এক সাত মাসের গর্ভবতী অনি, আজ সপ্তব্যঞ্জন দিয়ে সাধ খাবে। সে কারণে | চেতলার সেনগুপ্তদের বাড়িতে আজ খুশির হাওয়া। এক-এক করে নিমন্ত্রিতরা আসতে শুরু করলেও, মূল অনুষ্ঠান শুরু হতে এখনও অনেকটা সময় পড়ে আছে। সেই সুযোগে চলুন আমরা ফিরে যাই বছর পঞ্চাশেক পিছনে। কলকাতা তখন এখনকার মতো এত আধুনিক ছিল না। টালা থেকে টালিগঞ্জকেই কলকাতা হিসাবে ধরা হত। বাদবাকি অঞ্চলে লোকবসতি শুরু হলেও বেশিরভাগ জায়গা ছিল ঝোপ-জঙ্গলে ভরা। গ্যাসের আলোর বদলে রাস্তায় জ্বলত ইলেকট্রিকের বাল্ব। ঘোড়ার গাড়ির রমরমা কমছে, ক্রমশ বাড়ছে টানা রিকশার পরিমাণ। ট্রামের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলছে দোতলা বাস। সাদা-কালো সিনেমার সঙ্গে উত্তর কলকাতার থিয়েটার, চিৎপুরের যাত্রার খ্যাতি ছিল সর্বত্র। বড় ফণি, ছোট ফণি, দিলীপ চট্টোপাধ্যায়দের যাত্রা দেখার জন্য প্যান্ডেলে ভিড় উপচে পড়ত। আর ছিল কচি কাওয়ালের কাওয়ালি । অন্যদিকে ইংরেজরা চলে গেলেও মধ্যবিত্ত কিংবা নব্য ব্যবসায়ী ও বড়লোকদের মধ্যে রয়ে গেল তাদের কালচার। এই সব রেস্তদার বাবুরা নামকরা সব হোটেলে গিয়ে ঘটা করে বড়দিন কিংবা নিউ ইয়ার্স ইভ-এর উৎসব পালন করত। সুরাপান করার সঙ্গে সঙ্গে মিস মোনা কিংবা মিস সোফিয়াদের ক্যাবারে ডান্স দেখা ছিল তাদের বিনোদনের অন্যতম আকর্ষণ। বড়দিন থেকে শুরু করে নিউ ইয়ার্স ইভ-এ দেশি-বিদেশি নাচিয়েরা নামকরা হোটেলে তাদের নৃত্যকলা প্রদর্শন করতে আসত। সেই টিকিট পাওয়ার জন্য দলে দলে মানুষ হন্যে হয়ে ফিরত। এবার এই কাহিনির কুশীলবদের সঙ্গে একটু পরিচয় করে নিই। এই পরিবারের পুত্রবধূ অনি, ভালো নাম অনিন্দিতা সেনগুপ্ত। গায়ের রং শ্যামলা। মুখখানা ঠিক ডল পুতুলের মতো। বিএ পাশের পর বিএড করেছে। বাবা নির্মল চৌধুরীর কালনায় দু-দুটো কাঁসা পেতলের দোকান। ছোটভাই হরিপদ দাদাকে