কাদের মাঝিকে চেনে না এমন মানুষ দশগ্রামে নাই। বুড়ো-খুড়ো-গুড়ো সবাই এক নামেই চেনে তাকে। আহা, আমি যদি কখনো কাদের মাঝি হতে পারতুম! ছোটবেলায় তিনি ছিলেন আমার প্রথম আইডল। সারা দিন কত যে অচেনা মানুষের সঙ্গে তিনি কথা বলেন! কত যে অজানা বিষয়ে তিনি খোঁজখবর নেন! কত রাজ্যের খবর যে থাকে আমাদের কাদের মাঝির কাছে। আমাদের অঞ্চলে তিনি একাই আসলে একটা জ্যান্ত রেডিও স্টেশন। ভোররাতে এই স্টেশন চালু হয়। চলে রাত দশটা-এগারোটা পর্যন্ত। মাঝখানে দুপুরবেলায় এই রেডিও স্টেশনের একবার কেবল ঘোষক বদল হয়। তখন কাদের মাঝি হয়তো দুপুরের নাওয়া-খাওয়ার জন্য বাড়ি যান। তার পরিবর্তে তখন খেয়ানায়ের হাল ধরে কাদের মাঝির একমাত্র ছেলে ঝড়ু। ঝড়ু বয়সে একটু বড় হলেও আমাদের সঙ্গে খাতির তার খুব বেশি। সেই খাতিরের অছিলায় আমরা ইশকুল ফাঁকি দিয়ে ঝড়ুর সাথে কাদের মাঝির খেয়ানায়ে বিনা পয়সায় গাং পারাই। খামাখা কতবার যে আমরা দুপুরের ইশকুল ফাঁকির ওই সময়ে মহানন্দে বলেশ্বরের এপাড়-ওপাড় যাই, তার কোনো হিসাব কোথাও লেখা নেই। কখনো সামন্তগাতীর ওপারে। কখনো বরইবুনিয়ার ওপারে। কখনো বানিয়ারীর এপারে। কখনো যদি কোনো পাড়ে