নদী একটি ছোট্ট নাম। অথচ কত গভীর, কত প্রশস্ত ব্যঞ্জনায় ছড়িয়ে আছে মানুষের জীবনে। মানুষের সঙ্গে তার কত সখ্য, আবার বৈরিতাও আছে। নদীর প্রবহমান ধারা মানুষের গতিশীল জীবনের সঙ্গে সদৃশ্যপূর্ণ। সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্নার এক অমরগাথা বুকে নিয়ে নদী নিরন্তর ছুটে যায় উৎস থেকে মোহনা অবধি। নদীর এই নিরন্তর ছুটে চলার সঙ্গে মানুষ নিবিড়ভাবে একাত্ম হয়। নদীর বুকে জাল ফেলে ভাগ্যান্বেষণে বসে থাকে জলের সন্তান-জেলেরা। জীবিকার তাগিদে এরা নদীর বিক্ষুব্ধ ঢেউয়ের সঙ্গে মিতালি পাতে। নদীর কথা বললেই ভেসে ওঠে বাংলাদেশের মুখ। নদী মানেই তো বাংলাদেশ। দেশজুড়ে জালের মতো ছড়িয়ে থাকা অসংখ্য নদী দেশের মাটিকে করেছে উর্বর। নৈসর্গিক সৌন্দর্যকে করেছে অসাধারণ। আর দুকূলের মানুষকে করেছে লড়াকু। নদী মেখলা আমাদের এই দেশ সত্যিই এক অনুপম সৌন্দর্যের স্বপ্নভূমি। নদীর বুকে আলো-ছায়া বিকেল, নব উদয়ের রক্তিম আভা, শ্রাবণের অসমান জলরেখা, মাঝির উদাস করা গান-বড়ই মনোহর। নদীর পলিদ্বীপে সোনা ফসল ফলায় মাটির সন্তান, কৃষকেরা। দুপাশের অবারিত সবুজ মাঠ, মাঝে মাঝে কৃষকপল্লী, জেলেপল্লী, দূরের বাঁশঝাড়-কয়েকটি তালগাছ অপরূপ নান্দনিক শোভামণ্ডিত। নদীর দু’তীরের নৈসর্গিক সৌন্দর্য কেমন রহস্যঘেরা, হৃদয়ছোঁয়া। এই গ্রন্থে লেখক মোকারম হোসেন নিপুণ দতায় আমাদের নদী-জীবনের এসব তথ্যবহুল বিচিত্র অভিজ্ঞতার কথাই শুনিয়েছেন
জন্ম মাতুলালয়ে, ৩০ অক্টোবর। বাবা : একেএম ফজলুল করিম, মা : মনোয়ারা বেগম। গ্রাম : লক্ষণপুর, পোস্ট : ভবানীজীবনপুর, উপজেলা : বেগমগঞ্জ, জেলা : নোয়াখালী। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গ্রন্থাগার বিজ্ঞানে ডিপ্লোমা। একযুগেরও বেশি সময় দৈনিক প্রথম আলোয় ‘প্রকৃতি’ কলামে লিখছেন। প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা ৩৮। উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ : বাংলাদেশের নদী, বর্ণমালায় বাংলাদেশ, বিশ্বের সেরা দর্শনীয় স্থান, বাংলাদেশের মেলা, ঘুরে আসি বাংলাদেশ, বাংলাদেশের ফুল ও ফল, জীবনের জন্য বৃক্ষ, বিপন্ন প্রজাতির খেরোখাতা, প্রকৃতি ও প্রাণসম্পদ (সম্পাদনা), বাংলার মুখ আমি দেখিয়াছি, ঋতুর রঙে ফুলের শোভা, আমাদের সবুজ বন্ধুরা, ভোরের ফুল সন্ধ্যার পাখিরা, আমাদের পার্ক ও উদ্যান, ছয় রঙের বাংলাদেশ, বাংলার শত ফুল, জীবনানন্দ দাশের রূপসী বাংলার পুষ্প-বৃক্ষ ইত্যাদি। পরিবেশসাহিত্যে বিশেষ অবদানের জন্য ২০০৩ সালে কাজী কাদের নওয়াজ স্বর্ণপদক, ১৪০৮ ও ১৪১০ সালে অগ্রণী ব্যাংক শিশুসাহিত্য পুরস্কার এবং ২০১১ সালে এম নুরুল কাদের শিশুসাহিত্য পুরস্কারে ভূষিত হন। নেশা ছবি তোলা ও ভ্রমণ।