হিমালয় ভ্রমণ গাইড”বইয়ের প্রথম ফ্ল্যাপ এর লেখা: পশ্চিমবঙ্গ তথা ভারতীয় পর্বতারােহণের ক্ষেত্রে প্রাণেশ চক্রবর্তী একটি অতি সুপরিচিত নাম। নিরলস সাধনা, আত্মত্যাগ ও কঠিন অধ্যবসায় তার এই প্রতিষ্ঠার মূলে। তিনটি আন্তর্জাতিক পর্বত অভিযানে তিনি ভারতবর্ষ থেকে নির্বাচিত সদস্য হিসাবে প্রতিনিধিত্ব করেছেন— ইন্ডিয়ান মাউন্টেনীয়ারিং ফাউন্ডেশন (আই.এম.এফ.) এবং ইংল্যান্ডের ‘দ্য এভারেস্ট ফাউন্ডেশন’ ও ‘দ্য ব্রিটিশ কাউন্সিল’-এর যৌথ উদ্যোগে আয়ােজিত ১৯৬৯-এর ইন্দো-ব্রিটিশ হিমালয়ান এক্সপিডিশন’ (এই অভিযানে তিনি ডুফাও জোত শৃঙ্গ আরােহণ করেন), ১৯৭৬-এ “আই.এম.এফ’ ও ‘জাপান অ্যালপাইন ক্লাব’-এর ‘জয়েন্ট ইন্দো-জাপানীজ নন্দাদেবী ট্রাভার্স এক্সপিডিশন’ ও ১৯৭২-এ ইংল্যান্ডের কেম্ব্রিজশায়ারের অন্তর্গত ইলের ‘কিংস স্কুলের সংগঠিত ‘কিংস স্কুল’স হিমালয়ান এক্সপিডিশন’। শেষােক্ত অভিযানে প্রাণেশ একমাত্র ভারতীয় আমন্ত্রিত সদস্য ছিলেন ও ছাত্রছাত্রী-শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সঙ্গে চারটি শৃঙ্গ আরােহণ করেন। | প্রায় ত্রিশটি পর্বত অভিযানের তিনি আরােহী-সদস্য ছিলেন। তার মধ্যে উল্লেখযােগ্য কয়েকটি পর্বতশৃঙ্গ হল —নীলগিরি, মানা, কামেট, নন্দাদেবী, কেদারনাথ, কেদারডােম, তিরশূলী, সতােপন্থ, যুগলমান, রিমলা-উই, লাচার উই, রুবলকা, কীর্তিস্তম্ভ প্রভৃতি। আরােহণ করেছেন মানা, নন্দাঘুণ্টি, যুগলমানা, রাধানাথ, গৌরাঙ্গ ইত্যাদিসহ এক ডজনেরও বেশি শৃঙ্গ। | প্রাণেশ চক্রবর্তী ১৯৯১ সালে পশ্চিমবঙ্গ তথা ভারতবর্ষ থেকে সর্বপ্রথম চীনের (তিব্বত) ভিতর দিয়ে ‘গ্রেট কলুয়ার রুটে’ সংগঠিত এভারেস্ট অভিযানের দলনেতা ছিলেন। অভিযানটির উদ্যোক্তা ছিলেন—ভােরুকা মাউন্টেনীয়ারিং ট্রাস্ট ও পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের যুবকল্যাণ দপ্তর। শুধু পর্বতারােহণ-পর্বতাভিযান নয়, নেপালভূটানসহ কাশ্মীর থেকে অরুণাচল পর্যন্ত ভারতীয় হিমালয়ের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে তিনি পায়ে হেঁটে ঘুরেছেনও বিস্তর এবং তিনবার তিনি তিব্বতে গিয়েছেন।