জেলখানার ঘড়িয়াল সাড়ে আটটার ঘণ্টা পেটাল। এই আধ ঘণ্টা অন্তর জেলখানার ঘণ্টার শব্দটা বড়াে ভালাে। শুনলে বড়াে সজীব লাগে নিজেকে। খেলনার গায়ে যেমন দম দিয়ে ছেড়ে দিলে খেলনা সচল হয়ে ওঠে, তেমন গতিময়তা পেল অলীক। দেখল তার ঘর আলােকিত। স্কুটারটা রাস্তার ধারেই রাখে সে। তুলতে হয় না। ওভাবেই সারারাত থাকে। তবে লক করে রাখতে হয় শুধু। ডেরাটা জেলখানার গায়ে হওয়ায় অদ্ভুত এক মনােরমতা পায় অলীক। উঁচু প্রাচীর। টাওয়ার। সশস্ত্র রক্ষী। কয়েদিরা কত শান্ত। তাদের নিয়ে তাড়াহুড়াে গুচ্ছের। সরকারের হিমসিম হওয়া দেখে মজা পায়। ডেরাটা সেজন্যই বেছেছে সে। আর এফ সি আই গােডাউনটা এখান থেকেই শুরু। অফিস আর ডেরা মাখামাখি। বাড়তি পাওনা শিলিগুড়ি স্পেশাল জেলের অ্যাম্বিয়েন্স। তাছাড়া বাগরাকোটের এই এলাকাটা তেমন উপদ্রুত নয়। নিশ্চিন্ত নিরিবিলিতে কাটানাে যায়। বস্তির ঠেলাওয়ালা কুলিদের কিছু আনন্দ হল্লা ছুটে আসে, তেমনি জেলখানার নানা চঁচামেচি, এর বাইরে এলাকাটা নিরুপদ্রব, খাসা। জেলখানায় না থেকে, জেলখানায় আছি, এই বিভ্রম তৈরি হয় মাঝে মাঝে। ওই উঁচু প্রাচীরটাকে কে অস্বীকার করবে? ডাইনিং-এ বিশাখাকে নিয়ে ঢুকে অলীক দেখল রান্নাঘরে রিমি উঁকি দিয়েছে। ডাইনিং-এর সােফায় আলােলিকা ডান হাতে রাম নিয়ে টিভিতে ‘শাশুড়ি বড়াে না ননদ বড়াে’ দেখছে। বিশাখা ডাইনিং টেবিলে মালপত্তরগুলাে ছেড়ে বলল,উফ!