ভীম : মাত্র নয় বছর বয়সের সাহসী, পালোয়ান, বুদ্ধিমান, দুর্দান্ত এক মজাদার ছেলে। পেটুক ভীম খেতে বড়ো ভালোবাসে, বিশেষ করে লাড্ডু আর কলা। নিজের ওই প্রিয় লাড্ডু খেতে পেলে গায়ের জোর যেন তার তখন আরও বেড়ে যায়। নেহাত বাচ্চা ছেলে হলেও গায়ের জোরে সে যে-কোনো বড়ো মানুষকে হার মানায়। অসহায় গরিব মানুষদের বাঁচাবার জন্যে সব সময় সে একপায়ে খাড়া। চুটকি : সাত বছরের সরল, চালাক-চতুর একটা চনমনে মেয়ে। ভীমের সবচেয়ে প্রিয় বন্ধু সে। ভীমের রোমহর্ষক কাজকর্ম আর প্রত্যেকটি ভালো কাজের সঙ্গী, তাকে সাহায্যও করে প্রাণপণ। মায়ের মিষ্টির দোকান থেকে চুরি করে লাড্ডুও খাওয়ায় সে ভীমকে। খোলামেলা এই মিষ্টি স্বভাবের মেয়েকে তার দয়ালু স্বভাবের জন্যে সকলেই খুব ভালোবাসে। রাজু : চার বছরের ভারী মিষ্টি একটা বাচ্চা ছেলে। সব সময় ভীমের লেজুড় হয়ে থাকতে চায়। তার চোখে সমস্ত ব্যাপারে ভীমই হল আদর্শ। ওইটুকু ছেলে হিসেবে একটু বেশিই সাহসী আর শক্তপোক্ত (একেবারে অর্জুনের মতো)। কালিয়া পালোয়ানকে ভয় পায় না, সে ছাড়া বোধহয় গোটা গাঁয়ে আর এমন একটা বাচ্চাও নেই। রাজুর বাবা রাজার সৈন্যদলের সেপাই, সে স্বপ্ন দেখে একদিন সে সেনাপতি হবে। যুদ্ধ যুদ্ধ খেলা খেলতে রাজু ভারী ভালোবাসে যেখানে ভীম হবে মহারাজ, আর সে হবে তার সেনাপতি । জম্মু : ভীমের বন্ধু এক পোষা হনুমান। সে কথা বলতে পারে। ভীমকে অনেক সাহায্যও করে, বিশেষ করে যখন তারা জঙ্গলে থাকে। ভীমের সব কাজেই তার সায় আছে, ভীমের গা-ছমছমে কাণ্ডকারখানায় সে সব সময় সঙ্গে সঙ্গে থাকে। বুদ্ধিমান এই রগুড়ে হনুমান মজাদার কাজকর্ম করতেও ওস্তাদ। বুদ্ধির খেলায় ধলু, ভোলু আর কালিয়াকে নাকাল করায় তার জুড়ি নেই। বাচ্চারা তাকে ভারী ভালোবাসে, কারণ সেও তাদের সঙ্গে খুব মজা করে। কালিয়া : দশ বছরের হোঁতকা ছেলে, কিন্তু গায়ে খুব জোর। ভীমকে তার পালোয়ানির জন্যে সকলে খুব ভালোবাসে, এতে হিংসেয় জ্বলে মরে সে। ভীম যে মোটেই ভালো নয় এটা দেখাতে, আর তাকে বিপদে ফেলতে খুবই চেষ্টা করে সে। নিজের বীরত্ব জাহির করবার জন্যে নিজের চেয়ে অনেক দুবলা-পাতলা ছেলেপিলেই বেছে নেয় সে। তার দুই হাবাগোবা শাগরেদ হল ধলু আর ভোলু, তাকে সাহায্য করতে গিয়ে বেশিরভাগ কাজই গুবলেট করে দেয় তারা। ধলু আর ভোলু : কালিয়া পালোয়ানের এই দুই শাগরেদ বেজায় ভীতু। এই দুই যমজ ভাই যে শুধু দেখতে একরকম তাই নয়, সাজপোশাক আর চালচলনেও এক্কেবারে এক। হাঁদাভোঁদা এই ভাইদুটি রকমারি সব বোকা বোকা পরিস্থিতির সৃষ্টি করে। চুটকি লাড্ডু খাইয়ে কখনো কখনো তাদের হাত করে নেয়, তখন এমনকি কালিয়ারও বিপক্ষে চলে যায়। ওদের বহু ধমকেও সিধে করতে পারেনি কালিয়া।
বাংলা প্রবন্ধসাহিত্য এবং কথা সাহিত্যের পাঠকদের কাছে Hiren Cottopodhay (জন্ম, ১৯৪৪) নামটি অপরিচিত নয়। কৃতী অধ্যাপক, নিষ্ঠ প্রাবন্ধিক এবং বিশিষ্ট সাহিত্যিক হিসাবে লব্ধপ্রতিষ্ঠ এই মানুষটি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পি-এইচ.ডি। বাংলা সমালোচনা-সাহিত্যে জগদীশ গুপ্ত বিষয়ে প্রথম পূর্ণাঙ্গ গ্রন্থ এবং সাহিত্য-অকাদেমির মনোগ্রাফ তাঁরই রচিত। এছাড়াও সাহিত্য প্রকরণ’, এসেছে রবির কর’, ‘বাংলা উপন্যাসের শিল্পীরীতি’, ‘বাংলা ভাষাতত্ত্ব, ‘শাক্ত পদাবলীর রূপরেখা’ ইত্যাদি অনেক মূল্যবান ও সুপরিচিত প্রবন্ধ-গ্রন্থ তিনি লিখেছেন। ‘দেশ’ এবং অন্যান্য কিছু পত্রিকার নিয়মিত গ্রন্থ-সমালোচক। কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজের খ্যাতিমান এই অধ্যাপক সৃষ্টিশীল সাহিত্যস্রষ্টা হিসাবেও প্রথিতযশা। আকাশবাণী ও দুরদর্শন থেকে বহু নাটক সম্প্রচারিত হয়েছে। ছোটগল্প, উপন্যাস ও নাটকের বেশ কিছু প্রকাশিত গ্রন্থ আছে। বর্তমানে বিভিন্ন প্রথম শ্রেণির পত্রিকায় নিয়মিত বড়োদের ও ছোটোদের গল্প লেখেন। শিশুসাহিত্যে বাংলা আকাদেমি সহ অনেক পুরস্কারে অভিনন্দিত।