গণতন্ত্রের প্রাতিষ্ঠানিক রূপ নিয়ে আজও বিতর্কের শেষ নেই, কিন্তু এ বিষয়ে অধিকাংশ পন্ডিতই একমত যে গণতন্ত্রের আদর্শ গ্রীক দার্শনিকদের মনেই প্রথম রূপপরিগ্রহ করে। আদি যুগের অন্যান্য অনেক মানবসভ্যতার তুলনায় গ্রীক সভ্যতা অপেক্ষাকৃত অর্বাচীন। নীলনদের তীরে মিশরীয় সভ্যতা, টাইগ্রীস এবং ইউফ্রেটিস নদীর মাঝখানে সুমারীয় ও আক্কাদীয় সভ্যতা এবং তারপর বাবিলনীয় এবং অসুর সভ্যতা, অতবা উত্তর-পশ্চিম ভারতের মোহেঞ্জোদারো এবং হরপ্পার সভ্যতা, এর প্রত্যেকটিই গ্রীক সভ্যতার চাইতে অনেক প্রাচীন। এমনকি চৈনিক, হিব্রু, পারসিক এবং বৈদিক সভ্যতার হিসেবেও গ্রীক সভ্যতাকে কিঞ্চিৎ বয়ঃকনিষ্ঠ বলা চলে। তবু (কিংবা হয়ত সেকারণেই) গ্রীসেই প্রথম সভ্যতার যথার্থ বয়ঃপ্রাপ্তি ঘটেছিল। গর্ডন চাইল্ড সাহেব বলেছেন যে উপকরণগত সমৃদ্ধির দিক থেকে পাঁচ হাজার বছর আগেকার আবিদস, উর কিংবা মোহেঞ্জাদারোর সংস্কৃতি তাদের থেকে প্রায় আড়ই হাজার বছর পরেকার আথেনীয় সংস্কৃতির চাইতে মোটেই খাটো ছির না। কিন্তু মনের বহুমুখী পরিনতির দিক থেকে পূর্ববর্তী অথবা সমকালীন যে কোনো সভ্যতার চাইতে গ্রীস অনেক বেশী উৎকর্ষ অর্জন করেছিল। গ্রীক দার্শনিক এবং রাষ্ট্রনেতাদের দ্বারা পরিকল্পিত গণতন্ত্রের আদর্শ এই মানসিক পরিণতির অন্যতম প্রমাণ।
১৯৬৪ সালের ১৪ এপ্রিল দেবিদ্বার উপজেলার বারেরা গ্রামের বনেদী কাজি পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি স্কুল, কলেজ এবং বিশ^বিদ্যালয়ে কৃতিমান ছাত্র ছিলেন এবং প্রথম শ্রেণীর সাথে অনার্সসহ এম.এ. ডিগ্রি এবং পরবর্তীতে বিশ^ভারতী বিশ^বিদ্যালয় থেকে রবীন্দ্রনাথের জীবনদর্শনের ওপর উচ্চতর গবেষণা সম্পন্ন করেন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসুর) সাবেক সাহিত্য সম্পাদক, সিনেট সদস্য, নন্দন পত্রিকার সম্পাদক এবং পরবর্তীতে দেশ বিদেশের একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা, আমন্ত্রিত বক্তা, গবেষণা ও বিশেষজ্ঞতার ভূমিকায় সংযুক্ত ছিলেন। গল্প, উপন্যাস, অনুবাদ এবং প্রবন্ধ-গবেষণা, সাহিত্যতত্ত্ব, দর্শন, সংগীত, সংস্কৃতি, রাজনীতি, সমকালীন ঘটনার ঘাত-প্রতিঘাত প্রতিক্ষেত্রেই জুলফিকার নিউটনের সংবিৎ সক্রিয় ও সুপ্রকাশ। তাঁর গল্প-উপন্যাস যেমন প্রীতিপদ, অনুবাদ সাহিত্য যেমন সুখপ্রদ, প্রবন্ধ ও গবেষণা তেমনই কোন না কোন দিক থেকে চমকপ্রদ। সব সময়ই তাঁর আলোচনায় থাকে চিন্তাকে উসকে দেবার মত অজস্র উপাদান, নতুনতর দৃষ্টি কোন বিচারে উদ্বুদ্ধ করার মত ক্ষুরধার বিশ্লেষণ। জাতীয় ও আন্তজার্তিক ভিত্তিতে সাহিত্যে মৌলিক গবেষণা অনুবাদ ও জীবনবাদী সাহিত্য ও শিল্পকর্মের জন্য আনন্দমেলা, বাংলাদেশ সাহিত্য পরিষদ, রংধনু স্বর্ণপদক, রূপসী-বাংলা স্বর্ণপদক, বিদ্যাসাগর পুরস্কার, গান্ধী গবেষণা পুরস্কার, বঙ্গবন্ধু একাডেমী, রবীন্দ্র পুরস্কার, নজরুল একাডেমী, সুভাষচন্দ্র পদক এবং কবীর চৌধুরী সাহিত্য পুরস্কার অর্জন করেছেন।