আল্লাহই সকল জীবজন্তু আর প্রাণীকুলের স্রষ্টা। ক্রমে ক্রমে তারা পরস্পর নির্ভরশীল হতে শেখে। কোনো এককালে মানুষের মতো ঘোড়াও কথা বলতে পারতো। সেকালে রুকম্ নামে এক ঘোড়া ছিলো। তার আত্মম্ভরিতার সীমা ছিলো না। তার আচরণ ছিলো বেপরোয়া আর স্বাধীনচেতা। মনিবের হাত থেকে মুক্তি পাওয়ার সবসময় চেষ্টা করতো। মানুষের মতো জীবজন্তুরাও স্বাধীনভাবে জন্মগ্রহণ করে। তবে মানুষ কেন তাদের ওপর মনিবগিরি করবে! একদিন সকল ঘোড়াদের এক সভায় তার মনের কথা প্রকাশ করলো। তাদেরকে এই ক্রীতদাসের বন্ধন থেকে মুক্ত হওয়ার আহ্বান জানালো। সে নিজেও মনিবের হাত থেকে মুক্তির চেষ্টা করবে বলে জানালো। কিন্তু কারো কাছ থেকে তার অনুকূলে সাড়া পেলো না। সে তাদের বারবার বুঝাতে চেষ্টা করলো যে, মনিব ছাড়া তারা আরো বেশি ভালো থাকবে। কিন্তু তার সকল প্রচেষ্টাই ব্যর্থ হলো। তাদের কাছ থেকে জবাব পেলো, 'তুমি একটা নির্বোধ। তুমি কিভাবে ভালোবাসা অর্জন করতে হয় কিছুই জানো না।' কারো কাছ থেকে সমর্থন না পেয়ে সে মনে মনে তাদের গালমন্দ দিতে দিতে তার মনিব সারওয়ারের ওখানে ফিরে গেলো। সারওয়ার একজন ধনী ও বিচক্ষণ মানুষ। রুকশ্ তার মনিব সারওয়ারকে বেশ স্পর্ধার সুরে বললো, 'আমি ক্রীতদাসের জীবনে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছি। আমি আপনার দাসত্বের বন্ধনে থাকবো কেন? আপনার চেয়ে আমার শক্তি বেশি। দৈহিক গড়নেও আমি আপনার চেয়ে অনেক বড়। যেকোনো মানুষ আমার মতো ঘোড়ার চেয়ে অসহায়। তাহলে বলুন, আমি কেন আপনার আদেশ পালন করবো?' সারওয়ার তার ঘোড়াটাকে অত্যন্ত ভালোবাসতো।