সকালবেলা কার যেন কাতর গোঙানি ভেসে আসে দুলালের কানে। ঘুমঘুম চোখে বিছানায় উঠে বসে সে। চোখ রগড়াতে রগড়াতে দেখে মা তার বিছানায় বসে কোঁকাচ্ছে। -মারে ব্যথায় বাঁচি নারে, আমার চোখের কী হইবরে।br মায়ের এই এক নতুন অসুখ। চৌধুরীদের ধান মাড়াতে গিয়ে মায়ের বাঁ চোখে পড়েছে একটি পাকা ধান। সঙ্গে সঙ্গে চোখ থেকে ধান বের করে আনলেও ব্যথা সারছে না। বরং দিন দিন যেন বেড়েই চলেছে ব্যথা। সেই সাথে ফুলেও উঠেছে লাল হয়ে। কখনো কখনো খুলতেই পারে না চোখটা, সকালবেলা কষ্ট হয় ভীষণ। ক'দিন আগে গ্রামের ফজল বদ্যির কাছে নিয়ে গিয়েছিল মাকে। চোখ পরীক্ষা করে বদ্যি বলেছেন, চোখে সম্ভবত ধানের কাঁটা রয়ে গেছে। চাঁদপুর শহরে নিয়ে চোখের ডাক্তার দেখানো দরকার। ভালোভাবে চিকিৎসা না করলে বিপদ বাড়বে। চোখ অন্ধও হয়ে যেতে পারে।br ফজল বদ্যির কথা শুনে দুলাল বুঝেছে ব্যাপারটা হেলা করার মতো নয়। মায়ের চোখ অন্ধ হয়ে যাবে এ কথা ভাবতেই পারে না সে। মাকে শহরে নিয়ে ডাক্তার দেখাতে হবে। এ জন্য টাকা দরকার। কিন্তু টাকা কোথায়? গ্রামে আমন ধান কাটার মওসুম শেষ হয়ে এসেছে। কাজকর্মও নেই। সংসার খরচই চলে না। তার ওপর মায়ের চোখের চিকিৎসা। কী করবে ভেবে পায় না দুলাল।
জন্ম : ১৮ এপ্রিল ১৯৫৯, জন্মস্থান : সিলোনীয়া, ফটিকছড়ি, চট্টগ্রাম। শিক্ষা : ব্যবস্থাপনা বিষয়ে স্নাতকোত্তর (১৯৮৩), কর্মজীবন : বাংলাদেশ শিশু একাডেমীর প্রকাশনা বিভাগে কর্মরত।