ফ্ল্যাপ- বই পরিচিতিঃ সবকিছু স্বাভাবিকভাবে চলতে থাকলেও একসময় ঠিকই ঘড়ির কাঁটা কয়েক সেকেণ্ডের জন্য থমকে যায়। হঠাৎ সবকিছু ছেড়ে একা হয়ে যাওয়ার আগে ঘড়ির কাঁটাকে কয়েক সেকেণ্ডের জন্য থামতে হয়। একা হয়ে যাওয়ার পর টিক টিক করে ঘড়ির কাঁটা আবার চলে। মাঝরাতের এই সুনসান নীরবতায় আমাদের বাসায় ঘড়ির কাঁটা কয়েক সেকেণ্ডের জন্য থমকে গেল। আমার মা পৃথিবীর সবকিছুকে ছেড়ে হঠাৎই বেশ একা হয়ে গেলেন। নীরব ঘরে ঘড়ির টিক টিক শব্দের প্রতিধ্বনীতে কেউ তা টেরই পেলো না। মানুষ কি এভাবেই নীরবে সবার থেকে একা হয়ে যায়? কে জানে যায় হয়তো। মেঘ এসে মা-কে ছুঁয়ে ছুঁয়ে গেল, আমরা কেউ টেরই পেলাম না।
লেখকের কথাঃ কথিত আছে, আর্নেস্ট হোমিংওয়ে একবার তাঁর কলিগদের সাথে ১০ ডলারের বাজি ধরে জিতে পৃথিবীর সবচেয়ে ছোটগল্পটির জন্ম দেন মাত্র ছয়টি শব্দে। এই ধরনের গল্পগুলো “ফ্ল্যাশ ফিকশন” হিসেবে পরিচিত, এগুলো এক একটি সম্পূর্ণ গল্প যা শুরু হতে না হতেই শেষ হয়ে যায়, কিন্তু তার একটি রেশ পাঠকের ভেতর থেকে যায়। গল্পটি এমন ছিল, “For sale. Baby Shoes. Never worn.” গল্পটির ভাবার্থ, “বাচ্চার জন্য জুতো কেনা হয়েছিল, কিন্তু সেই বাচ্চাটা পৃথিবীর আলোই দেখেনি।” ৬ শব্দে মা-র গর্ভে মারা যাওয়া শিশুর জন্য মায়ের অনুভূতি। ঠিক তেমনি মা মারা গেলে এই অনুভূতিটা একজন সন্তানের জন্য কেমন? পৃথিবীতে এমন ক্ষুদ্র পরিসরে গল্প লেখার ক্ষমতা সৃষ্টিকর্তা সবাইকে দিয়ে পাঠাননি। আমার গল্পগুলো খুবই সাধারণ মানের। সাধারণ মানের একজন লেখক হিসেবেই আমাদের চারপাশের কিছু পরিচিত অনুভূতিগুলোর মাঝে অন্যতম মৃত্যু চিন্তা-কে নিয়ে লেখা এই সাধারণ উপন্যাস। পাঠকদের কেমন লাগবে জানি না। ক্ষমাসুলভ দৃষ্টিতে উপন্যাসটিকে গ্রহন করার অনুরোধ রইলো। জাগৃতি প্রকাশনীর দীপন ভাইকে অনেক ধন্যবাদ, উপন্যাসটিকে গ্রন্থাকারে প্রকাশ করে পাঠকদের হাতে পৌছে দেয়ার জন্য। শুধু ধন্যবাদ দিয়ে ছোট করতে চাই না। তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞও। সবাইকে মহান একুশে ফেব্রুয়ারীর অগ্রীম শুভেচ্ছা। সার্জিল খান
হুমায়ুন আহমেদ পড়ে হাতে কলম নেয়া শুরুটা শখের বশে হলেও উদ্যমী এই তরুণ লেখার মধ্যেই এখনাে ঢেলে চলেছেন নিজের সবটুকু মেধা আর পরিশ্রম দেশসেরা স্যাটায়ার ম্যাগাজিন “উন্মাদ”-এর সম্পাদক আহসান হাবীব দিয়ে চলেছেন নিরলস অনুপ্রেরণা। সাহিত্যকে অন্য নবীন লেখকদের সাথে পরিচয় করাতে এরই মধ্যে জন্ম দিয়েছেন নবীন গল্পকারদের নিয়ে করা সিরিজ বই মেট্রোপলিটন গল্প গুচ্ছ। দেশসেরা স্যাটায়ার ম্যাগাজিন উন্মাদু এ কাজ করছেন রম্য লেখক হিসেবে। শখের বসে গবেষণা করতে গিয়ে মুক্তিযুদ্ধকে নিয়ে লেখার আগ্রহ লালন করে আসছেন লেখালেখিতে হাতেখড়িরও আগে। সেই ধারায় প্রকাশিত লেখকের প্রথম উপন্যাস রঞ্জিত জননী’র পটভূমি হিসেবেও তাই বেছে নিয়েছিলেন মুক্তিযুদ্ধকেই। এ বছর বেরােচ্ছে দেশসেরা সাহিত্যিকদের সাথে নবীন গল্পকারদের মিশেলে সম্পাদনার বই “মুক্তিযুদ্ধের গল্প সংকলন।” এছাড়াও গতবছর প্রকাশিত হয়েছে দ্বিতীয় উপন্যাস ‘পরপার। এ বছর ভৌতিক ও সায়েন্স ফিকশন উপন্যাসের দিকে ঝুঁকে লিখেছেন অস্পৃশ্য ও অচেনা জগত। ১৯৯২ সালের ২রা জুলাই জন্ম নেয়া এই তরুণ একটি বেসরকারি ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছেন কম্পিউটার প্রকৌশলে। ভার্চুয়াল লাইফে আর অ্যাকচুয়াল লাইফে সমান তালে দিনকে দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছেন নিজের ক্ষুরধার লেখনী শক্তির বলে । খেয়ালী এই তরুণের ভালাে লাগে জোছনা, ঝুম বৃষ্টি, গােধুলী লগ্ন, কুয়াশা। তবে সবচেয়ে বেশি ভালবাসেন লিখতে, লিখে চলেন নিজের। মনের খােরাক মেটাতে। সেই ভালােবাসার জায়গা থেকেই লিখে যাচ্ছেন। অনবরত। সাহিত্যে সৃষ্টি করে চলেছেন নতুন সব সম্ভাবনার দুয়ার।