গত শতকের আটের দশকের মধ্যভাগে বাংলাদেশের সাহিত্যে একদল তরুণ-তুর্কি আবির্ভূত হন, যাঁরা সজ্ঞান-সচেতনভাবে নতুন বোধ ও ভাষা সৃজনে মগ্ন হন। অন্যদিকে তাঁদের পঠন-গ্রহণের ক্ষেত্রও ইউরোকেন্দ্রিকতার বাইরে লাতিন আমেরিকা ও আফ্রিকার দিকে বিস্তৃত হয়। এগুলো তারা কেবল পাঠই করেননি, অনেকেই অনুবাদের মতো শ্রমঘন কাজেও স্বনিয়োজিত হন। রাজু আলাউদ্দিন তাঁদের মধ্যে শীর্ষ একজন। আর লাতিন আমেরিকার সাহিত্যের অনুবাদ-মূল্যায়ন, বিশেষত বোর্হেস-চর্চায় তাঁর প্যাশন তাঁকে এ দেশে পথিকৃৎতুল্য করে তুলেছে। এর বাইরে অনুবাদের ক্ষেত্রে তাঁর বিশেষ আগ্রহের জায়গা বিশ্বখ্যাত লেখক-দার্শনিক-চিন্তকদের সাক্ষাৎকার। গত তিন দশকে তিনি সব মহাদেশের বহু বিশ্বমানবের সাক্ষাৎকার অনুবাদ করেছেন। এতকাল এগুলো ছড়িয়ে-ছিটিয়ে ছিল। অথচ বর্তমান বিশ্ববাস্তবতায় এগুলোর গুরুত্ব অনেক। কেননা এসবে রয়েছে বিশ্বমনীষার উক্তি ও উপলব্ধির নির্যাস, যার নানামাত্রিক প্রয়োজন কখনো ফুরোবে না। আর এই সব সাক্ষাৎকারের সম্মিলিত রূপ এই অনূদিত কথাসমগ্র। ইতোপূর্বে বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত এই কথামালার বেশ কটি পাঠ করার সৌভাগ্য ঘটেছিল। তার ওপর ভর করে নিঃসংকোচে বলতে পারি, রাজু আলাউদ্দিনের বিষয় নির্বাচন ও অনুবাদের ভাষা উভয়ই স্বাদু ও স্বাস্থ্যকর। অনেক সময়ই আমরা ভুলে যাই যে কোনো অনুবাদ পড়ছি। বরং এগুলোর ভেতর দিয়ে বিচিত্র ও বহুমাত্রিক মনীষার চিন্তা জ্ঞান দর্শন ও বোধের ভূগোলে নিজের অজান্তেই আমরা ভ্রমণ করতে থাকি, স্নাত হই এবং স্নাতক হয়ে উঠি… সৈকত হাবিবকবি
ন্যানো কাব্যতত্ত্বের জনক কবি, প্রাবন্ধিক ও অনুবাদক রাজু আলাউদ্দিনের জন্ম ১৯৬৫ সালে শরীয়তপুরে। লেখাপড়া এবং বেড়ে ওঠা ঢাকা শহরেই। কর্মজীবনের শুরু থেকেই সাংবাদিকতা পেশার সঙ্গে জড়িত। মাঝখানে বছর দশেকের জন্যে প্রবাসী হয়েছিলেন ভিন্ন পেশার সূত্রে। এখন আবার ঢাকায়। ইংরেজি এবং স্পানঞল ভাষা থেকে বিস্তর অনুবাদের পাশাপাশি দেশি ও বিদেশি সাহিত্য নিয়ে নিয়মিত লিখে যাচ্ছেন। এ পর্যন্ত তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা বিশ।