অনেক দিনের বন্ধুত্ব মহিষ আর শালিকের। ইদুরের ভারী হিংসে তাই দেখে। পাহাড়ের গাঁ ঘেষে মহিষ যখন চড়ে বেড়ায়, ঘাস খায়, শালিক তার ঘরে বসে কুটুর-কুটুর কথা বলতেই থাকে। বড় দুটো কান নাড়িয়ে মোষ আবার তাতে সায়ও দেয়। ভর দুপুরের ক্লান্তি কাটাতে ইদুর যখন ঠান্ডা-গর্তের ভিতরে ঘাপটি মেরে থাকে, শালিক তখন মোষের কান খুঁটে দেয়। মাঝে মাঝেই লেজ তুলে মোষ শালিককে আদরও করে। দেখে পিত্তি জ্বলে যায় ইদুরের। ইস্ তার যদি অমন কেউ থাকত! কিন্তু শালিক আর মোষের বন্ধুত্ব তো আজকের নয়। প্যাঁচপ্যাঁচে কাঁদায় নাইতে নামলে মোষের শরীর যখন জড়িয়ে ধরেছিল জোঁকেরা সে-কি লাফালাফি মোষের! অত বড় জন্তুটার শিংও কাজে লাগে না; হাত-পাও না। শুধু লেজ আর কদ্দুর পৌছায়? শালিক আর তার বন্ধু তখন যাচ্ছিল আরো বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে। মোষের দুরাবস্থা দেখে ভারী মায়া হল তার। দু'বন্ধু মিলে ঠোঁট আর খামচি দিয়েই জোঁকগুলোকে মোষের গা থেকে ঝেড়ে ফেলল তারা। বিশাল মোষটা শক্ত খুর দিয়ে সেগুলোকে আচ্ছা করে পিষতে পিষতে জানাল: আজ থেকে শালিক হল মোষের বন্ধু। যখনই উড়তে উড়তে ক্লান্তি আসবে, আমার পিঠেই জিরোবে বাছারা। ঠিক আছে? শালিকরা খুব খুশি। অত বড় একটা বন্ধু থাকলে কত লাভ! কাকের দিকে তাকাও- খালি শত্রুতা করে। চিলের কাছে তো যাওয়াই যায় না। পেঁচা তো পারলে তাদেরকেও ভয় দেখায়। মোষকে বন্ধু পেয়ে খুবই খুশি শালিক।