ফার্সি সাহেব আর টুটুলের মধ্যে সময়ের পার্থক্য আছে। তবে তারা মানসিক ভাবে বেশ কাছা কাছি। ফার্সি সাহেব জমিদার বংশের মানুষ। তাদের তালুক গেছে তিন পুরুষ আগে ব্রিট্রিশ আমলের শেষ দিনে। তাদের সেই জমিদারী এলাকা ছিলাে পদ্মা নদীর কাছা-কাছি। নাম দৌলতিয়া। দৌলতিয়া কে ছেড়ে যেমন সভ্য সমাজ এখন দুরে সরে গেছে। তেমনি পদ্মা নিজকে সরিয়ে ফেলেছে অনেক দুরে। ফার্সির বাবা ডাক্তার ছিলেন। ঢাকায় তার সব কিছু তবু তিনি প্রায় দৌলতিয়া গিয়ে নানা ভাবে সাহায্য করতেন। সমাজ দুমড়ে-মুছড়ে যে সব নারীদের ফেলে দিয়েছে তাদেরই ঠাই দৌলতিয়া। তাদের প্রতি নিজের সন্তানের মত মমত্ববােধ ছিলাে ফার্সির দাদার এলাকার ধারেই স্কুল করে দিয়ে ছিলেন। তাদের সন্তানদের শিক্ষার আলাের জন্যে স্থানিয় মাস্তানরা চালাতে দেয়নি বেশীদিন। ফার্সির বাবা ডাক্তার হিসেবে সারা জীবন তাদের সেবা করে গেছেন। একসময় এই তালুক ফার্সিদের ছিলাে তাই হয়তাে এই দায়বদ্ধতা। কি সে দায়বদ্ধতা? না গেলেই চলে। তারা তা করেনি দায় ভালাে ভাবে করে গেছে। ফার্সি ও নানা ভাবে আইনী সহায়তা দিতাে তাদের। বাবার মত না হলেও মাঝে মধ্যে গিয়ে খােজ খবর নিতাে। কতৃপক্ষ ঘেন্না করে অসুস্থ হয়ে মরার সময় মেয়েদের কোন হাসপাতালে ভর্তি করতাে না। ফার্সি গিয়ে আইনী যুদ্ধ করে অনেককে হাসপাতালে। ভর্তি করেছিলেন। এরকম বংশের ফার্সি যখন বাধ্য হলেন টুটুলের তরুনী প্রেমিকা পাখিকে নিজেই দৌলতিয়া নিয়ে গিয়ে রেখে আসতে। তখন আরশ কেঁপে ওঠে। যদি আবশ্য উপরে কেপে ওঠার মত কিছু থাকে। যে হেতু পৃথিবীতে মনুষ্যজন প্রতি মুহূর্তে যা ঘটাচ্ছে তাতে উপরে কম্পন নয় ভূমিকম্পনের মতাে আকাশ কম্পন হয়ে সব ভেঙ্গে নীচে পরে যেত।
Syed Iqbal- শিল্পী না লেখক বোঝা মুস্কিল। শয়ে-শয়ে ছবির প্রচ্ছদ, ছোটদের বইয়ের অলঙ্করণ, নাটকে অসংখ্য পোষ্টার ডিজাইন, কার্টুন করে চলেছেন দেশে বিদেশে। বাংলাদেশ জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র দিয়েছে প্রচ্ছদ ডিজাইন ও অলঙ্করণের জন্য শ্রেষ্ঠ পুরস্কার দুইবার। বিশ্বময় নামী শহরগুলোতে ব্যক্তিগত ও গ্যালারিতে সংগৃহীত আছে তার পেইন্টিংস। অনলাইন পত্রিকা দি বেঙ্গলি চাইমসে নিয়মিত তিন বছর কার্টুন আঁকছেন। দেশের স্বনামধন্য বিজ্ঞাপনী সংস্থা ‘বিটপী’তে জীবনের বেশিরভাগ সময় ছিলেন সিনিয়র আর্ট ডিরেক্টর। এতকিছু মেলালে তাঁকে হয়তো শিল্পী বলা যায়। অন্যদিকে ১৭টি গল্প-উপন্যাস ও ছোটদের জন্য লেখা তাঁর প্রকাশিত। কুশল আর মৃত্যুবুড়ো কিশোরদের জন্য এক মাইলফলক সৃষ্টি। খাগড়াছড়ির কংজুরী পেয়েছে অগ্রণী ব্যাংক ও শিশু একাডেমীর পুরস্কার। বঙ্গবন্ধু হত্যা নিয়ে তিনিই প্রথম গল্প লেখেন ‘একদিন বঙ্গবন্ধু’। ভালোবাসার পাঁচ পা, ঘুমচ্ছো লস আঞ্জেলিস, বিন্দুময় টরনোট, অগ্নীলার বাবার হাড্ডিগুড্ডি, পক্ষীজীবন, আমিতো যীশু নই তাঁর বহুল মুদ্রিত বই। দেশে থাকেন কিংবা বিদেশে তিনি লেখেন, তাঁকে হয়তো লেখাক বলা যায়। ২০১২ বইমেলায় তাঁর তিনটি উপন্যাস তেপান্তরে তিন বৃক্ষ, এসেছিলে তবু আসনি, লাভ এন ওয়াই ও গ্রল্পগ্রন্থ প্রেম চায় জিবরানের ডানা প্রকাশিত হয়েছে।