"নারী এক আহ্লাদী বিড়াল" বইয়ের ফ্ল্যাপের লেখা: ব্রিটিশ উপনিবেশিক শাসনতন্ত্র থেকে আরেক উপনিবেশ পাকিস্তানের কবলে পড়া বাংলার স্বাধীনতার সমসাময়িক এই উপন্যাসের ঘটনাকে কেন্দ্র করেই লেখা। প্রথাবিরােধী লেখক হুমায়ুন আজাদ বলেছেন, নারীর কথা নারীর মুখ থেকেই শােনা উচিত। তাহলে প্রকৃত সত্য বেরিয়ে আসে। যে সত্য আমরা জানতে পারি না, সেই সত্যই শায়লা শহীদ -এর নারীবাদী দৃষ্টিকোণ থেকে আমাদের উপন্যাসের বিষয়টি উপলব্ধি করতে সাহায্য করে। মধুমিতা, কনকচাপা ও সায়রা বানু- এ তিনটি নারী চরিত্রের বাস্তবতা যেন আমাদের সমাজের প্রতিটি নারীর মনের কথাই বলে, তারা মানবিক সংবেদনশীল ও দায়িত্বশীল। তবুও অঘটন ঘটে কেন? কিভাবে তার নৈতিক বিরােধিতা করে এই যুদ্ধময় সমাজে টিকে থাকতে হয়, তার চেষ্টা আমরা দেখতে পাই। পুরুষতন্ত্রের এই পাতানাে সমাজব্যবস্থায় বাস্তব ভাববাদীরাই এই উপন্যাসে কুসংস্কার ও প্রথার বিরুদ্ধে ছােট ছােট অথচ দু'একটি কলমের টানে, লেখকের একটা সমাধানের অবস্থানে সমাজকে সমতার সমাজে যাওয়ার ইঙ্গিত আমরা পাই। পাই অন্ধকার থেকে আলাের পথে যাওয়ার ইঙ্গিত । নারী যে অপরাধী পুরুষকে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখে, উদারতার পরিচয় দিতে পারে তাও উপন্যাসটিতে দেখতে পাই। মােটকথা নারী-পুরুষের জৈবিক চাহিদার যে একটা নৈতিক দিক আছে, তাকে থােড়াই কেয়ার করে পুরুষ। নারীকে যে ভােগের সামগ্রী হিসেবেই এ সমাজ দেখে, লম্পট পুরুষের ভণ্ডামিও তার মুখােশ উন্মােচিত হয়েছে। এ সমাজব্যবস্থা থেকে উত্তরণের আভাসও আছে প্রগতিবাদী প্রতিবাদী শায়লা শহীদ -এর লেখা ‘নারী এক আহলাদি বিড়াল’ উপন্যাসটিতে।