"শ্রেষ্ঠ গল্প" বইটির সম্পর্কে কিছু কথা: ছােটদের মহলে শিবরাম চক্রবর্তীর এমন সার্বিক সাফল্যের মূলমন্ত্রটি কী? তিনি বলেছেন : আমার লেখায় ছােটদের কখনই আমি ছােট বলে ধরিনি, অবােধ শিশু বলে গণ্য করিনি কখনও। আমার সমকক্ষ বলেই ধরেছি তাদের। বয়স্ক বন্ধুর মতন বিবেচনা করেছি। তবু শিশু-কিশােরদের জগতে শিবরামের তুমুল জনপ্রিয়তার মূলে তিনজন আলঙ্কারিকের অবদানও কিন্তু সর্বদাই মনে রাখতে হবে। তাঁরা হলেন রেবতীভূষণ, শৈল চক্রবর্তী এবং প্রফুল্লচন্দ্র লাহিড়ী। এঁদের দক্ষ তুলির বলিষ্ঠ টান একটি গুরুদায়িত্ব পালন করেছে, সকলের সঙ্গে শিবরামের পরিচয় ঘটিয়ে দিয়েছে— নধরকান্তি চেহারা, উজ্জ্বল দুটি চোখ, সেই ব্যাকব্রাশ চুল, যার অগােছালাে একটি গুচ্ছ আনমনে অথবা অবহেলায় কানের পাশে লুটাচ্ছে। দীর্ঘকাল কোনও পত্র-পত্রিকায় শিবরামের কোনও ফটো দেখা যায়নি। ক্যামেরা দেখলে তার আতঙ্ক হত, পিছিয়ে যেতেন। ক্যামেরাধারী কোনও স্বজনও তাকে ফটো তুলতে রাজি করাতে পারেনি। তাই প্রিয় লেখকের ছবি তার ভক্ত পাঠকদের মনে মােটা দাগে দেগে মূর্ত করে তােলার জন্যে শিবরাম চক্রবর্তীর সঙ্গে শক্তিমান ওই তিন চিত্রশিল্পীও চিরস্মরণীয়। বস্তুত তাঁদের অলংকরণই যেন শিবরাম এবং তাঁর চরিত্রদের সম্পূর্ণতা দান করেছে।
তিনি জন্মগ্রহণ করেছেন ১৩ ডিসেম্বর, ১৯০৩ ( বাংলা,১৩১০-এর ২৭ অগ্রহায়ণ)। প্রখ্যাত বাঙালি রম্যলেখক। কবিতা-রচনা দিয়ে সাহিত্য-জীবনের শুরু।প্রথম কবিতা বেরোয় ভারতী পত্রিকায়। প্রথম প্রকাশিত বই দুটিও -- 'মানুস' ও 'চুম্বন' -- কবিতার। দুটিই প্রকাশিত হয় ১৯২৯ সালে। তারপর অজস্র লেখা লিখেছেন। প্রবন্ধ, নাটক এবং তুলনাহীন অজস্র হাসির গল্প। লিখেছেন ঈশ্বর পৃথিবী ভালবাসা ও ভালবাসা পৃথিবী ঈশ্বর নামের অনন্য স্মৃতিকথামূূলক দূটি বই। প্রবন্ধের বই : মস্কো বনাম পন্ডিচেরি ও ফানুস ফাটাই। নাটকের গ্রন্থ : যখন তারা কথা বলবে। বিচিত্র জীবন ছিল তার। রাজনীতি করেছেন, জেল খেটেছেন, রাস্তায় কাগজ ফেরি করেছেন, ফুটপাথে রাত্রিবাস করেছেন, সাংবাদিকতা করেছেন, আজীবন মেস-জীবন যাপন করেছেন । করেন নি যা, তা হল বিয়ে।