রেজিস্ট্রেশন আইন ও বিধিমালা (হার্ডকভার)

**রেজিস্ট্রেশন আইন ও বিধিমালা** হল একটি আইনি কাঠামো যা দলিল বা সম্পত্তির মালিকানার লেনদেন, স্থানান্তর, এবং অন্যান্য আইনগত দলিলের নিবন্ধনের নিয়ম ও পদ্ধতি নির্ধারণ করে। এই আইনের মূল উদ্দেশ্য হল বিভিন্ন আইনি দলিলের সঠিকভাবে রেজিস্ট্রেশন করা এবং তার মাধ্যমে দলিলের সঠিকতা, বৈধতা, এবং জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা।

### রেজিস্ট্রেশন আইন (The Registration Act, 1908): **রেজিস্ট্রেশন আইন, ১৯০৮** হল ভারতীয় আইনের অংশ, যা বর্তমানে বাংলাদেশেও প্রযোজ্য। এই আইন বিভিন্ন ধরনের দলিল, যেমন বিক্রয় দলিল, দানপত্র, উইল, বন্ধক, লিজ ইত্যাদির নিবন্ধনের পদ্ধতি ও নিয়মাবলী নির্ধারণ করে।

#### আইনের প্রধান দিকগুলো: 1. **দলিল নিবন্ধনের বাধ্যবাধকতা:** কিছু নির্দিষ্ট দলিল যেমন সম্পত্তি বিক্রয় দলিল, স্থাবর সম্পত্তির স্থানান্তরের দলিল ইত্যাদি নিবন্ধন করা বাধ্যতামূলক। নিবন্ধিত দলিল না হলে, সেই দলিল আইনত কার্যকর বা প্রমাণস্বরূপ গৃহীত হবে না।
2. **নিবন্ধনের স্থান:** দলিল নিবন্ধনের জন্য নির্দিষ্ট রেজিস্ট্রেশন অফিস রয়েছে। সাধারণত দলিলের সম্পত্তির অবস্থান অনুসারে বা দলিল সম্পাদনের স্থানের নির্ধারিত রেজিস্ট্রেশন অফিসে দলিল নিবন্ধন করতে হয়।
3. **নিবন্ধনের সময়সীমা:** দলিল সম্পাদনের তারিখ থেকে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে (সাধারণত ৪ মাস) দলিল নিবন্ধন করতে হয়। ব্যতিক্রমী ক্ষেত্রে এই সময়সীমা আদালতের আদেশে বাড়ানো যেতে পারে।
4. **দলিলের প্রকাশ্যতা:** রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নিবন্ধিত দলিলগুলো জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত থাকে, যা সম্পত্তি সংক্রান্ত তথ্যের সঠিকতা নিশ্চিত করতে সাহায্য করে।
5. **নিবন্ধনের প্রভাব:** নিবন্ধিত দলিলগুলি আইনত কার্যকর হিসেবে বিবেচিত হয় এবং আদালতে প্রমাণস্বরূপ গৃহীত হয়। নিবন্ধিত দলিলের মাধ্যমে দলিলের সত্যতা এবং সম্পত্তির মালিকানা নিশ্চিত করা যায়।
### রেজিস্ট্রেশন বিধিমালা:
রেজিস্ট্রেশন বিধিমালা রেজিস্ট্রেশন আইন অনুসারে দলিল নিবন্ধনের পদ্ধতি, ফর্ম, এবং প্রয়োজনীয় নথিপত্র নির্ধারণ করে। এতে দলিল নিবন্ধনের জন্য আবশ্যক ফি, স্ট্যাম্প শুল্ক, এবং অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতার নিয়মাবলী অন্তর্ভুক্ত থাকে।
#### কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিধিমালা:
1. **দলিল দাখিলের প্রক্রিয়া:** দলিল নিবন্ধনের জন্য প্রয়োজনীয় নথিপত্র এবং তথ্য জমা দিতে হয়। যেমন, দলিলের আসল কপি, স্ট্যাম্প শুল্ক পরিশোধের প্রমাণপত্র, দলিলকারীর পরিচয়পত্র ইত্যাদি।
2. **ফি ও শুল্ক:** নিবন্ধন ফি ও স্ট্যাম্প শুল্ক নির্দিষ্ট পরিমাণে পরিশোধ করতে হয়, যা সাধারণত সম্পত্তির মূল্য বা দলিলের প্রকৃতির উপর নির্ভর করে।
3. **নিবন্ধনকারী কর্মকর্তার কর্তৃত্ব:** নিবন্ধনকারী কর্মকর্তা দলিলের সঠিকতা যাচাই করে এবং প্রয়োজনীয়তা পূরণ হলে দলিল নিবন্ধন করে। তাদের কর্তব্য হল দলিলের সত্যতা নিশ্চিত করা এবং নিবন্ধনের প্রয়োজনীয় শর্ত পূরণ হয়েছে কিনা তা দেখা।
### রেজিস্ট্রেশন আইন ও বিধিমালার গুরুত্ব: রেজিস্ট্রেশন আইন ও বিধিমালা সম্পত্তি সংক্রান্ত লেনদেনের স্বচ্ছতা এবং সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সহায়ক। এটি সম্পত্তির মালিকানা নিশ্চিত করে, ভবিষ্যতে বিরোধ প্রতিরোধ করে, এবং আইনি প্রমাণের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।