ঢাকনা খুলে শেষবারের মত খুন্তি দিয়ে খিচুড়িটা উল্টে দিল ফিরোজ। চাল ঠিকমতই ফুটেছে আর গন্ধটাও ভাল হয়েছে অন্যদিনের চেয়ে। অনেক দেখে শুনে একনম্বর কালজিরা চাল কিনলেও তার মনে ভয় ছিল, দোকানী আসলটা দিয়েছে কি না? এখন এর চেহারা দেখে মনে হচ্ছে ঠিকই আছে। চোখে মুখে পরিতৃপ্তির একটা ভাব ফুটে উঠল তার। সেই কলেজ জীবন থেকেই নিজের জন্য ভুনা খিচুড়ি রান্না করতে অভ্যস্ত সে। কিন্তু আজকের রান্নাটা একটু ব্যতিক্রম। আজ মনে হচ্ছে এসএসসি পরীক্ষার মত। টানা দশ বছর পড়াশোনা করলেও জীবনের প্রথম পাবলিক পরীক্ষায় সবাই মনে মনে যেমন ভয় পায়, ঠিক তেমনভাবেই টানা সাত বছরের খিচুড়ি রান্নার অভিজ্ঞতা থাকা সত্ত্বেও ভয় পেয়েছে আজকে রান্না করতে গিয়ে। কারণ বিশেষ কাউকে বিশেষভাবে আপ্যায়নের জন্য তাকে এটা করতে হয়েছে আজ। -চেহারা দেখে মনে হচ্ছে পাস মার্ক অন্তত পাব। খিচুড়িটার দিকে গভীরভাবে তাকিয়ে মনে মনে একথা বলল সে। খিচুড়িটা নামিয়ে দুটো ডিম একসাথে ফেটে কড়া করে ভেজে নিল। স্টোভের আগুনটা নিভিয়ে একপাশে টেনে নিল। সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে নিল যদি আবার কেরোসিনের গন্ধ পায় সেই ভয়ে। পুরনো সব কাজই আজ সে করছে, তবে একটু বেশি যত্ন নিয়ে।
Parvin Akter- জন্ম ২০ ফেব্রুয়ারি নরসিংদী জেলার পলাশে। পিতা আব্দুর রশিদ, মাতা রেজিয়া বেগম। সমাজবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর শেষে আইনে পড়াশোনা। অতঃপর শিক্ষায় স্নাতকোত্তরসহ এমফিল করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। বর্তমানে আইন পেশার পাশাপাশি একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করছেন। তাঁর প্রথম প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ স্বপ্ন খোঁজার বাতিঘর এবং প্রথম উপন্যাস নীল টিপ। এ ছাড়া পত্রপত্রিকায় গল্পসহ সমাজ সচেতনতামূলক, আইন বিষয়ক, নারী উন্নয়ন এবং রাজনীতিমনস্ক লেখালেখি করে থাকেন।