কাজী নজরুল ইসলাম বইটি নজরুলের সংক্ষিপ্ত জীবনী। তিনি আমাদের জাতীয় কবি। আমাদের জাতীয় জীবনের অগ্রপথিক। বাংলাদেশের স্বাধীনতার সময় তাঁর বিদ্রোহাত্মক কবিতা ও গান মুক্তিযোদ্ধাদের অগ্নিস্ফুলিঙ্গের ন্যায় সংগ্রামে অংশগ্রহণে উদ্দীপ্ত করত। ভারতবর্ষের স্বাধীনতা সংগ্রামে তিনি ছিলেন একজন সৈনিক কবি। বিরুদ্ধ পরিবেশের সাথে লড়াই করে বড় হয়েছিলেন তিনি এবং প্রথম বিশ্বযুদ্ধে ব্রিটিশ সেনাবাহিনীতে তিন বছর চাকরি করে ফেরার পর দেশমাতৃকার সেবায় নিজেকে আজীবন নিয়োজিত করেছিলেন। সাহিত্যজীবনের শুরুতেই কলকাতা শহরে ১৯২০ সালে ভারতবর্ষের প্রথম যুগের কমিউনিস্ট নেতা কমরেড মুজফফর আহমদের সান্নিধ্য লাভ করেন তিনি। নজরুল জীবনে মুজফ্ফর আহমদের সান্নিধ্য তাঁর সাহিত্যজীবনের ভিত্তি স্থাপনের পথকে সুগম করে তোলে। সাহিত্যজীবনের শুরুতে ১৯২১ সালে 'বিদ্রোহী' কবিতা রচনার মাধ্যমে নজরুল ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেন। ১৯২২ সালে 'আনন্দময়ীর আগমনে' কবিতাটি নজরুলের নিজের সম্পাদিত পত্রিকা 'ধূমকেতু'তে ছাপা হবার পর তিনি ব্রিটিশ শাসকের চক্ষুশূল হন এবং এক বছর জেল খাটেন। বাংলা সাহিত্যে তিনিই প্রথম একটি কবিতা রচনার অপরাধে এক বছর জেল খাটেন। কবিতাটির জন্য বিচারকের সামনে নজরুল যে জবানবন্দিটি পাঠ করেন তা 'রাজবন্দীর জবানবন্দী' নামে খ্যাত। নজরুল-জীবনের এই তিনটি প্রধান এবং গুরুত্বপূর্ণ রচনা বইটিতে সংযুক্ত করা হয়েছে। নজরুল-জীবনের গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলো ইতিহাসের ধারাবাহিকতায় এতে তুলে ধরা হয়েছে। নজরুলের চেতনা বিকাশের ক্ষেত্রে ভারতবর্ষের সাংস্কৃতিক আন্দোলন এবং রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট যে গুস্তানপর্ণ ভূমিকা পালন করে তা সংক্ষিপ্তভাবে এতে স্থান পেয়েছে।
জন্ম ১৯৭৫ কুড়িগ্রাম জেলার রৌমারী থানার ঝগড়ার চর গ্রামে। পিতা মোজাফফর হোসেন, মাতা গোলমজিদা বেগম। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২০০৯ সালে ‘নজরুলের জীবনবোধ ও চিন্তাধারা’ বিষয়ে পিএইচ.ডি ডিগ্রি লাভ করেন। স্কুলজীবন থেকে প্রগতিশীল রাজনীতির সক্রিয়কর্মী। চিন্তাশীল সংগঠন ‘স্বদেশ চিন্তা সঙ্ঘের’ সাথে ১৯৯৮ থেকে যুক্ত। পেশাগত জীবনে প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান, কলেজ শিক্ষক এবং দৈনিক পত্রিকার সহ-সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন। বর্তমানে উত্তরা ইউনিভার্সিটিতে বাংলা বিভাগে শিক্ষকতা করছেন।