নিশিরঙ্গিনী (হার্ডকভার)

সাপটিকে মোহন প্রথম দেখে প্রায় দু-বছর আগে, পৌষের এক ভোরে, ডেরার পেছনে কুণ্ডুলী পাকিয়ে রোদের ওম নিচ্ছে। মাস ছয়েক আর পাত্তা নেই। তারপর আষাঢ়ের ঘোর বর্ষায় দক্ষিণের নর্মদাপুকুরে জাল মারতে যাওয়ার সময় হঠাৎ একদিন আবার দেখতে পায়। তার দু-হাত সামনে দিয়ে একটা সোনাব্যাঙ মুখে নিয়ে প্রায় দশ-বারো হাত লম্বা ভয়ঙ্কর সরীসৃপটি দ্রুত রাস্তা পার হয়ে প্রাচীরের ধ্বংসাবশেষের একটা ফোকড়ে ঢুকে পড়ে। মোহনের এক হাতে জাল, অন্য হাতে লাঠি ছিল। একটা অস্ফুট চিৎকার করে লেজ বরাবর সে লাঠির আঘাতও করেছিল। আঘাতটা ছিল প্রচণ্ড, কিন্তু দুর্ভাগ্য, লক্ষচ্যুত হয়।
ঘুমানোর সময় ছাড়া মোহনের হাতে লাঠিটা সবসময়ই থাকে। এই পরিত্যক্ত রাজবাড়িতে সে একা থাকে। আর থাকে শেয়াল, খরগোশ, তক্ষক, সোনাব্যাঙ, পাখপাখালি; আর থাকে বিষধর সব মারাত্মক সাপ। শেয়াল, খরগোশ, তক্ষক, সোনাব্যাঙ বা পাখপাখালির জন্য লাঠির দরকার নেই। তারা ভয়াতুর প্রাণী, মানুষ দেখলেই সটকে পড়ে। লাঠি দরকার সাপের জন্য। যতই বড় হোক, যতই বিষধর হোক, দেখা মাত্র লাঠির আঘাত হানতে হবে।