“স্কুলে যা পড়ানো হয় না" বইটির ভূমিকা থেকে নেয়াঃ এ বইটি মূলত বয়ঃসন্ধির সমস্যা নিয়ে। এই বয়সে দৈহিক পরিবর্তনের সাথে সাথে মনােজগতেও বিরাট আলােড়ন সৃষ্টি হয়। এ রকম বয়সে ছেলেমেয়েদের কিছু-নাকিছু মানসিক শক্তি অর্জনের জন্যে একজন পথপ্রদর্শক প্রয়ােজন হয়। কারণ এ সময়ে তারা অনেক কথাই বাবা-মা ও শিক্ষককে বলতে পারে না। অনেক বাবা-মা তাদের সন্তানকে বােঝেন না। হয় বুঝতে চান না, না হয় বুঝতে অক্ষম। এ বিষয়ে বাবা-মায়ের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টির প্রয়ােজন। এ কারণেই স্কুলে যা পড়ানাে হয় না’ বইটি। আর এ বইটি পড়ার মধ্য দিয়ে মনের ভেতর নানা ধরনের প্রশ্নের উদয় হতে পারে। ব্যক্তিগত সমস্যার সমাধান অনেকেই চাইতে পারে। এসব সমস্যার সমাধান দেওয়ার জন্যে আমাদের দেশে বিশেষ কোনাে প্রতিষ্ঠান নেই। সন্তান মানুষ করা নিয়ে বাবা-মায়েদের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করতে পারে এমন কোনাে ব্যবস্থাও নেই আমাদের দেশে। আমাদের দেশের স্কুলগুলােতেও গতানুগতিক ধারায় শিক্ষা দেওয়া হতাে। বর্তমানে সৃজনশীল শিক্ষাপদ্ধতি চালু হওয়ায় অনেকটা ব্যতিক্রম সৃষ্টি হয়েছে। পদ্ধতিটাই এমন যে, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সচেতন না হয়ে উপায় নেই। যে সব শিক্ষার্থী পড়াশােনায় পিছিয়ে পড়ে, হয় তারা খুব ছটফটে স্বভাবের, না হয় একেবারে চুপচাপ থাকে, তারা পড়াশুনায় মন বসাতে পারে না, যা পড়ে তা মনের মধ্যে ধরে রাখতে পারে না। বাবা-মায়ের ওপর রাগ অভিমান দেখায়, বাবা-মায়েরা তাদের নিয়ে খুবই চিন্তিত হয়ে পড়েন। এই হতাশা বাবা-মাকে এমনভাবে আক্রমণ করে যে, তারা ছেলেমেয়েদের নিয়ে সারাক্ষণ দুশ্চিন্তায় ভােগেন। তাদের পক্ষে আর যথার্থ পরামর্শ দেওয়া সম্ভব হয়ে ওঠে না। সমস্যা হতে পারে, তার সমাধানও আছে। মনে রাখতে হবে যে, কারণ-না-থাকলে কার্য হয় না। তাদের এমন প্রথাবিরােধী ব্যবহারের পেছনে কোনাে না কোনাে কারণ অবশ্যই রয়েছে। প্রকৃত কারণটা খুঁজে বের করে তার প্রতিকারের ব্যবস্থা নিলেই এইসব ছেলেমেয়ে স্বাভাবিক হয়ে উঠতে পারে। আমাদের দেশের শিক্ষাব্যবস্থা অনুসারে ছেলেমেয়েরা যখন নবম শ্রেণিতে ওঠে, তখনই তাদের মেধা অনুসারে ভবিষ্যত-জীবিকা বেছে নেওয়ার পরামর্শ ও সন্ধান দিতে হয়। তার আগে অষ্টম শ্রেণিতে ‘জেএসসি পরীক্ষার ফলাফল থেকেও সিদ্ধান্ত গ্রহণের ইঙ্গিত পাওয়া যায়। এখান থেকেই তাদের একটা লক্ষ্য স্থির করে দিতে হয়। তাদের ক্ষেত্রে স্কুলে যা পড়ানাে হয় না’ বইটি দিকনির্দেশকের ভূমিকা পালন করতে পারে।
Ruhul Amin Babul কবি, সাহিত্যিক, সাংবাদিক ও মুক্তিযোদ্ধা । জন্ম ১৯৫৪ সালে নারায়ণগঞ্জ জেলার গ্রামে | ১৯৭১ সালে আগরতলায় প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের একজন সক্রিয় মুক্তিযোদ্ধা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে বি এ অনার্স এম এ | কর্মজীবনে সাংবাদিকতা, সাহিত্যসেবা ও প্রকাশনা শিল্পের সাথে জড়িত। বাংলাদেশের মৌলিক ছড়াসাহিত্য বাংলাদেশ” ও “পল্লীকবি জসীমউদদীন” প্ৰকাশিত হয়।