“সাংবাদিক মিজান মালিকের ‘পদ্মা সেতু: পর্দার অন্তরালে’ গ্রন্থটি অতন্ত্য গুরুত্বপূর্ণ। এ গ্রন্থটি ইতিহাসে দলিল হয়ে থাকবে। মিজান মালিক চেষ্টা করেছেন বইটিতে সত্য উদঘাটন করতে। অত্যন্ত দক্ষতা, সততা, নিষ্ঠা ও পেশাগত দায়িত্ব বজায় রেখে তিনি এ গ্রন্থটি লিখেছেন।” “পদ্মা সেতু দেশবাসীর প্রত্যাশা। আর সেই প্রত্যাশা পূরণের জন্যই সাংবাদিকদের অনেক দায়িত্ব রয়েছে। সাংবাদিক মিজান মালিক সেই দায়িত্ব বোধ থেকেই এই গ্রন্থটি প্রকাশ করে জাতির প্রত্যাশা পূরণে একটি সহায়ক ভূমিকা পালন করে যাচ্ছেন। এই বইটি পড়লে পদ্মা সেতু সর্ম্পকে মানুষের ধারণা আরও পরিস্কার হয়ে যাবে।” বইটি প্রকাশের কারণ সম্পর্কে সাংবাদিক ও লেখক মিজান মালিক বলেন, ‘‘অনেকটা দায়বদ্ধতা থেকে বইটি প্রকাশ করেছি। ” তিনি আরও বলেন, “পদ্মা সেতুতে কারা কীভাবে করেছিলেন দুর্নীতির নীল নকশা? কারা জড়িত দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের সঙ্গে। বিশ্বব্যাংক সেতুর দুর্নীতির ঘটনা নিয়ে যে অভিযোগ এনেছে, তার সত্যতাই বা কতটুকু মিলেছে দুদকের তদন্তে? দুদকের মামলাটি কি কারও মন রক্ষার জন্য? বিশ্বব্যাংক নেই সেতু প্রকল্পে। কিন্তু দুর্নীতির কি হবে? এমন অসংখ্য প্রশ্ন সামনে রেখে আমি বইটি লিখেছি।” শ্রাবণ প্রকাশনীর প্রকাশক রবিন আহসান জানান, সাংবাদিকদের লেখা বই তার প্রকাশনী থেকে সব সময়ই প্রকাশ করছেন। মিজান মালিককের এই গ্রন্থটি প্রকাশ করার বিষয়ে তিনি বলেন, অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এ বইটি দেশ বিদেশে আলোড়ন সৃষ্টি করবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলার ছাত্র মিজান মালিক একজন পেশাদার সাংবাদিক। অনুসন্ধানী সাংবাদিকতায় তিনি একটি ধারা তৈরি করেছেন। শিল্প-সাহিত্য অঙ্গনে তিনি একজন গীতিকবি হিসেবে বেশ পরিচিত। তাঁর অসংখ্য গান দেশের বড় শিল্পীদের মুখে মুখে। গানের জন্য তিনি ২০০৬ সালে বাচসাস পুরস্কারও পান। সাংবাদিকতায় রাষ্ট্রীয় পুরস্কারসহ রয়েছে তাঁর অসংখ্য অর্জন। তাঁর মূলভাবনায় বেসরকারি টেলিভিশনে একাধিক নাটকও সম্প্রচারিত হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সাংবাদিকতায় মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর কর্তৃক দেশের সবচেয়ে বড় পুরস্কারটি পান ২০১৫ সালে। মহামান্য রাষ্ট্রপতি এই পুরস্কার প্রদান করেন। একই বছর তিনি শিক্ষাবিষয়ক অনুসন্ধানী সাংবাদিকতায় সেরা প্রতিবদনের জন্য ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) পুরস্কার পান। শ্রেষ্ঠ অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার জন্য ২০১২ সালে দুদকের প্রথম মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড পান তিনি। এ ছাড়াও অনুসন্ধানী সাংবাদিকতায় সেরা অর্জনের জন্য তিনি ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) ও ক্র্যাবসহ অনেক সংস্থা থেকে পুরস্কার অর্জন করেন। ছাত্রজীবন থেকে ছোটগল্প, কবিতা ও গান লেখালিখি করলেও অনুসন্ধানী সাংবাদিক হিসেবে তিনি জীবন থেকে নেয়া অভিজ্ঞতা ধারণ করে সৃজনশীল লেখালিখিতে মনোনিবেশ করেন। পৃথিবীর ওপর ভর করা দুঃখের নাম করোনা। এই করোনা কালে সারাবিশ্ব যখন কষ্টের ঘানি টানছে, যখন মানুষ ঘরবন্দি হয়ে পড়ে, তখনও তিনি ছুটে বেড়িয়েছেন নতুন সৃষ্টির সন্ধানে। লিখেছেন অসংখ্য গান। কবিতা। ছোট গল্প। 'মন খারাপের পোস্টার' তাঁর দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থ। তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ 'গল্প ছাড়া মলাট' ২০২০ সালের একুশে গ্রন্থ মেলায় বেশ আলোড়ন সৃষ্টি করে। এ ছাড়া একটি তথ্যানুসন্ধানমূলক গ্রন্থও রয়েছে তাঁর। টেলিভিশন ও পত্রিকা দুই মাধ্যমে সাংবাদিকতায় রয়েছে তাঁর বেশ অভিজ্ঞতা। যমুনা টেলিভিশনের 'থ্রি-সিক্সটি ডিগ্রি' অনুষ্ঠান জনপ্রিয়তা পেয়েছে তাঁর হাত ধরেই। তিনি দৈনিক যুগান্তরে ইনভেস্টিগেশন এডিটর ও বিশেষ প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত আছেন। মিজান মালিক ১৯৭৩ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি চাঁদপুরে জন্মগ্রহণ করেন। সাংবাদিকতা শুরু দৈনিক ভোরের কাগজ-এর মাধ্যমে। এরপর বাংলাবাজার পত্রিকা, মুক্তকণ্ঠ, মানবজমিনসহ কয়েকটি পত্রিকায় কাজ করেন। সাংবাদিকতা ও লেখালেখির পাশাপাশি তিনি একজন সফল সংগঠকও। তিনি ২০২১ সালের জন্য বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স এসোসিয়েশনের (ক্র্যাব) সভাপতি নির্বাচিত হন। করোনাকালে লেখা বেশ কিছু গানের মধ্যে 'খেয়া', 'শুভ্র পৃথিবী', 'বাংলাদেশ', 'প্রার্থনা' ও 'মতবাদ' রচনা করে তিনি বেশ জনপ্রিয়তা অর্জন করেন।