বাংলাদেশের নব প্রজন্মের লেখকদের শিল্প সাহিত্যে নুতন ধারার যে আবির্ভাব, সেটির উন্মেষ ঘটেছে মহান মুক্তির পরে। যেটি অনেক আনন্দদায়ক। এবং একই সঙ্গে বলা যেতে পারে আনকোরা স্বাদ সংযোজন করেছেন তাদের রচনা শৈলীতে। গল্পে, কবিতায়,প্রেম ব্যর্থতা, প্রাপ্তি, স্মৃতিচারণ এবং বাংলাদেশের সমাজচিত্র বিশেষভাবে লক্ষ্যনীয় বিষয় পরিবেশনার মধ্য দিয়ে। যার অনবদ্য প্রকাশ নানারূপে। নানা ছন্দে। এবং নব অভিপ্রায় পরিবেশিত হচ্ছে লেখকদের শিল্প সাহিত্য। বয়সে নবীন হলেও পূর্ণতর করতে চলেছে তাদের সৃষ্টি ক্ষমতা। এবং সৃষ্টি সাধনা। বলা যেতে পারে তাদের আত্মপ্রকাশ, স্বসাহস পদচারনা বাংলাদেশের সাহিত্যের উঠোনে নিঃসন্দেহে আহলাদিত করবে আমাদের নুতন প্রজন্মের গল্প কবিতা পাঠক প্রেমিকদের। নুতনদের লেখায় ভুল ভ্রান্তি যাই থাকুক না কেন তারা যদি তাদেরই লেখার ভুবনে নিয়মিত শ্রম বিনিয়োগ করেন বিশেষত কবিতার ভুবনে। প্রীতিপদ ও চমকপ্রদ হবে। এক্ষুনি চাওয়াটি হয়ত ঠিক না হলেও ভবিষ্যতে যে হবেনা সে টি না বলে, বরং বলব নিশ্চয়ই হবে। বিশেষত যে সকল তরুন কবি লিখছেন কথাটির অবতারনা শুধু তাদের জন্য। কবি শাহ্নাজ বীথি তার দৃষ্টিকোণ থেকে যা কিছু অবলোকন করেছেন, উদ্বুদ্ধ হবার মত ক্ষুরধার কিছু কবিতারই সংযোজন “জীবন নদী” কাব্য গ্রন্থে। আশা করি সহৃদয় কবিতা প্রেমিক দিব্য দৃষ্টিতে দেখবেন বীথির কবিতার ভিতর দিয়ে জীবনের নানা প্রবাহ। অতীত, বর্তমান, এবং ভবিষ্যত স্পষ্টতর থেকে স্পষ্টতর হয়েছে কবির কবিতায়। বীথির কবিতা সহজ সরল নদীর মতই, কোথাও কোন জড়তা নেই আছে সহজ কথন। বহুবর্ণের উপমায় সমৃদ্ধ। স্বাচ্ছন্দেই পঠিত হবে কবির সাবলীল বাচন। কবিতায় বেশ কিছু শ্লেষধর্মী বাক্য আছে – বাক্যগুলি বার বার মনে করিয়ে দেবে মৌলবাদীদের আস্ফালনের কথা। আমাদের স্বাধীনতা নিয়ে যারা এখনো কটাক্ষ করতে দ্বিধাবোধ করছে না। বীথি, পেশায় চিকিৎসক হলেও মননে আসলে কবি। মাকিদ হায়দার পৌষ ৪ ১৪২০। ডিসেম্বর ১৮ ২০ ১৩।
উৎসর্গ সকল নিকট-দূর, দৃশ্য- অদৃশ্য শুভানুধ্যায়ীদের
পরিচিতি জগত সংসারের আর সব মানব শিশুর মতই মা-বাবার কোল আলো করে উত্তাল ৬৬ তে দিনাজপুরের এক মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্মেছিলাম অগ্রহায়ণের কোন এক সূর্যাস্তে। পৃথিবী কতটা আলোকিত হয়েছে জানিনা, কিন্তু একটি সংস্কৃতিমনা পরিবারে জন্মে এবং নিজেকে চিকিৎসা বিজ্ঞানের মত মহৎ পেশায় যুক্ত করতে পেরে নিজে আলোকিত হয়েছি। ছোট্ট বেলার ছড়া কবিতার ছোট্ট পাখি সেই যে ফাঁকি দিয়ে উড়ে গিয়েছিল সেই কবে, তা আর মাঝে ধরা দেয় নি। অনেক বছর বাদে হঠাৎ সামাজিক যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম ফেসবুকে আবার তাকে ধরে ফেলি হাত বাড়িয়ে। আবার তার সাথে নূতন করে গড়ে উঠে সখ্যতা, শুরু হয় ভাব আদান- প্রদানের পালা, প্রকাশের ভাবনা। তারই সূত্র ধরে কবিতার পাখিকে দিগন্ত বিস্তৃত নীলাকাশে আরেকটু উড়িয়ে দেয়া যদি সে আলোর দেখা পায়, সাদা মেঘের ভেলায় নিজেকে ভাসাতে পারে।