চাবিকাঠির খোঁজে: নতুন আলোকে জীবনানন্দের ‘বনলতা সেন’ (সিটি-আনন্দ আলো সাহিত্য পুরস্কারপ্রাপ্ত) বইয়ের ফ্ল্যাপের কথাঃ মৃত্যুর কয়েক মাস আগে জীবনানন্দ দুঃখ করে লিখেছিলেন, তাঁর কবিতার যেসব ব্যাখ্যা দেওয়া হচ্ছে, তা ‘কোনো কোনো কবিতার বা কাব্যের কোনো কোনো অধ্যায় সম্বন্ধে খাটে। সমগ্র কবিতার বিশ্লেষণ হিসাবে নয়’। বাংলা সাহিত্যের সমালোচকেরা ষাট বছর ধরে কবির এ বক্তব্যকে সম্পূর্ণ অগ্রাহ্য করেছেন। তাঁর কবিতা সম্পর্কে অনুরাগীরা কয়েকটি ‘মিথ’ ছড়িয়ে দিয়েছেন। তাঁদের মতে, তাঁর রচনায় তত্ত্ব্ব নেই, চিন্তাশীলতা নেই; তাঁর কবিতা সবচেয়ে কম আধ্যাত্মিক ও সবচেয়ে বেশি শারীরিক। তাঁর কবিতা চিত্রময় ও তাঁর অধিকাংশ কবিতা হলো সুররিয়ালিস্ট ও ইম্পে্রশনিস্ট কবিতা। জীবনানন্দের কবিতার মূল্যায়নের সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো, তাঁর অধিকাংশ কবিতার সঠিক ব্যাখ্যা করা হয়নি। কারণ, জীবনানন্দের অধিকাংশ পাঠকই তাঁর কবিতার চাবিকাঠি খুঁজে পাননি। এই বইয়ে জীবনানন্দের বনলতা সেন কাব্যগ্রন্েথর কবিতাগুলোর নিবিড় বিশ্লেষণ করে দেখানো হয়েছে, তাঁর কবিতা উপলব্ধির জন্য অনেক ক্ষেত্রে চাবিকাঠির প্রয়োজন রয়েছে। এই বিশ্লেষণ থেকে আরও প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, জীবনানন্দের কবিতা নিছক উপমার সংকলন নয়; এই সব কবিতায় দর্শন সম্পর্কে তাঁর অভিমত ব্যক্ত হয়েছে। জীবনানন্দ-চর্চার ক্ষেত্রে এ বই একটি ব্যতিক্রমধর্মী রচনা। এ গ্রন্থ প্রমাণ করেছে, জীবনানন্দের কবিতা এখনো অনাবিষ্কৃত মহাদেশের মতো, নতুন করে তাকে আবিষ্কারের প্রয়োজন রয়েছে। চাবিকাঠির খোঁজে: নতুন আলোকে জীবনানন্দের ‘বনলতা সেন’ (সিটি-আনন্দ আলো সাহিত্য পুরস্কারপ্রাপ্ত) বইয়ের শেষের কথাঃ জীবনানন্দ সম্পর্কে একজন সমালোচক মন্তব্য করেছেন: ‘পৌষের চন্দ্রালোকিত মধ্যরাত্রির প্রকৃতির মতো তাঁর কাব্য কুহেলি কুহকে আচ্ছন্ন।’ অন্যদিকে আরেকজন সমালোচক বলেছেন, তাঁর বক্তব্য বুঝতে চাবিকাঠির প্রয়োজন। বাস্তবে তাঁর কবিতার চাবিকাঠির অন্বেষণের চেয়ে অপব্যাখ্যাই অনেক বেশি করা হয়েছে। এ গ্রন্েথ জীবনানন্দের বনলতা সেন কাব্যগ্রন্েথর চাবিকাঠিভিত্তিক বিশ্লেষণ করে দেখানো হয়েছে যে চাবিকাঠি ছাড়া তাঁর অনেক কবিতার সম্যক উপলব্ধি সম্ভব নয়। তাঁর কবিতা শুধু উপমা ও চিত্রময় শব্দের সমাহার নয়, দর্শন সম্পর্কেও তাঁর অনেক মূল্যবান বক্তব্য রয়েছে।
Title
চাবিকাঠির খোঁজে: নতুন আলোকে জীবনানন্দের ‘বনলতা সেন’
‘৭১ পূর্ববর্তী সময়ে তিনি সর্বদাই অন্যায়ের বিরুদ্ধে উচ্চকণ্ঠ ছিলেন, ছিলেন বঙ্গবন্ধুর অসহযোগের সমর্থক। ২৫ মার্চের কালরাতের পর যখন অস্থায়ী সরকার গঠিত হয়নি, তখনই নিজ এলাকা হবিগঞ্জে পুলিশের অস্ত্র সাধারণ মানুষের মধ্যে বিলিয়ে দিয়ে যুদ্ধ করতে অনুপ্রাণিত করেন তিনি, নিজ হাতে তৈরি করেন অস্ত্র উন্মুক্তকরণের সরকারি লিখিত অনুমতি। অস্থায়ী সরকারের জন্য তহবিল গড়তে তিনি বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে তিন কোটি টাকা ট্রাকে করে আগরতলা পৌঁছে দেন। বাঙালির চেতনা ও অহংকারের মুক্তিযুদ্ধে অসম সাহসিকতার সাথে কর্তব্য পালন করা এই মানুষটির নাম আকবর আলি খান। আকবর আলি খানের জন্ম ১৯৪৪ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে। নিজ গ্রামেই স্কুলজীবন শেষ করে ঢাকা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা গ্রহণ করেন। এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করে চাকরিজীবনে প্রবেশ করেন। মাঝে এক বছরের জন্য লাহোরের সিভিল সার্ভিস অ্যাকাডেমিতে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। এরপর এস.ডি.ও হিসেবে তার কর্মস্থল হয় হবিগঞ্জে। মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী বিভিন্ন সময়ে তিনি শিক্ষা মন্ত্রণালয় সহ পল্লী উন্নয়ন বোর্ড, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ সরকারী কর্মকমিশন সচিবালয়ে কাজ করেন। মাঝে কানাডার কুইন্স বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে মাস্টার্স এবং পি.এইচ.ডি করে আসেন। আকবর আলি খান এর বই সমূহ বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও ঐতিহাসিক উত্থান নিয়ে প্রামাণ্য দলিল। এছাড়াও, আকবর আলি খানের বই বাংলাদেশের সামাজিক পরিবর্তন এবং এদেশে ইসলামের বিকাশ নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ গবেষণালব্ধ দলিল। এশিয়াটিক সোসাইটি থেকে প্রকাশিত তার বই ‘হিস্ট্রি অব বাংলাদেশ’ তার সেরা রচনা। আকবর আলি খান এর বই সমগ্রতে আরো আছে ‘পরার্থপরতার অর্থনীতি’, ‘বাংলায় ইসলাম প্রচারে সাফল্য’, ‘বাংলাদেশের সত্তার অন্বেষা’, ‘ডিসকভারি অব বাংলাদেশ’ ইত্যাদি বই।