপরিতৃপ্তির লক্ষ্যে নারীশরীরের যৌনতা নিয়ন্ত্রণ করে। পর্নোগ্রাফির মধ্য দিয়ে নারীর যৌন-অবমাননা যেমন ঘটানো হয়, তেমনি কামনা-বাসনাকেও বিকৃতভাবে উপস্থাপন করা হয়। যৌনকর্মের অধিকার থেকে নারীকে বঞ্চিত করে তার বেঁচে থাকবার অধিকারটুকুও কেড়ে নেয় পুরুষ। ধর্ষণের মধ্য দিয়ে নারীর যৌনতাকে বীভৎস অমানবিকভাবে ব্যবহার করে পুরুষ। নারীর স্বাধীন প্রজনন অধিকারকেও কেড়ে নিয়েছে পুরুষতন্ত্র। জন্মনিয়ন্ত্রণের অধিকাংশ গবেষণা ও পদ্ধতি নারীযৌনতাকে ঘিরেই আবর্তিত হচ্ছে। এইচআইভি/এইডসের মতো রোগের শিকার হচ্ছে যে-নারী, তাও পুরুষেরইজন্য। সাহিত্য-সংস্কৃতি-শিল্পকলা-চলচ্চিত্রও পুরুষের যৌনতার দ্বারা সূক্ষ্মভাবে আচ্ছন্ন হয়ে আছে। একটু গভীরভাবে লক্ষ করলেই দেখা যাবে সৃজনশীল রচনায়, কবিতায়, কথাসাহিত্যে, গানে, চিত্রশিল্পে, প্রবাদ-প্রবচনে, চলচ্চিত্রে কত বহুমুখী আর বিচিত্র যৌনতার পুরুষতান্ত্রিক দৃষ্টিভঙ্গির উপস্থাপনা ঘটে। সব মিলিয়ে যে নারীযৌনতার ওপর নারীর নিরঙ্কুশ অধিকার থাকার কথা, সেই অধিকার তার একেবারেই নেই। পুরুষতন্ত্র এই অধিকারের সবটাই আত্মসাৎ করে নিজের স্বার্থে নিজের মতো করে উপস্থাপন ও ব্যবহার করছে। পুরুষে জীবন এভাবেই যেমন ইচ্ছে সেইভাবে গড়ে তোলা হয়েছে, নারীকে শিকার হতে হয়েছে অবমাননার। এই অবমাননা মানবিকতার অবমাননা, নারীকে যা দ্বিতীয় লিঙ্গের স্তরে নামিয়ে এনেছে। এই হচ্ছে যৌনতার পুরুষতান্ত্রিক রাজনীতি। নারী যৌনতা ও রাজনীতি শীর্ষক এই গ্রন্থে পুরুষতান্ত্রিক এই যৌনতারই স্বরূপ উন্মোচন করা হয়েছে।

টুকরো টুকরো লেখা কিন্তু এই গ্রন্থের প্রবন্ধগুলো একটি একক ভাবনার ঐক্যসূত্রে গাঁথা, সেটি হচ্ছে যৌনতা। যৌনতা ও পুরুষতান্ত্রিক আধিপত্যের উৎস-সন্ধানই হচ্ছে লেখাগুলোর যোগসূত্র। যৌনতার সূত্রে নারী-পুরুষের মধ্যে যে বিভাজন টানা হয়, যে বিভাজনের প্রভাবে নারীর জীবন বিপন্ন হয়ে পড়ে, সেই অমানবিক দিকটির প্রতি আমি পাঠকের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চেয়েছি।

লেখকের লক্ষ ছিল যৌনতার যত ধরনের আধিপত্যবাদী পুরুষতান্ত্রিক মাত্রা রয়েছে, তাকে গভীর বিশ্লেষণের মধ্য দিয়ে উন্মোচন করে দেখানো। গত প্রায় পাঁচ-ছয় দশক ধরে নারীভাবুক ও নারীবাদীরা যৌনতার যে বহুমাত্রিক, গভীর বিশ্লেষণ করে যৌনরাজনীতির দৃশ্যপট ও দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টে দিয়েছেন, তাকে পাঠকের সামনে উপস্থিত করা হয়েছে। বলতে দ্বিধা নেই, এই গ্রন্থে যেসব প্রসঙ্গ আলোচিত হয়েছে এর বাইরে এখনো অনেক গুরুত্বপূর্ণ প্রসঙ্গ অনালোচিত থেকে গেল। এ কথাও কবুল করছি, বইটাকে পাঠকের ক্রয়সীমার মধ্যে রাখার জন্যই এই অতৃপ্তিটুকু মেনে নিতে হলো। পাঠকদের অনেকেই হয়তো লক্ষ করে থাকবেন, এই লেখাগুলো ‘জীবনের শিখা ও অশ্র“বিন্দু’ শিরোনামে ধারাবাহিকভাবে ছাপা হয়েছিল সংবাদ সাময়িকীতে। সেই সূত্রে দৈনিক সংবাদের সাহিত্য-সম্পাদক কবি ওবায়েদ আকাশকে ধন্যবাদ জানাই। একই সঙ্গে বইটি প্রকাশ করার অভিপ্রায় ব্যক্ত করায় বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের কবি-সম্পাদক আবুল হাসনাতকে আমার সশ্রদ্ধ কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি।
Title নারী যৌনতা রাজনীতি
Author
Publisher
ISBN 9789849047056
Edition 1st Published, 2013
Number of Pages 336
Country বাংলাদেশ
Language বাংলা

Sponsored Products Related To This Item

Reviews and Ratings

5.0

1 Rating and 0 Review

sort icon

Product Q/A

Have a question regarding the product? Ask Us

Show more Question(s)

Customers Also Bought

loading

Similar Category Best Selling Books

prize book-reading point
Superstore
Up To 65% Off
Recently Viewed
cash

Cash on delivery

Pay cash at your doorstep

service

Delivery

All over Bangladesh

return

Happy return

7 days return facility

0 Item(s)

Subtotal:

Customers Also Bought

Are you sure to remove this from bookshelf?

Write a Review

নারী যৌনতা রাজনীতি

মাসুদুজ্জামান

৳ 425 ৳475.0

Please rate this product