এ্যান্টনি এ্যান্ড ক্লিওপেট্রা (১৬০৬-০৭) শেক্সপিয়ারের একটি অমর সৃষ্টি। সমালোচক এ. সি. ব্রাডলি এ নাটকটিকে গুণগত মানে শেক্সপিয়ারের সেরা চারটি ট্র্যাজেডি, যথাক্রমে হ্যামলেট, ওথেলো, কিং লিয়ার এবং ম্যাকবেথ- এর পর স্থান দিয়েছেন। যদিও এ নাটকের কোন চরিত্রই একজন হ্যামলেট বা ওথেলোর অতলস্পর্শী গভীরতায় পৌঁছাতে পারে না, কিন্তু ক্লিওপেট্রার চরিত্র চিত্রণের মধ্যে ব্রাডলি লক্ষ করেছেন যে যে সেরা সৃজনশীলতার মাধ্যমে হ্যামলেট চরিত্রটির সৃষ্টি হয়েছে, সে একই সৃজনমেধা দিয়ে ক্লিওপেট্রার চরিত্রটিও সৃষ্টি হয়েছে। তবে উল্লেখিত চারটি নাটকে চরিত্রের গভীরতার প্রয়োজনে স্বগতোক্তি বা সলিলকি বিরাটভাবে এসেছে, কিন্তু সে অর্থে এ্যান্টনি বা ক্লিওপেট্রা অর্ন্তদৃষ্টিসম্পন্ন চরিত্র নয়, ফলে স্বগতোক্তিরও ব্যবহার হয় নি। আরেকটি দিক থেকে এ নাটকটির সঙ্গে শেক্সপিয়ারের প্রথম জীবনে রচিত প্রেমের ট্র্যাজেডি রোমিও এ্যান্ড জুলিয়েট-এর ভাবগত মিল আছে। প্রেমিক-প্রেমিকা নিজেদের প্রেমকে সার্থক করার জন্য পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের বিরোধিতার সম্মুখীন হয়। প্রথম নাটকটিতে প্রেমিক যুগল নিতান্তই তরুণ, কিন্তু পরের নাটকটিতে এ্যান্টনির বয়স ৪৮ এবং ক্লিওপেট্রার বয়স ৩৮। এবং নাটকটির ইতিহাস সময়কাল খ্রিষ্টপূর্ব ৪০ সাল থেকে ৩০ সাল পর্যন্ত।
ড. মােহীত উল আলম (জ. ১৩ ডিসেম্বর ১৯৫২, চট্টগ্রাম) পেশায় ইংরেজি সাহিত্যের অধ্যাপক। বর্তমানে তিনি ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশ-এর কলা অনুষদের ডীন এবং ইংরেজি ও মানববিদ্যা বিভাগের প্রধান শিক্ষকতার পাশাপাশি তিনি আজীবন সাহিত্য চর্চা করে যাচ্ছেন। গল্প, কবিতা ও নাটক রচনার পাশাপাশি তিনি প্রবন্ধ ও কলাম নিয়মিত লেখেন। তাঁর গবেষণার বিষয় শেক্সপিয়ার, যার বেশ কিছু নাটক তিনি ইতিমধ্যে অনুবাদ করেছেন। এ ছাড়া সম্প্রতি তিনি উপন্যাস লিখতে শুরু করেছেন, এবং তিনটি উপন্যাস জাতীয় বইমেলা ২০১৩ উপলক্ষে প্রকাশ হবার অপেক্ষায়। সম্পাদনার ক্ষেত্রে তিনি একাধিক গ্রন্থ সম্পাদনা করেছেন, এবং ইউল্যাবের ইংরেজি বিভাগের জানাল ক্রসিংস সম্পাদনা করে যাচ্ছেন। তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা চব্বিশ, এবং ঝুলবারান্দায় মেঘ তার চতুর্থ কাব্যগ্রন্থ। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি ও তাঁর স্ত্রী আলিয়া সুরাইয়া খানম তাঁদের তিন পুত্র, দুই পুত্রবধূ ও এক নাতনি। সমভিব্যাহারে ঢাকায় জীবন যাপন করছেন ।।