"রক্ষীবাহিনীর অজানা অধ্যায়" বইয়ের ভূমিকার লেখা: ‘রক্ষীবাহিনীর অজানা অধ্যায়’ লেখাটি ১০ পর্বে প্রকাশিত হয় ‘বাংলাদেশ প্রতিদিন’-এ। লেখাটির পেছনে যাদের উদ্যোগ, সহযােগিতা, উপদেশ ও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে, তাদের সবাইকে আমি আন্তরিকভাবে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। আমি বিশেষভাবে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি প্রথম আলাের সম্পাদক বন্ধুবর মতিউর রহমান, একই কাগজের সহযােগী সম্পাদক ও কবি সােহরাব হাসান এবং বাংলাদেশ প্রতিদিনের সম্পাদক স্নেহাস্পদ নঈম নিজামকে। তাদের প্রেরণা ও উৎসাহ না পেলে আমার পক্ষে হয়তাে লেখাটি সম্ভব হতাে না। এ ছাড়া কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি ছােট ভাই আবদুর রহিমের প্রতি, যাকে জনাব সােহরাব হাসান পাঠিয়েছিলেন লেখার ব্যাপারে আমাকে সাহায্য করতে। লেখাটি বই আকারে প্রকাশের ব্যাপারে আমার তেমন আগ্রহ ছিল না। কারণ এটি কোনাে বই হিসেবে আমি লিখিনি। রক্ষীবাহিনী সৃষ্টির পটভূমি, কার্যক্রম ও বিশেষভাবে ৭৫-এর ১৫ আগস্টে রক্ষীবাহিনীর ভূমিকা সম্পর্কে অনেকের যে ভুল বা অস্পষ্ট ধারণা ছিল, বাস্তবতার নিরিখে তার একটি সঠিক চিত্র দেশের মানুষের সামনে হাজির করার ঐতিহাসিক দায়বদ্ধতা থেকে উদ্যোগ গ্রহণ করি । বিষয়গুলাে সংক্ষেপে উত্থাপন করার ইচ্ছা থাকায় বইটির কলেবর অনেক ছােট হয়, তাই এটি বই আকারে প্রকাশের ব্যাপারে দ্বিধান্বিত ছিলাম। তবুও স্নেহাস্পদ নঈম নিজামের বিশেষ আগ্রহে লেখাটি বই আকারে প্রকাশের এ প্রয়াস।
কর্নেল সরােয়ার হােসেন মােল্লা (অব.) প্রাক্তন সচিব ও রাষ্ট্রদূত জন্ম : ২ ফেব্রুয়ারি, ১৯৪৬। শিক্ষা : মাধ্যমিক, টিএন একাডেমি, দত্তপাড়া, শিবচর উপজেলা, মাদারীপুর। উচ্চ মাধ্যমিক ও স্নাতক : নাজিমুদ্দিন কলেজ, মাদারীপুর। ১৯৬৭ সালে নাজিমুদ্দিন কলেজ ছাত্র সংসদের সহসভাপতি। ঢাকা সেন্ট্রাল ল' কলেজে অধ্যয়নকালে ১৯৬৯ সালের গণআন্দোলনে অংশগ্রহণ। ১৯৭০ সালের নির্বাচনী প্রচারণায় সক্রিয় অংশগ্রহণ। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতাযুদ্ধে বৃহত্তর মাদারীপুর জেলার (মাদারীপুর ও শরীয়তপুর) মুজিব বাহিনীর প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন শেষে ১৯৭২ সালের ৩০ জানুয়ারি ঢাকার পল্টন ময়দানে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর কাছে অস্ত্র সমর্পণ করেন। ১৯৭২ সালের ২ ফেব্রুয়ারি জাতীয় মিলিশিয়া, পরবর্তী সময়ে জাতীয় রক্ষীবাহিনীর উপ-পরিচালক হিসেবে সরকারি চাকরিতে যােগদান করেন। যেহেতু রক্ষীবাহিনীর উপ-পরিচালকের পদটি সেনাবাহিনীর লে. কর্নেলের সমমর্যাদার ছিল, তাই ১৯৭৫ সালের মর্মান্তিক ঘটনার পর তাঁকে সরাসরি লে. কর্নেল পদে নিয়ােগ প্রদান করা হয়। সেনাবাহিনীতে কর্মরত থাকার সময় ১৯৭৮ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সেনাবাহিনীর সদর দফতরে অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাডজুট্যান্ট জেনারেল হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। অক্টোবরে তাঁকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে প্রেষণে নিয়ােগ প্রদান করা হয়। পরবর্তী সময়ে তাঁকে পূর্ণাঙ্গ কর্নেল হিসেবে পদোন্নতি দেওয়া হয় এবং স্থায়ীভাবে তার চাকরি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আত্তীকরণ করা হয়। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পরিচালক, মহাপরিচালক, অতিরিক্ত পররাষ্ট্রসচিব, রাষ্ট্রদূত এ-গ্রেড/সচিবের দায়িত্ব পালন করেন এবং বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশ দূতাবাসে প্রথম সচিব, কাউন্সিলর, মিনিস্টার এবং ইরাক ও ভিয়েতনামে রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালন করেন। সর্বশেষ ভিয়েতনামে রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালন শেষে ১৯৯৬ সালের জুলাই মাসে সরকারি চাকরি থেকে অবসর গ্রহণ করেন।