"গ্রামীণ ব্যাংক ও আমার জীব" বইয়ের ফ্ল্যাপের লেখা: আধুনিক পৃথিবীতে গ্রামীণ ব্যাংক এক মাসুদুরপ্রসারী ‘বিপ্লব’-এর নাম। আর 'এই বিপ্লবের উদ্যোক্তা মুহাম্মদ ইউনূস। সামর্থ্যহীন, পুঁজিহীন দরিদ্রতম মানুষের দারিদ্র দূর করার জন্যে এবং তাদের অন্তর্নিহিত সৃজনীসত্তাকে বিকশিত করার লক্ষ্যে তিনি আশির দশকে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন গ্রামীণ 'ব্যাংক। দারিদ্রমুক্ত পৃথিবী গড়ার যে স্বপ্ন তিনি দেখেছিলেন, তা আজ বাস্তবায়িত হয়েছে। তিনি নিজে অবশ্য মনে করেন, “গ্রামীণ ব্যাংক গরিব মানুষের মালিকানায় প্রতিষ্ঠিত একটি প্রতিষ্ঠান। এটা একটা স্বপ্নও বটে।” দরিদ্র মানুষের কাছে গ্রামীণ ব্যাংক সত্যিই এক স্বপ্নসম্ভব হাতিয়ার। ইউনূস নিজেই বলছেন, “যা নিয়ে আমরা স্বপ্ন দেখি, শুধুমাত্র তা-ই আমরা অর্জন করতে পারি। অর্জনের আগে স্বপ্ন দেখাটা জরুরি শর্ত। দারিদ্রমুক্ত পৃথিবী সৃষ্টি করা যে কোনও অলীক স্বপ্ন নয় সেটা। 'গ্রামীণ ব্যাংকের কাজ করতে গিয়ে প্রতিদিন প্রমাণ পেয়েছি। সামান্য পুঁজি হাতে পেয়ে 'গরিব মহিলা কীভাবে নিজেকে বিকশিত । করতে থাকে সেটা দেখে যাচ্ছি অবিরামভাবে। এতে আমার বিশ্বাস কেবল দৃঢ়তরই হচ্ছে। এ পর্যন্ত বিশ্বাসে কখনও ফাটল ধরার কোনও অবকাশ ঘটেনি।” 'এই আত্মকথায় ইউনূস তার বাল্যকাল থেকে 'গ্রামীণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠা, তার পরবর্তী সাফল্য 'এবং নতুন দিগন্ত খুলে যাওয়ার কাহিনী। বলেছেন ধাপে ধাপে, পাপড়ির মতাে মেলে 'ধরেছেন নিজের জীবন ও ভাবনা। সব মিলিয়ে মুহাম্মদ ইউনুসের এই আত্মজীবনী এক স্বপ্নসন্ধানী সফল মানুষের অনন্য জীবনকথা।
অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস (জন্ম: ২৮ জুন, ১৯৪০) বাংলাদেশী নোবেল পুরস্কার বিজয়ী ব্যাংকার ও অর্থনীতিবিদ। তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের একজন শিক্ষক। তিনি ক্ষুদ্রঋণ ধারণার প্রবর্তক। অধ্যাপক ইউনূস গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা। মুহাম্মদ ইউনূস এবং তার প্রতিষ্ঠিত গ্রামীণ ব্যাংক যৌথভাবে ২০০৬ সালে নোবেল শান্তি পুরস্কার লাভ করেন। তিনি প্রথম বাংলাদেশী হিসেবে এই পুরস্কার লাভ করেন। ইউনূস বিশ্ব খাদ্য পুরস্কার সহ আরও জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পুরস্কার লাভ করেছেন।