রবীন্দ্রনাথের পর বাংলা সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ বহুমাত্রিক প্রতিভা। সাহিত্যের বিভিন্ন শাখায় তাঁর সাধনা রীতিমতো বিস্ময়সম্ভব। কবিতা-উপন্যাস- ছোটগল্প-নাটক-প্রবন্ধ-গবেষণা-অনুবাদ-ভ্রমণ- চিঠিপত্রÑসাহিত্যের সব শাখাতেই তিনি রেখেছেন স্বকীয় প্রতিভার স্বাক্ষর। বক্ষ্যমাণ গ্রন্থে বুদ্ধদেব বসুর ঔপন্যাসিক-প্রতিভার উপর আলোকসম্পাতের প্রয়াস নেওয়া হয়েছে। বুদ্ধদেব বসুর উপন্যাসে আধুনিক মানুষের নৈঃসঙ্গ্যচেতনা ও অনন্বয়বোধ কীভাবে এবং কোন মাত্রায় প্রতিবিম্বিত হয়েছেÑতা-ই বর্তমান গ্রন্থের মৌল অন্বিষ্ট। সাহিত্যক্ষেত্রে ‘জীবন ও সাহিত্য’ কিংবা ‘সমাজচিত্র’ধর্মী প্রথাচল ম্যাক্রো-গবেষণার ধারায় বক্ষ্যমাণ গ্রন্থ মাইক্রো-গবেষণার অনুপম দৃষ্টান্ত হিসেবে পণ্ডিত-গবেষকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। সমাজবাস্তবতা, ইতিহাসচেতনা, কালজ্ঞান ও নান্দনিক মনস্তত্ত্বের সমন্বিত প্রেক্ষাপটে বিচার্য সাহিত্য-শিল্পকলার যে কোনো বিষয় ও অনুষঙ্গ। বর্তমান গ্রন্থে সচেতন পাঠক ও কৌতূহলী গবেষক আধুনিক সমালোচনা ও বিশ্লেষণ-চারিত্র্যের এসব বৈশিষ্ট্যের পরিচয় পাবেন নিঃসন্দেহে। সাবলীল ও গীতল এক গদ্যে ড. ঘোষ এখানে তুলে ধরেছেন বুদ্ধদেবের উপন্যাসে প্রতিফলিত নৈঃসঙ্গ্যচেতনার বহুমাত্রিক রূপ ও রূপান্তরÑযা পাঠকের ভালো লাগবে বলে আমাদের বিশ্বাস।
Biswajit Ghosh, জন্ম ১৯৫৮ সালে, বরিশালে। ‘বুদ্ধদেব বসুর উপন্যাসে নৈঃসঙ্গ্যচেতনার রূপায়ণ’ বিষয়ে গবেষণার জন্য ১৯৯৫ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচ ডি ডিগ্রি লাভ। ১৯৮৪ সালের ১লা ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে প্রভাষক হিসেবে কর্মজীবন আরম্ভ। বর্তমানে অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত। বিশ্বজিৎ ঘোষ মূলত প্রাবন্ধিক-গবেষক। তাঁর উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ : বাংলাদেশের সাহিত্য (১৯৯১), নজরুলমানস ও অন্যান্য প্রসঙ্গ (১৯৯৩), আন্তর্জাতিক ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলন ও রবীন্দ্রনাথ (১৯৯৪), বুদ্ধদেব বসুর উপন্যাসে নৈঃসঙ্গ্যচেতনার রূপায়ণ (১৯৯৭) ইত্যাদি। ২০১১ সালে গবেষণায় সামগ্রিক অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ লাভ করেন বাংলা একাডেমি পুরস্কার। এছাড়া ড. বিশ্বজিৎ ঘোষ বাংলা একাডেমির ‘ডক্টর মুহম্মদ এনামুল হক স্বর্ণপদক’, ‘জীবনানন্দ দাশ সাহিত্যপদক’, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘আবদুর রব চৌধুরী স্বর্ণপদক’, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার প্রদত্ত ‘মহাকবি মধুসূদন জাতীয় পদক’, ‘কবি নজরুল স্বর্ণপদক’ লাভ করেন।