মহান মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা সংগ্রামের অন্যতম লক্ষ্য ছিল দেশে একটি সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক সরকার ব্যবস্থা কায়েম। আর এই গণতন্ত্রকে সুপ্রতিষ্ঠিত করার একটি অন্যতম পূর্বশর্ত হল অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের ভোটের অধিকার নিশ্চিত করা এবং প্রতিনিধিত্বশীল ও জবাবদিহিতামূলক একটি সরকার প্রতিষ্ঠা করা। বাংলাদেশ, ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে বাংলাদেশই সবচেয়ে বেশি সময় ধরে কর্তৃত্বমূলক শাসনাধীনে থাকার ফলে গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। নিয়মিত নির্বাচন অনুষ্ঠিত না হওয়া এবং প্রতারণামূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রবণতা সাধারণ মানুষকে রাজনৈতিক প্রক্রিয়া থেকে ক্রমেই বিচ্ছিন্ন ও নির্বাচনবিমুখ করে ফেলে। অথচ গণতন্ত্রের জন্য নির্বাচন অবশ্যই অতীব গুরুত্বপূর্ণ। আর এই গণতন্ত্রের স্বার্থে এবং একটি সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করার লক্ষ্যেই মূলত বাংলাদেশের রাজনীতিতে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা একটি নতুন সংযোজন-তাতে আজ আপামর জনগণের সন্দেহ নেই। সেই প্রেক্ষাপটেই এস এম আনোয়ারা বেগমের বর্তমান গ্রন্থটি রচনার প্রয়াস। স্বাধীনতাউত্তর বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক চর্চা ও অভিজ্ঞতার আলোকে নির্বাচন প্রক্রিয়ার বাস্তব পরিস্থিতি বিশ্লেষণ, নিরপেক্ষ নির্বাচনের প্রতিবন্ধকতা, নির্বাচনে ভোটারদের আকাক্সক্ষা এবং একটি ফলপ্রসূ নির্বাচন সম্পন্ন করার ক্ষেত্রে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের স্বরূপ, গতি-প্রকৃতি ও ভূমিকা বিশ্লেষণ করা হয়েছে এ গবেষণাধর্মী গ্রন্থে। তাই সাম্প্রতিক রাজনৈতিক অবস্থার বিবেচনায় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ও বাংলাদেশের সাধারণ নির্বাচন একটি মূল্যবান সংযোজন এ কথা বলতে দ্বিধা নেই।
S.M. Anowara Begum- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে সম্মানসহ স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি পিএসসির মাধ্যমে মনোনীত হয়ে ১৯৮৩ সালে শিক্ষা ক্যাডারে প্রভাষক হিসেবে যোগদান করে ঝালকাঠি সরকারি কলেজ ও মুন্সিগঞ্জের হরগঙ্গা সরকারি কলেজে অধ্যাপনার দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮৭ সালে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে যোগদান করেন এবং বর্তমানে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যানের দায়িত্বে রয়েছেন। তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগ থেকে ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার ও বাংলাদেশের সাধারণ নির্বাচন’ শীর্ষক গবেষণার উপর পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি ৯নং সেক্টরের মুক্তিযোদ্ধা ও মহিলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সদস্য। তিনি স্কুলজীবনে গার্ল গাইডস ও পেশাগত জীবনে রোভার স্কাউটের সাথে সংযুক্ত রয়েছেন। ড. আনোয়ারা ইরানে Strategic Management Course-এ অংশগ্রহণ করেন। এ ছাড়াও তিনি যেসব কর্মকাণ্ডের সাথে সম্পৃক্ত– ক. জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির নির্বাচিত সহ-সভাপতি; খ. বাংলাদেশ টিচার্স ফেডারেশনের সদস্য; গ. জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র কল্যাণ সংস্থার পরিচালক (প্রাক্তন); ঘ. জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৯৯৮ সালের বন্যার্তদের জন্য ত্রাণ কমিটির কার্যকরী সদস্য; ঙ. জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ শিক্ষক সমিতির (নির্বাচিত) যুগ্ম-সচিব (২০০০-২০০৫); চ. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জীবন রেজিস্টার্ড গ্র্যাজুয়েট; ছ. বাংলা একাডেমীর জীবন সদস্য; জ. জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিলের সদস্য; ঝ. জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে মুক্তিযুদ্ধ গবেষণা কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান; ঞ. জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিলের সদস্য।