সূর্যোদয়ের দেশ জাপান। জাপানে কথা উঠলেই ভেসে ওঠে মনের আয়না এর প্রাণপ্রাচুর্যপূর্ণ সমৃদ্ধ ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি। আর জাপানির সংস্কৃতির বলতে বোঝায় হাইকু, কাবুকি, নো, বনরাকু, ইকেবানা, চ্যানোয়ু, সামুরাই কিংবা শিন্টো ধর্ম বা জেন বৌদ্ধধর্ম। অর্থাৎ ধর্ম ও শিল্প-সাহিত্যÑগল্প, উপন্যাস, চিত্রশিল্প, চলচ্চিত্র, নাটক, সংগীত এমনিক ফুল সাজানো, চা পান কিংবা যুদ্ধবিদ্যা পর্যন্ত। আসলে জাপানের সংস্কৃতি বড়ই স্বকীয় বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত আর এসব তারই দৃষ্টান্তমাত্র। জাপানের সংস্কৃতির মধ্যে বিষয়বস্তু আর সৃষ্টিশীলতা পরিচয় দিতে গেলে অনেক বড় ক্যানভাস আমাদের সামনে হাজির হয়। আর এই ক্যানভাস তুলে ধরতেই যেন যশস্বী লেখক হাসনাত আবদুল হাই এবার রচনা করলেন জাপানি সংস্কৃতির নিয়ে এই বিশাল গ্রন্থখানি। গবেষণাধর্মী আমেজ পাওয়া যাবে এই গ্রন্থটিতে। জাপানের সংস্কৃতির সবকিছুই যে বইতে স্থান পেয়েছে তা-ও আবার নয়। তবুও নানা খামতি সত্ত্বেও যতটুকু তিনি কুশলতার সঙ্গে তুলে এনেছে তাও কম নয়। বাংলা ভাষায় জাপানের সংস্কৃতি নিয়ে এত বড় গ্রন্থ প্রায় দুর্লভই বলতে গেলে। সেদিক দিক দিয়ে গ্রন্থটির প্রশংসা প্রাপ্য। সংস্কৃতমনাদের কাছে গ্রন্থটি কদর পাওয়াটা দুরাশা নয়।
Hasnat Abdul Hye জন্ম ১৯৩৯ সালের সেপ্টেম্বরে, কলকাতায় । পৈত্রিক নিবাস ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা থানার সৈয়দাবাদ গ্রামে। স্কুল শিক্ষা কলকাতা, যশোর, ফরিদপুর শহরে। কলেজ শিক্ষা ঢাকায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়, লন্ডন স্কুল অব ইকনোমিকস এবং ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতি বিষয়ে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর শিক্ষা লাভের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগে শিক্ষকতা । ১৯৬৫ সালে সিভিল সার্ভিসে যোগদানের পর প্রাক্তন পাকিস্তান সরকার এবং পরবর্তীকালে বাংলাদেশ সরকারের অধীনে বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করেন এবং সচিব পদ থেকে অবসর গ্রহণ করেন। হাসনাত আবদুল হাই ছাত্র জীবন থেকে সাহিত্যচর্চা শুরু করেন। ১৯৫৮ সালে ছোটগল্প রচনার মাধ্যমে। ছোটগল্প, উপন্যাস, ভ্রমণ-কাহিনী, শিল্প ও সাহিত্য সমালোচনা এবং নাটক এই সব শাখায় স্বচ্ছন্দে বিচরণ করেছেন চার দশকের অধিককাল ।বাংলা এবং ইংরেজিতে একটি কবিতার বই লিখেছেন জাপানে প্ৰবাস জীবনে। প্ৰকাশিত ছোটগল্প গ্রন্থের সংখ্যা পাঁচ, উপন্যাস পঁচিশ এবং ভ্ৰমণ-কাহিনী ছয় । সাহিত্যে অবদানের জন্য পেয়েছেন অলক্ত পুরস্কার, মোহাম্মদ আকরম খাঁ বাংলা একাডেমী পুরস্কার এবং সাহিত্যে অবদানের জন্য তিনি ১৯৯৬ সালে ‘একুশে পদক’ লাভ করেন। তাঁর লেখা উপন্যাস সুলতান ডাবলিন আন্তর্জাতিক সাহিত্য পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়।